রাগের বশে বা কথার কথায় নিজেকে বা অন্যকে জাহান্নামের চৌরাস্তায় পাঠিয়ে দেয়ার অভ্যাস বেশ পুরনো। কিন্তু জানেন কি জাহান্নামের দরজা নামে খ্যাত এক পর্যটন এলাকা রয়েছে! আর তাই ভ্রমণপিপাসুদের কাছে জিজ্ঞাসা হতেই পারে 'দুনিয়ার জাহান্নাম' আসলে কেমন?
তুর্কমেনিস্তানের রাজধানী আশগাবাদ থেকে প্রায় ২৬০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত মরুভূমিতে বিশাল একটি গর্ত রয়েছে। এটি ২৩০ ফুট ব্যাস ও ৬৫ ফুট গভীর। গত চল্লিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই গর্তের আগুন নেভে না। ১৯৭১ সালের কথা। কয়েকজন সোভিয়েত ভূতত্ত্ববিদ খনিজ তেলের সন্ধানে কারাকুমের মরু অঞ্চলে অভিযান চালান।
মূলত তুর্কমেনিস্তানে অবস্থিত একটি খনিকে বলা হয় জাহান্নামের দরজা। প্রাকৃতিক গ্যাসের আধার এই খনিতে গ্যাস উত্তোলনের সময় একটি ড্রেজার খনির ভেতর পড়ে যায়। তখন মিথেন গ্যাস ছড়িয়ে পরিবেশ ক্ষতির আশংকা দেখা দেয়। তখন ক্ষতি এড়াতে খনিতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। ১৯৭১ সালের ঘটনা এটি। এরপর থেকেই জ্বলছে খনিটি।
কারণ এই এলাকায় প্রচুর তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস মজুদ রয়েছে। তবে কিছুদিনের মধ্যেই সেই অভিযাত্রীরা টের পান, তারা ভূগর্ভস্থ গ্যাসের এক ভাণ্ডারের ওপর বসে আছেন। এ সময় মরুভূমির কয়েক জায়গায় গর্ত খুঁড়ে ভূগর্ভে থাকা গ্যাসগুলো উন্মুক্ত করেন তারা।
ঠিক তখন থেকেই সেখানে আগুন জ্বলতে শুরু করে। দেশটির কারাকুম মরুভূমি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত দেরওয়াজ গ্রাম থেকে এটাকে দেখা যায়। এর আগুনের ভয়াবহতা দেখেই এটাকে জাহান্নামের দরজা’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়।
তবে জায়গাটকে অনেকে শয়তানের সুইমিং পুল বলেও জানে।২০১০ সালের এপ্রিলে দেশটির রাষ্ট্রপতি গুরবাঙ্গুলি বারদিমোহামেদো জায়গাটি পরিদর্শন করে তা বন্ধ করার আদেশ দেন। তবে সেই আদেশ কার্যকর হয়নি। এখনো সেখানে বছরের পর বছর দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছেই।
পরে এই বিশাল গর্ত থেকে ক্রমাগত নির্গত হতে শুরু করে মিথেন গ্যাস আর তার থেকে আগুন। এই আগুনের তাপ এত বেশি যে তার পাশে ২ মিনিটের বেশি দাঁড়ানো কিছুতেই সম্ভব নয়। আর এরপর থেকেই স্থানটির নাম জাহান্নামের দরজা।