Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

লাশ দাফনের ১১ দিন পর গৃহবধূ জীবিত উদ্ধার

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০১:০৭ PM
আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০১:১৩ PM

bdmorning Image Preview


গৃহবধূ সাথী খাতুন। তিনি গত ১৪ জুলাই স্বামীর বন্ধু একই গ্রামের মান্নুর সঙ্গে তিনি পালিয়ে যান। এরপর তারা যশোর সদর উপজেলার জলকর গ্রামে অবস্থান করছিলেন। কিন্তু কয়েকদিন আগে মান্নু মালয়েশিয়া চলে যান। কিন্তু সাথী আর তার নিজের বাড়িতে ফিরে যাননি। এদিকে সাথী বাড়ি ফিরে না আসায় তার বাবা থানায় সাধারণ ডায়েরি  করেন। 

এরপর গত ২৯ আগস্ট রাতে যশোর সরকারি সিটি কলেজের পাশের একটি পুকুরের পাড় থেকে পলিথিনে মোড়ানো এক তরুণীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিন খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানায় যান আমজাদ হোসেন। তিনি লাশের তুলে রাখা ছবি দেখে পুলিশকে জানান, সেটি তার মেয়ে সাথীরই লাশ।

এরপর তদন্তে নেমে গতকাল রবিবার (৯ সেপ্টেম্বর) ১১ দিন পর উদ্ধার করে জীবিত গৃহবধূ সাথী খাতুনকে। এতে ভুল ভাঙে পুলিশ ও সাথীর পরিবারের।

সাথী খাতুন চৌগাছার নয়ড়া গ্রামের আমজেদ আলীর মেয়ে এবং একই উপজেলার চাঁদপাড়া গ্রামের গোলাম মোস্তফার স্ত্রী। তাদের এহসান নামে ছয় বছরের একটি পুত্রসন্তান রয়েছে।

এ বিষয়ে যশোর কোতোয়ালি থানার দ্বিতীয় কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আমিরুজ্জামান জানান, আট বছর আগে চৌগাছা উপজেলার নায়ড়া গ্রামের সাথী খাতুনের সঙ্গে চাঁদপাড়া গ্রামের গোলাম মোস্তফার বিয়ে হয়। তাঁদের ছয় বছরের একটি পুত্রসন্তান রয়েছে।

 এর মধ্যে স্বামীর বন্ধু মালয়েশিয়াপ্রবাসী মান্নুর সঙ্গে সাথীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ১৪ জুলাই বিকেলে বাইরে কাজে যাওয়ার কথা বলে সাথী বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান।

 এরপর সাথী ও মান্নু স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে যশোর সদর উপজেলার জলকর গ্রামের নিঃসন্তান দম্পতি আজিজুর লস্করের বাড়িতে আশ্রয় নেন। ১৫ দিন পরে মান্নু আবার মালয়েশিয়া চলে যান।

 কিন্তু সাথী আর নিজের বাড়িতে ফিরে যাননি কিংবা কারও সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখেননি। পরে সাথীর মুঠোফোন ট্র্যাকিং করে জানা যায়, তিনি যশোরে অবস্থান করছেন।

উদ্ধার হওয়ার পর সাথী খাতুন সাংবাদিকদের জানান, স্বামী নির্যাতন করত। তাই নির্যাতন থেকে রেহাই পেতে ১৪ জুলাই স্বামীর বাড়ি ছেড়ে যশোরে চলে আসি।

 শহরের নিউ মার্কেটে বাসে নেমে এক ঘণ্টা বসেছিলাম। একপর্যায়ে মালয়েশিয়া প্রবাসী চাঁদপাড়া গ্রামের মান্নুকে ফোন দিই। তিনি ধৈর্য্য ধরতে বলেন যেন আত্মহত্যা না করি। একপর্যায়ে সদর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের জলকর গ্রামে যাই। যাওয়ার পথে ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি ভেঙে পানিতে ফেলে দিই। এরপর ওই গ্রামের আজিজ লস্করের বাড়িতে আশ্রয় নিই।

তিনি আরও জানান, গত শুক্রবার আজিজ লস্কর পত্রিকার পাতায় আমার মৃত্যুর সংবাদ দেখেন। তারপর থেকে তিনি আমাকে আর আশ্রয় দিতে রাজি হননি। এরপর গতকাল বাড়িতে আব্বার মোবাইল নম্বরে কল করি। পুলিশকেও বিষয়টা জানাই। পুলিশ আজ আমাকে উদ্ধার করে।

এদিকে সাথী জীবিত ফিরে আসায় গলাকাটা ও পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় উদ্ধার ওই তরুণীর লাশটি কার-সেটি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এ বিষয়ে এসআই আমিরুজ্জামান বলেন, উদ্ধার হওয়া লাশটি সাথীর বলে ধরে নিয়েছিলাম। কিন্তু তদন্ত করতে গিয়ে আসল রহস্য উন্মোচন হয়েছে। এবার ওই লাশটি আসলে কার, সেই রহস্য উদঘাটনে কাজ করব।

Bootstrap Image Preview