Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

চট্টগ্রাম মেইলকে 'পর্যটন ট্রেন' ঘোষণার দাবিতে ভ্রমণপিপাসুদের যাত্রা শুরু

বিডিমর্নিং ডেস্ক-
প্রকাশিত: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৮:২৯ AM
আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৯:৩৪ AM

bdmorning Image Preview


‘চট্টগ্রাম মেইলকে 'সাধারণ পর্যটন ট্রেনে' ঘোষণার দাবিতে 'ব্রত নিয়ে ঘুরি স্বদেশ’ প্রতিপাদ্যে যাত্রা শুরু করলো ভ্রমণপিপাসু ফেসবুক গ্রুপ lets go ( চলি)।

সংগঠনটি গত ৬ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে দশটার লোকাল ট্রেন ‘চট্টগ্রাম মেইলে’ চেপে সীতাকুন্ডের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়ার মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করে তেইশ সদস্যের দলটি।

দলটির দাবি ছিলো ‘চট্টগ্রাম মেইলকে ঘোষণা করা হোক সাধারণ পর্যটন ট্রেনে, ১২০ টাকা টিকেট সবাই কাটুন সযত্নে, ঢাকা ফিরতি ট্রেন থামুক সীতাকুন্ডে’। গ্রুপটির এই ইভেন্ট স্পন্সর করেছে রংপুর চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাজট্রিজ। মুঠোফোনে সার্বক্ষণিক চিকিৎসায় ছিলেন আহছানিয়া মিশন ক্যান্সার এন্ড জেনারেল হাসপাতালের কনসালটেন্ট ডা. এফ এইচ চৌধুরী।

সীতাকুন্ড ভ্রমণ শেষে দলটি ঢাকা ফেরেন ৭ সেপ্টেম্বর সকালে। এই প্রতিবেদকের কথা হয় গ্রুপটির উদ্যোক্তা মো. আবু ওবায়দা টিপুর সাথে। ব্রত নিয়ে দেশ দেখার মানসে গ্রুপটি যাত্রা শুরু করেছে বলে জানান সংগঠক। একাধারে সামাজিক ও বাণিজ্যিক দু’ধরণের ট্যুর প্যাকেজের আয়োজন করবে প্রতিষ্ঠানটি।

তিনি বলেন, বাণিজ্যিক ট্যুর প্যাকেজ আয়োজন করবে প্রতিষ্ঠানটির সদস্যরাই। সেখান থেকে অর্জিত লাভের টাকাতেই সদস্যরা পাবেন প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার সার্টি ফিকেট।

তিনি আরো বলেন, lets go ( চলি)’র নিজস্ব অনলাইন পাতা থাকবে। যেখানে ইভেন্ট থেকে ফিরে বিভিন্ন প্রতিবেদন লিখবেন ইভেন্ট পর্যটকরা।

সর্বকনিষ্ঠা সদস্য ছিলেন সুমাইয়া আক্তার জয়া। তিনি বলেন, চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চূড়ায় ২৯০০ ফুট ওপরে উঠতে পারেননি তিনি, দেখতে পারেননি চন্দ্রনাথ মন্দির। তবে আবারো প্রস্তুতি নিয়ে চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চূড়ায় উঠবেন তিনি। তবে খুব কষ্ট করেই বিরুপাক্ষ মন্দির দেখেছেন জয়া।

এদিকে তিপান্ন বছর বয়স্ক (৫৩) নাসিমা খান বলেন, ডায়াবেটিক্স আছে তাঁর। হয়েছিলো স্টকও। তবু তিনি উঠেছেন চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চূড়ায়। দেখেছেন, চন্দ্রনাথ মন্দির। ওঠা ও নামা মিলিয়ে তিনি পাড়ি দিয়েছেন পাঁচ হাজার আটশ ফুট পথ।

সদস্য মারুফ সিদ্দিকি জানান, সাধারণ ট্রেনে সাধারণ মানুষের সাথে মিশে বন্ধন সৃষ্টি করতে পেরেছি আমরা। তিনটা গ্রুপ ছিলো আমাদের ট্রেন বগিটিতে। প্রতিটি গ্রুপকেই আমরা এক করে সমান অনন্দ নিয়ে আমাদের ট্রেন যাত্রার আট ঘণ্টা কাটিয়েছি, এটা নিঃসন্দেহে বড় পাওয়া।

নিজেদের দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরেন আরটিভির সাংবাদিক মিথুন আহমেদ। তিনি বলেন, অমরা যখন সীতাকুন্ডে নামি, তখন ছিলো সকাল সাড়ে ৬টা। চট্টগ্রাম মেইল কমলাপুর ছেড়েছে রাত সাড়ে দশটায়। মাত্র আট ঘণ্টায় সীতাকুন্ড পৌঁছেছে ট্রেনটি। পুরো ট্রেনের যাত্রীর একটা বড় অংশই ছিলো সীতাকুন্ড ভ্রমণ পিপাসুতে ভরা। যা চোখে পড়ে সকাল বেলা সীতাকুন্ড নেমে। এসব পর্যটকদের পুরোটাই তরুণ-তরুণী। এটা সম্ভব হয়েছে নির্ধারিত সময়েই ট্রেনটি সীতাকুন্ড পৌঁছায় বলে। পাশপাশি ভাড়া মাত্র ১২০ টাকা। সরকার যদি ট্রেনটিকে পর্যটন ট্রেন ঘোষণা করে, তবে নিঃসন্দেহে এটি সরকারকে যথেষ্ঠ রাজস্ব এনে দেবে। পাশপাশি পর্যটন শিল্পে উন্মোচন করবে নতুন দ্বার।

শাহানা রহমান বলেন, পর্যটনের বিকাশে আমাদের দাবি নিঃসন্দেহে ভূমিকা রাখবে বলে আমরা আশা করি। আর তাই রংপুর চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাজট্রিজ, চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীক সংগঠনকে সাথে নিয়ে বিষয়টি এফবিসিআই এ তুলে আনুক এমনটাই চাওয়া তাঁর।

এশিয়ান টেলিভিশনের নিউজ রুম এডিটর রাশেদ আঁকন জানান, চট্টগ্রাম মেইলে বগি বাড়ানোর কথা। রেলের সাথে সংশ্লিষ্টদের অসাধু তৎপরতা কমানোর দাবিও তুলেন তিনি। মেইল ট্রেনের টিকেট কাউন্টারটি যথাসময়ে খোলা হয় না বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তাঁর ভাষায়, ‘দেখে মনে হয়েছে, রেল কর্তৃপক্ষ চান না, সাধারণ মানুষ টিকেট পাক। বরং মনে হয় এই ধরণের ট্রেনে রেল যাত্রা  হোক বিনা টিকেটে, এমনটাই চাওয়া তাদের।  

ব্যবসায়ী সাইদুর রহমান বলেন, ডক থেকে টাকা নিয়ে রেল সংশ্লিষ্টদের সিট বুকিং রাখতে দেখা গেছে। এহন কাজ করতে দেখা গেছে টোকাইদেরও। যেটা অপতৎপরতা।

সদস্য কুইন, নাট্যকার রফিক হারিরি, শেখ রহমান সাজ্জাদ, মাহমুদুল হাসান, মিরাজ, রোকন, মিজানুর রহমান, রাজু বলেন বগি বাড়িয়ে, টিকেটের মূল্য ঠিক রেখে আর কর্তৃপক্ষের অসাধু তৎপরতা বন্ধ করে ট্রেনটিকে ঘোষণা দেয়া হোক পর্যটন ট্রেনে।

প্রায় প্রত্যেকেই বলেন সত্যধারা ঝর্ণার রুপের কথা। সংগঠক আবু ওবায়দা টিপু বলেন, চন্দ্রনাথ পাহাড় দেখে দল যখন ক্লান্ত ঠিক তখন সত্যধারা ঝর্ণার শীতল পরশ যেন ভুলিয়ে দিয়েছিলো সকলের ক্লান্তি।

গাইড হিসেবে ছিলেন সংগঠনটির সদস্য দেশের ৬৯ টি স্পট দেখা তরুণ শাহীন হাসান। তাঁর দাবি ঝর্ণায় গোসল সেরে মেয়েদের কাপড় পরিবর্তন করার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচানা করুক ইকো পার্ক কর্তৃপক্ষ। রাখুক অস্থায়ী কাপড় ঘেরা ড্রেস চেঞ্জ রুম।

Bootstrap Image Preview