বাড়ির আঙিনায় চলছিল ওয়াজ-মাহফিল। তাই বসেছিল খেলনা, খাবার, কসমেটিক্সসহ হরেক রকমের দোকান। বাড়ির উঠোনে বসা এসব দোকান দেখতে যায় চার বছর বয়সী ছোট্ট রিয়া (ছদ্মনাম)। শিশু রিয়াকে একা পেয়ে কুনজর পড়ে একই এলাকার শাকিল (২০) নামে এক বখাটের। খাবার কিনে দেওয়ার কথা বলে শিশু রিয়াকে অনুষ্ঠানস্থল থেকে কিছুটা দূরে নিয়ে যায় শাকিল। পরে খাবার না পেয়ে শিশু মেয়েটি ফিরে আসতে চাইলে জোরপূর্বক কোলে তুলে পাশের কলাবাগানে নিয়ে শিশুটিকে ধর্ষণ করে বখাটে শাকিল।
এ সময় ধর্ষণের শিকার শিশুটি চিৎকার-চেচামেচি করলেও ওয়াজ-মাহফিলে ব্যবহৃত মাইকের বিকট শব্দের কারণে তার চিৎকার শুনতে পায়নি কেউ। এমনি এক ঘটনা ঘটেছে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের কালিকাপ্রসাদ কুমিরমারা গ্রামে রাত ৯টার সময়। ধর্ষণের শিকার শিশুটি বর্তমানে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত কালিকাপ্রসাদ কুমিরমারা গ্রামের আল আমিন মিয়ার বখাটে ছেলে শাকিল পলাতক রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, ধর্ষণের শিকার শিশু মেয়েটি ঘটনার পর রক্তাক্ত শরীর নিয়ে বখাটে শাকিলের নানি খোদেজা বেগমের কাছে বিচার দিতে গেলে তিনি বিচার করবেন বলে আশ্বাস দেন। খবর পেয়ে ভুক্তভোগীর পরিবার তাকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের আলামত পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পরে ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহীন হাসপাতালে পৌঁছে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভিকটিমকে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
পরবর্তীতে ঘটনা জানাজানি হলে এলাকার কয়েকজন মিলে ওই বখাটে শাকিলকে আটক করে। পরে বখাটের নানা গোলাপ মিয়া এসে তাৎক্ষণিক তার নাতি শাকিলকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায় এবং এ বিষয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য ভুক্তভোগীর পরিবারকে হুমকি দিয়ে যায়। এ ছাড়াও ঘটনার পরদিন শনিবার সকাল ৮টার দিকে অভিযুক্তের নানা গোলাপ মিয়া রামদা হাতে নিয়ে ভুক্তভোগীর বসতঘর কুপিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীর চাচা।
এ ঘটনায় ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীর পরিবারসহ স্থানীয় এলাকাবাসী। এ ছাড়াও এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলেও জানায় ভুক্তভোগীর মা।
ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহীন এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক হাসপাতালে যাই এবং বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও উন্নত চিকিৎসার জন্য রোগীকে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করি। এখন পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।