Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

দায়িত্বে থাকতে চান ৫ বছর ঢাকার নতুন এলাকার কাউন্সিলররা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ১১:০৯ AM
আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ১১:০৯ AM

bdmorning Image Preview
- ছবি : সংগৃহীত


ঢাকার দুই সিটির নতুন সংযুক্ত এলাকার কাউন্সিলররা আইনি পদক্ষেপ নেয়ার কথা ভাবছেন। তাদের দাবি, মেয়রের ক্ষেত্রে উপনির্বাচন হলেও কাউন্সিলরদের ক্ষেত্রে সাধারণ নির্বাচন হয়েছে। সে হিসেবে তারা পাঁচ বছর মেয়াদই পাবেন। কিন্তু তারা এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত আবেদন করেও কোনো সাড়া না পাওয়ায় এখন আদালতে যাওয়ার চিন্তা করছেন। ইতোমধ্যে আইনজ্ঞদের সাথেও কথা বলেছেন তারা।

২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা উত্তরে আনিসুল হক এবং দক্ষিণে সাঈদ খোকন মেয়র নির্বাচিত হন। ঢাকা উত্তর সিটির প্রথম বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয় ১৪ মে ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বৈঠক ১৭ মে অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯ অনুযায়ী, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে ভোটগ্রহণ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেই হিসেবে পাঁচ বছর মেয়াদ শেষে গত ১৫ নভেম্বর ঢাকা উত্তর এবং ১৮ নভেম্বর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের উপযোগী হয়েছে। তবে ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুর কারণে এ বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আতিকুল ইসলাম মেয়র নির্বাচিত হন। এ দিন একই সাথে দুই সিটির সাথে নতুন যুক্ত হওয়া ৩৬ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ভোটে মোট ৪৮ জন কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।

এ দিকে ঢাকার দুই সিটির নির্বাচনের জন্য ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতি শুরু করেছে। নির্বাচনের দিন ঠিক না হলেও জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে নির্বাচন হতে পারে বলে কমিশনের সিনিয়র সচিব মো: আলমগীর আভাস দিয়েছেন। এ জন্য আগামী সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি। জানা যায়, নির্বাচন কমিশন দুই সিটির সব ওয়ার্ডেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে এর বিরোধিতা করেছেন দুই সিটির সাথে যুক্ত হওয়া ৩৬ ওয়ার্ডের কাউন্সিলরা। এসব ওয়ার্ডের নির্বাচিত কাউন্সিলররা এক সাথে জোটবদ্ধ হয়ে ভোট না করতে কমিশনের কাছে সময় চেয়ে আবেদন করেছেন। তাদের দাবি নির্বাচিত হওয়ার পর নিজ এলাকার উন্নয়নের জন্য এক বছরও সময় পাননি। অথচ একজন কাউন্সিলর পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হন। সে ক্ষেত্রে দুই সিটির এসব সম্প্রসারিত ওয়ার্ডে এখন ভোট না দিয়ে তাদেরকে কাজ করার পর্যাপ্ত সময় দিতে দাবি জানান তারা।

ঢাকা দক্ষিণ সিটির নব সংযুক্ত এলাকা ৬৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো: মাসুদুর রহমান মোল্লা নয়া দিগন্তকে বলেন, আমরা মাত্র ৯ মাস কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। এ সময়ে আমরা জনগণের তেমন কোনো প্রত্যাশা পূরণ করতে পারিনি। এখন নতুন করে ভোট চাইতে গেলে তাদের কাছে কি জবাব দেব? এ জন্যই আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত আবেদন করেছি আমাদের মেয়াদ পাঁচ বছর করার জন্য। এ দিকে কাউন্সিলররা নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন দেয়ার বেশ কিছুদিন পার হলেও কোনো আশ্বাস না পাওয়ায় তারা এখন আইনি পদক্ষেপ নেয়ার কথা ভাবছেন।
ঢাকা উত্তর সিটির সাথে যুক্ত নতুন ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো: নাসির উদ্দীন নয়া দিগন্তকে বলেন, সংবিধান অনুযায়ী সাধারণ নির্বাচনের মেয়াদ পাঁচ বছর। ঢাকা উত্তরের মেয়রের ক্ষেত্রে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও আমরা নতুনভাবে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হয়েছি। এ জন্য আমরা সম্মিলিতভাবে নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করেছিলাম যাতে আমাদের মেয়াদ পাঁচ বছর রাখা হয়। কিন্তু নির্বাচন কমিশন থেকে আমরা পজিটিভ কোনো জবাব পাইনি।

জানা যায়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় যথাসময়ে ভোট করার জন্য ইসিকে গ্রিন সিগন্যাল দিয়ে চিঠি দিয়েছে। আইন অনুযায়ী ইসির ভোট করতে বাধা নেই বলে জানিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, স্থানীয় সরকার থেকে চিঠি পাওয়ার ভোট গ্রহণের প্রস্তুতি শুরু করে কমিশন। এ জন্য নির্বাচন কমিশন সচিবালয় চলছে তফশিল দেয়ার প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি। তবে ভোটের চূড়ান্ত তারিখ নির্ধারণে সরকারের গ্রিন সিগন্যালের অপেক্ষায় রয়েছে কমিশন। ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ১৬, ১৯, ২৩, ২৬ ও ৩০ জানুয়ারি ভোট গ্রহণের সম্ভাব্য তারিখ ধরে নির্বাচনী প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ৪০ থেকে ৪৫ দিন হাতে রেখে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে কমিশন। সরকার জানুয়ারিতে ভোট না চাইলে মার্চ-এপ্রিলে ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটিতে একই দিন ভোট করার দ্বিতীয় পরিকল্পনা রয়েছে কমিশনের।

খসড়া ভোটকেন্দ্র প্রস্তুত : ইসির কর্মকর্তারা বলেছেন, এরই মধ্যে দুই সিটির ভোটকেন্দ্রের খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে ভোটার তালিকাও। আর দুই সিটিতে সব কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতেও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তারা বলেছেন, দুই সিটিতে প্রায় আড়াই হাজার ভোটকেন্দ্র রয়েছে। ভোটকক্ষ রয়েছে প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার। এ জন্য প্রায় ১৫ হাজার ইভিএম প্রয়োজন হবে। ইভিএমে ভোট গ্রহণের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। প্রয়োজনীয় মেশিন কমিশনের সংগ্রহে রয়েছে।

Bootstrap Image Preview