জম্মু-কাশ্মীরে বিশেষ মর্যাদা লোপ, অযোধ্যায় রামমন্দিরের পক্ষে রায় ও নাগরিকত্ব বিল পাসের মতো বড় বড় রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত সফল করতে পেরেছে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। এবার দলটির তৃতীয় লক্ষ্য- ভারতে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে এগোচ্ছে বিজেপি।
ভারতের শীর্ষ আদালতের রায়ে অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ বনাম রাম মন্দিরের বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়েছে। সেটি শীর্ষ আদালত দিলেও বাকি দুই বড় সিদ্ধান্ত হয়েছে সংসদের হাত ধরেই। আর দুটি ক্ষেত্রেই নিজের বিশ্বস্ত সেনাপতি অমিত শাহকে কৃতিত্ব নেওয়ার অনেকটা সুযোগও করে দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
আনন্দবাজার জানিয়েছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী একটি ঘরোয়া পার্টিতে বলেছেন ‘‘যে স্বপ্ন নিয়ে এগিয়েছি, একে একে তা পূরণ হচ্ছে।’’
বিরোধীরা যা আশঙ্কা করছিল তা এখন বাস্তব। এখন বিজেপি সাংসদেরা খোলাখুলি সংসদেও বলতে শুরু করেছেন যে ভারত একটি হিন্দুরাষ্ট্র। ঘরোয়া আড্ডায় তারা বলছেন, ‘‘বিরোধীরা যতই অন্য বিষয় তুলে চেঁচানোর চেষ্টা করুন, শেষপর্যন্ত তাঁদের বিজেপির দেওয়া অস্ত্র নিয়েই খেলতে হবে।’’ আর সেটি যে শুধুই ঘুরেফিরে হিন্দু-মুসলিম বিতর্কেই কেন্দ্রীভূত হবে, সেটিও আর গোপন করছেন না বিজেপি নেতারা।
বিজেপির কর্মসূচিতে মূল বিষয় তিনটি ছিল। যার মধ্যে রামমন্দির তৈরি নিশ্চিত করা ও জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপের কাজ শেষ হয়েছে। তৃতীয়টি অভিন্ন দেওয়ানি বিধি তৈরি। এবার সেটি বাস্তবায়নে কাজ শুরু করেছে বিজেপি।
ভারতের মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বলছেন, ‘‘বিজেপির ইশতেহারে যা লেখা আছে, সব রূপায়ণ করা হবে।’’
তবে বিজেপি শিবিরে আরো প্রকল্প নিয়ে আলোচনাও চলছে। নাগরিকত্ব বিল পাসের পর জাতীয় নাগরিকপঞ্জি তো আছেই। ২০২৪ সালের আগে তা চালুর কথা বলেছেন অমিত শাহ। এ বছরে ভারতের স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদি ঘোষণা করেছেন জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের কথা। সেই সংক্রান্ত আইন নিয়েও কথা চলছে।
অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে সম্প্রতি যতবার অমিত শাহকে প্রশ্ন করা হয়েছে, সেটির কোনো নির্দিষ্ট দিনক্ষণ দেননি তিনি। কারণ, এটি চালু করতে হলে হিন্দুদেরও কোনো ক্ষতি হবে কি না, সেটি ভেবে দেখা হচ্ছে। গোটা ব্যবস্থা আটোসাঁটো করেই এটি আনা হবে। যেমন আনা হয়েছে নাগরিকত্ব বিল।
বিজেপির এক নেতার মতে, ভারতের মোদি সরকার এমন পদক্ষেপ নিবে, যেখানে বিরোধী শিবিরেরও সমর্থন পাওয়া যায়। আর কংগ্রেসের মত, সেটি আসলে মোড়কমাত্র। আসল খেলা তো বিভাজনের। লক্ষ্য হিন্দুরাষ্ট্র গড়ার। ২০২৪ সালে সেটিকে ভর করেই নির্বাচনে দাঁড়াবেন মোদি।