সোমবার ভারতের লোকসভায় পাশ হয়েছে বিতর্কিত ‘নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল’। আর সেই বিলের প্রতিবাদেই দিন কে দিন অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠছে আসামের পরিস্থিতি। এই প্রতিবাদে আসাম জুড়ে ডাকা অবরোধে সর্বাত্মক সাড়াও মিলেছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে গুয়াহাটি, ডিব্রুগড়-সহ আসামের বিভিন্ন জায়গায় ছিল দোকানপাট বন্ধ। প্রতিবাদ-বিক্ষোভেও শামিল হয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। এমনকী বহু মানুষ উলঙ্গ হয়েও রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছে মানুষ।
পরিস্থিতি যেন ক্রমেই হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে আসামে। মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীদের রোষের মুখে পড়েন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোওয়াল। গুয়াহাটির বিজেপি সাংসদ কুইন ওঝার বাড়িতেও ভাঙচুর চালিয়ে বাড়ির উঠোনেই তাঁর কুশপুতুল পোড়ায় জনতা। নর্থ ইস্ট স্টুডেন্টস ইউনিয়ন এই বিলের প্রতিবাদে নাগাড়ে অবরোধ ডেকেছে। সেই অবরোধের দ্বিতীয় দিনে গোলঘাট, তিনসুকিয়া, ডিব্রুগড়ের মতো জেলাগুলিতে মারাত্মক প্রভাব পড়েছে।
বিপাকে পড়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীও। মঙ্গলবার গুয়াহাটিতে একটি অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী সনোওয়াল। কিন্তু তাঁর কনভয়ের সামনে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের আশঙ্কায় তাঁর যাত্রাপথ বদলাতে হয়েছে। তবে আসামের মানুষকে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। তবে বাঙালি অধ্যুষিত বরাক উপত্যকায় অবরোধ সফল, এমনটা বলা যাবে না।
শুধু আসাম নয়, ত্রিপুরা, মণিপুর ও অরুণাচলেও চলছে বিক্ষোভ। মিছিল বের করে দুটি ছাত্র সংগঠন। মিছিলে হাঁটেন বহু মানুষও। তবে পরিস্থিতি যে এমন হাতের বাইরে যেতে পারে, তার আশঙ্কা করেছিলেন স্বয়ং দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও।
সোমবারই সংসদে ওই বিল পেশের সময় তিনি বারবার সতর্ক থাকার কথা বলে জানিয়েছিলেন, স্থানীয় মানুষেরই স্বার্থ দেখা হবে, তাই এই বিক্ষোভ দেখানোর কোনও প্রয়োজন নেই। অবিলম্বে বিক্ষোভের পথে ছেড়ে বেরিয়ে আসারও আবেদন করেন তিনি। কিন্তু শাহের কথা যে কেউ কানে তোলেননি, সেটা এদিনের বিক্ষোভ থেকেই স্পষ্ট।