Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

২২৪ পৃষ্ঠার ‘দুর্নীতির খতিয়ান’ প্রকাশ জাবি ভিসির বিরুদ্ধে!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৯:৩২ PM
আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৯:৩২ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে ‘দুর্নীতির খতিয়ান’ প্রকাশ করেছে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।মঙ্গলবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্যের দুর্নীতির খতিয়ান বই আকারে প্রকাশ করা হয়।

২২৪ পৃষ্ঠার এ বইতে উপাচার্যের বিরুদ্ধে ১১টি খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে ৭৫টি দুর্নীতি দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া খতিয়ানে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় দুর্নীতিবিরোধী সাত ইশতেহারও প্রস্তাব করেছে আন্দোলনকারীরা।

আন্দোলনকারীদের প্রকাশিত এ খতিয়ানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পে উপাচার্যের আর্থিক দুর্নীতি, অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের নির্মাণ কাজের টেন্ডার ও মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নে অনিয়ম, আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার মদদ দেয়ার অভিযোগ করা হয়।

এ ছাড়া বিভিন্ন সময় উপাচার্যের মিথ্যাচার, আন্দোলনকারীদের ইঙ্গিত করে অজ্ঞাতদের নামে মিথ্যা মামলা এবং জাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও তার অনুসারীদের দিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা, উপাচার্যের অতীত দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচার, ইন্সটিটিউট অব রিমোট সেনসিং এন্ড জিআইএস-এ অনিয়ম, ইন্সটিটিউট অব আইটি-তে অনিয়ম, মেগা প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ, দরপত্র আহ্বান ও ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উল্লেখ করা হয়।

খতিয়ানটিতে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান আন্দোলনের ইতিবৃত্ত; অপরিকল্পিত মাস্টারপ্ল্যানের সংকট; উপাচার্যের দুর্নীতির পূর্বাপর; আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার বৃত্তান্ত; বিভিন্ন সময় দেয়া স্মারকলিপি, লিফলেট, সংবাদ বিবৃতি; আচার্যের কাছে খোলা চিঠি, সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন সময়ের প্রতিবেদন; কার্টুন, গ্রফিতি, পেইন্টিং ও স্থিরচিত্র; আন্দোলনের ক্রমপঞ্জি; দুর্নীতিবিরোধী ৭টি ইশতেহারসহ আন্দোলনের নানা দিক খতিয়ানে উল্লেখ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সহ-সভাপতি মুশফিক-উস-সালেহীনের সঞ্চালনায় আন্দোলনের সমন্বয়ক অধ্যাপক রায়হান রাইন খতিয়ানের ‘ভূমিকা’, অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু ‘উপাচার্যের দুর্নীতির পূর্বাপর’ ছাত্রফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী) বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাহাথির মুহাম্মদ ‘দুর্নীতিবিরোধী ইশতেহার’ পাঠ করেন।

এ সময় রায়হান রাইন বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, দুর্নীতির বিরুদ্ধে চলমান এই আন্দোলন ‘দুর্নীতিবাজ’ উপাচার্যের অপসারণের মধ্য দিয়ে আগামী দিনে দুর্নীতিগ্রস্ত পথ পরিবর্তনের সুগম করবে।’

বইয়ের ইশতেহারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত প্রশাসনিক, একাডেমিক ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের অর্থনৈতিক হিসাব জনসম্মুখে প্রকাশ করা, মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন, সংশোধন এবং যে কোনো অবকাঠামোগত উন্নয়নে সব অংশীজনের মতামত ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের মাধ্যমে উপাচার্য নিয়োগ করা, ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিয়ে সিনেট পূর্ণাঙ্গ করা এবং সমস্ত বাণিজ্যিক কোর্স এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপনার বাণিজ্যিক ব্যবহার বন্ধ করার দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক খবির উদ্দিন, অধ্যাপক আব্দুল জব্বার হাওলাদার, অধ্যাপক তারেক রেজা, অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা, অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, সহযোগী অধ্যাপক খন্দকার হাসান মাহমুদ প্রমুখ। এ ছাড়া বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রফ্রন্ট, জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট ও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়নের লক্ষ্যে গত বছর ২৩ অক্টোবর ১ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা অনুমোদন দেয় একনেক। এই কাজের নানা অনিয়ম, ত্রুটি, দুর্নীতিসহ কয়েকটি অভিযোগ তুলে আন্দোলন করে আসছে একদল শিক্ষক-শিক্ষার্থী।

এ সব বিষয় জানতে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

আর উপাচার্যপন্থী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমন্বিত সংগঠন ‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে এবং উন্নয়নের পক্ষে জাহাঙ্গীরনগর’-এর শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে- ২২৪ পৃষ্ঠার বইটি (খতিয়ান) না পড়ে কেউ মন্তব্য করতে চাননি। তারা বলেন, বইটি পড়ে বিচার-বিশ্লেষণ না করেই মন্তব্য করা ঠিক হবে না।

Bootstrap Image Preview