নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএন) অফিসের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী সোহাগ (৩৫) এর দাপটে এলাকাবাসী অতিষ্ট হয়ে উঠেছে।
ভুক্তভোগীরা জানায়, দৈনিক হাজিরা ভিত্তিক উপজেলা প্রশাসনের অস্থায়ী এই কর্মচারীর বিরুদ্ধে ইউএনও জেলা প্রশাসক সহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রতিকার চেয়ে আবেদন করে পাওয়া যাচ্ছেনা উপযুক্ত বিচার। উল্টো অভিযোগের পরে মারধর, হয়রানীর স্বীকার হয়েছে তার প্রতিবেশী বিধবা আমেনা বেগম (৫৫) ও তার পরিবারের সদস্যরা।
পুলিশের সামনেই প্রকাশ্যে খুন-গুম করার হুমকি দিচ্ছে সোহাগ ও তার সহচররা। স্থানীয় পর্যায়ে বিচার সালিশকে তোয়াক্কা করছেনা ইউএনও অফিসের কর্মচারী হওয়ার সুবাদে। বিধবা আমেনা খাতুন না পাচ্ছে কোথাও বিচার, না পাচ্ছে নিজের বাড়ীতে শান্তিতে থাকতে।
নিরাপত্তার অভাবে আমেনা বেগমের ছেলে রবিউল হাসান (২৫) বাড়ী ছেড়ে আত্মগোপনে রয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সোহাগ উপজেলা প্রশাসনের কর্মচারী হওয়াতে তার বিষয়ে এলাকার কেউ মুখ খুলতে নারাজ।
জানা যায়, সোনাইমুড়ী পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ড কৌশল্যারবাগ গ্রামের পুরাতন ভূঁইয়া বাড়ীর মৃত ইউনুছ মিয়ার স্ত্রী আমেনা বেগমের সাথে সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিলো প্রতিবেশী নুরুল আমিন (৬০) প্রকাশ খোকা মিয়ার সাথে। গত মাসের ১৭ তারিখ বিধবা আমেনা বেগম নিজের ক্রয় করা নিস্কন্টক ৬ শতক জমিনে রান্নাঘর তোলার কাজ করছিলো। এ সময় নুরুল আমিনের ছেলেরা অন্যায়ভাবে বাধা প্রদান সহ তার কন্যা শহিদা খাতুন (৩৮) ছেলে রবিউল হাসানকে (২৫) বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে। গুরুতর আহত ৩ জনকে উদ্ধার করে সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় একই দিন সোনাইমুড়ী থানায় ইউএনও অফিসের কর্মচারী সোহাগ (৩৫) তার সহদর মিলন (৩৮) ইকবাল (২৫), বাপ্পি (২২) ও পিতা নুরুল ইসলাম খোকা মিয়া (৬০) কে বিবাদী করে অভিযোগ দায়ের করলে অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার এসআই নাজমুল হাসান ঘটনাস্থলে তদন্তে গেলে বিবাদীরা প্রকাশ্যে বিধবার পরিবারকে হত্যার হুমকি প্রদান করে।
পুলিশের এস আই নাজমুল হাসান গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। অভিযোগ রয়েছে এর আগে সোহাগ বিধবা আমেনা বেগমের ঘরে মাদক দ্রব্য রয়েছে এই মর্মে সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা টিনা পালকে মিথ্যে তথ্য দিয়ে অভিযান করিয়ে তার ছেলে সোনাইমুড়ী বাজারের একটি ক্রোকারিজ দোকানের কর্মচারী রবিউল হাসানকে ভ্রাম্যমান আদালতে মিথ্যে সাজা দেওয়ার পায়তারা চালায় পরে স্থানীয় সাংবাদিক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের তৎপরতায় সে যাত্রায় রক্ষা হয়।
এ বিষয়ে তিনি নোয়াখালী জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি অভিযোগ দায়ের করেন কিন্তু কোন তদন্ত বা ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। খোঁজ নিয়ে জানা যায় সোহাগ উপজেলায় মালিপদে দৈনিক হাজিরা ভিত্তিক অস্থায়ী কর্মচারী হলেও উপজেলায় তার প্রভাব অসীম। ইউএনও টিনা পালের গাড়ি চালাতে দেখা যায় তাকে। বর্তমানে সরকার সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) গাড়ি প্রদান করলেও চালক না থাকায় সে ঐ গাড়ির চালক হিসেবে কর্মরত থাকায় তার দুর্দান্ত দাপট উপজেলার ভূমি অফিসেও।
স্থানীয় একাধিক বাসিন্দার সাথে আলাপ করে জানা যায়, সোহাগ উপজেলা প্রশাসনের কর্মচারী হওয়ায় এলাকাবাসীর সাথে বেপরোয়া আচরণ করে থাকে। তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে বা প্রতিবাদ করলে ইউএনওর দাপট দেখায়। অভিযুক্ত সোহাগের সাথে এই বিষয়ে কথা হলে সে জানায়, আনীত এসকল অভিযোগের সাথে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। স্থানীয় একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে।
সোহাগের এসকল অভিযোগের বিষয়ে কথা হলে পৌরসভার সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর রওশন আরা (পুতুল) জানায় ,সোহাগ বেপরোয়া প্রকৃতির লোক।
কাউন্সিলর সামছুল আরেফিন জাফর জানায় সে সমাজের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়।