Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ভারতে অমুসলিম কেউ পাঁচ বছর বসবাস করলেই পাবে নাগরিকত্ব

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৯:৫৮ AM
আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৯:৫৮ AM

bdmorning Image Preview


পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসা অমুসলিম শরণার্থীরা দেশটিতে পাঁচ বছর বসবাস করলেই নাগরিকত্ব পাবে; এমন বিধান রেখে একটি খসড়া বিলে অনুমোদন দিয়েছে দেশটির মন্ত্রিসভা।

আগামীকাল সোমবার সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট বিল (ক্যাব) নামের ওই বিলটি পার্লামেন্টে (লোকসভা) তোলা হবে। এতে প্রস্তাব করা হয়েছে, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে আসা হিন্দু, খ্রিষ্টান, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ ও পার্সি ধর্মাবলম্বী শরণার্থীরা ভারতীয় নাগরিক বিবেচিত হবে।

এর আগেও একবার পার্লামেন্টে বিলটি উত্থাপন করা হলেও তা পাস হয়নি। তখন আসামসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলজড়ে বিলটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছিল।

১৯৫৫ সালের মূল আইনে বলা হয়েছে, নাগরিকত্ব পেতে হলে ভারতে থাকতে হবে ১১ বছর। তবে প্রথম মোদি সরকারের আমলে আনা বিলটিতে তা কমিয়ে ছয় বছর করা হয়। এবার কমানো হলো আরো এক বছর। সংশোধিত নাগরিকত্ব বিলের উদ্দেশ্য উল্লিখিত ছয়টি সম্প্রদায়কে ভারতের নাগরিকত্ব দেয়া। এর বিরোধিতা করেছেন বিরোধী রাজনীতিকরা।

তারা বলছেন, এতে মুসলমানদের প্রতি বৈষম্য করা হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় সরকার দাবি করেছে, তারা প্রতিবেশী দেশের কথিত ‘নিপীড়িত’ সংখ্যালঘুদের ‘সহযোগিতা দিতে দায়বদ্ধ’।

প্রস্তাবিত সংশোধিত বিলে কোনো শরণার্থী অমুসলিম হলফনামা দিলেই তাকে নাগরিকত্ব দেয়া হবে বলে দাবি বিজেপি নেতাদের। তবে কোনো মুসলমান যদি নিজেকে হিন্দু বা পার্সি বা বৌদ্ধ হিসেবে দাবি করে তা হলে তা আটকানোর উপায় রয়েছে কি না, তা নিয়ে নীরব বিজেপি শিবির।

রাজনীতির সাথে যুক্ত অনেকেই মনে করেন এই নাগরিকত্ব বিল পাস হলে পশ্চিমবঙ্গে সব থেকে বেশি সুবিধা হবে মতুয়া সম্প্রদায়ের।

কারণ তারা দীর্ঘ সময় ধরে নাগরিকত্বের দাবিতে সরব রয়েছে। বিজেপি শিবিরের বক্তব্য, সেই দাবি পূরণ করতেই বিলটি আনছে মোদি সরকার। কিন্তু ২০১৫ সাল থেকে বিল পাস হওয়া পর্যন্ত যে অমুসলিমরা শরণার্থী হিসেবে প্রবেশ করেছেন তাদের ভবিষ্যৎ কী হবে? বিলে এ ব্যাপারে কোনো স্পষ্ট উল্লেখ না থাকায় সংশয় ছড়িয়েছে।

তবে বিজেপির থিংক ট্যাংক শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ডিরেক্টর অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘বিলটি আগে আসুক। তা হলেই সব স্পষ্ট হবে। যে প্রশ্নগুলো উঠছে বিলটির বিস্তারিত আলোচনায় নিশ্চয়ই উঠে আসবে।’ নতুন বিলে বলা হয়েছে ইনার লাইন পারমিট (বেঙ্গল ইয়েস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার রেজুলেশন-১৮৭৩) ও ষষ্ঠ তফশিলভুক্ত উপজাতীয় এলাকায় ওই আইন প্রযোজ্য হবে না।

সে অনুযায়ী অরুণাচল, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা এই বিলের আওতাভুক্ত নয়। একই দেশে নাগরিকত্বের প্রশ্নে কেন দুই ধরনের নিয়ম আনা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন।

গত শুক্রবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেস আর একটা স্বাধীনতার আন্দোলন করবে। আপনারা তৈরি থাকুন।’ মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ‘স্বাধীনতার ৭২ বছর পর হঠাৎ নাগরিকত্ব নির্ধারণ করা যায় না, এনআরসি আমি মানি না। নাগরিক তালিকায় যদি জানা যায়, নাগরিকরা ভুয়া, তা হলে তো এদের ভোটে জেতা সরকারও ভুয়া, তা হলে মোদিও ভুয়া, তার সরকারও ভুয়া।’

চলতি বছর আসামের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন রাজ্যের প্রায় ১৯ লাখ ছয় হাজার ৬৫৭ জন মানুষ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, ‘২০২৪ সালের নির্বাচনের আগেই এনআরসি সারা দেশে প্রয়োগ করা হবে এবং প্রত্যেকে অনুপ্রবেশকারীকে চিহ্নিত করে ভারত থেকে বহিষ্কার করা হবে।’

Bootstrap Image Preview