Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

৫০ হাজার ধার দিয়ে লিখে নিতেন আড়াই কোটি!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৯:৫৬ AM
আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৯:৫৬ AM

bdmorning Image Preview


নিজেকে ইমাম হিসেবে পরিচয় দিলেও চেক প্রতারনাই তার কাজ। নিজের নামে অর্থ ও জমি বাগিয়ে নিতে ছাড়েননি মা ও ভাইকেও। ৫০ হাজার টাকা ধার দিয়ে আড়াই কোটি টাকার চেক লিখে নেয় নিজের নামে। এখন পর্যন্ত তার এই চেক প্রতারণার শিকার হয়েছেন ২০ জনেরও বেশি।

গত ২৮ নভেম্বর আই প্রতারককে রাজধানী থেকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি-উত্তর)।এই অভিনব চেক প্রতারক হলেন লক্ষ্মীপুরের সামসুল হুদা (৪৮)।

প্রথমে সাহয্যের নামে টাকা ধার দেন ফেরত দিতে ব্যর্থ হলে ঠুকে দেন মিথ্যা মামলা এভাবেই সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়।

ডিবি পুলিশ সূত্র জানায়, ১৯৯৮ সালে সৌদি আরব গিয়ে মক্কার একটি উপশহরে মসজিদে ইমামতি করতেন সামসুল হুদা। ২০১২ সালে দেশে ফিরে জমানো টাকার কিছু শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেন। এ সময় কিধু টাকা আভ হওয়ায় তার অর্থের লোভ বেড়ে যায়। তিনি প্রথমে টার্গেট করেন তার ৩ ভাইকে। তাদের অল্প কিছু টাকা ধার দিয়ে এক ভাইয়ের কাছ থেকে ৪৮ লাখ টাকা, অন্য দুই ভাইয়ের চেকে ৩৮ লাখ টাকা লিখে নেন। এভাবে তাদের বিরুদ্ধে চেক ডিজ অনারের মামলা করেন। প্রতিটি মামলা তিনি ঢাকাতে করেছিলেন। পরে মামলা নিষ্পত্তির কথা বলে তিন ভাই ও তার মায়ের জায়গা-জমি লিখে নেন।

ঠিক একই ভাবে টাকাধার দিয়ে তার এক ভায়রা ও  শান্তিনগর জামে মসজিদের ইমাম মোবারক হোসেনকেও প্রতারনার ফাদে ফেলে তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নান বিশাল অঙ্কের টাকা।  

মোবারক হোসেনকে টাকা ধার দেওয়ার আগে সামসুল তাকে বলেন, ব্যাংক থেকে টাকা তুলে দেবেন। ব্যাংকে যাওয়ার পর মোবারকের কাছ থেকে একটি চেক জমা নেন। যখন তিনি চেকে স্বাক্ষর করেন, তখন টাকার অঙ্ক লেখার আগে তাকে টাকা গুনতে দেন। এ সুযোগে মোবারকের ব্লাঙ্ক চেক নিয়ে সামসুল চলে আসেন। ওই চেকে সামসুল ৫০ হাজারের স্থানে আড়াই কোটি টাকা উল্লেখ করেন। এর সাত দিন পর ঢাকার জজ কোর্টের এক উকিলের নোটিস পান মোবারক। পরে তিনি ওই উকিলের সঙ্গে যোগাযোগ করে বলেন, আপনি এটা কি নোটিস দিয়েছেন, এ বিষয়ে তো আমি কিছুই জানি না। এ পরিস্থিতিতে গত জুনে সামসুলের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনে একটি মামলা করেন মোবারক। ওই মামলায় গত ২৬ জুন সামসুলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।

গ্রেফতারের পর পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সামসুল হুদা জানিয়েছেন, ব্যাংক চেক নিয়ে তিনি নিজের মতো টাকা বসিয়ে মামলা দিতেন। গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি-উত্তর) উপ-কমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান বলেন, সে বিভিন্নজনের সঙ্গে প্রতারণা করে। যাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হতো তারা নিজের জায়গা-জমি, পালের গরু বিক্রি করে টাকা দিয়ে আপস করত। তার কাছ থেকে নিজের মা, ভাই-বোনেরাও রক্ষা পায়নি। এমনকি মোবারককে মামলা থেকে রেহাই দেওয়ার কথা বলে তার বাড়ি লিখে নেওয়ার প্রস্তাব দেন। এ ধরনের প্রতারণা সম্পর্কে সবাইকে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

Bootstrap Image Preview