বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতাকে পুরনো উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সে (খালেদা জিয়া) তো বিদেশে গিয়ে হুইল চেয়ারেই শপিং করত। ফালু ঠেলত আর সে শপিং করত। সে যখন হজ করে সেখানেও ফালু হুইল চেয়ার ঠেলে, সে হজ করে। হুইল চেয়ারে বসা, সেটা তো নতুন কিছু না।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকালে গণভবনে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সভার সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া যখন ’৯১ সালে সরকারে আসে, তখন আমেরিকায় তার নিক্যাপ রিপ্লেস করে অপারেশন হয়। পরবর্তীতে আবার সৌদি আরবে করে। তার হুইল চেয়ারে বসা তো বহুযুগ ধরে আমরা দেখে আসছি।
খালেদা জিয়াকে কারাগারে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জেলে খালেদা জিয়া রাজার হালে আছে। পৃথিবীর কোনো দেশে এই দৃষ্টান্ত কেউ দেখাতে পারবে যে, কোনো সাজাপ্রাপ্ত আসামির সেবার জন্য কাজের বুয়া যায়। সেটাও কিন্তু সে পাচ্ছে। মানুষ এমনিতেই কাজের বুয়া পায় না, আর খালেদা জিয়ার জন্য জেলে স্বেচ্ছায় একজন কারাবরণ করছেন, খালেদা জিয়ার সেবা করার জন্য। এতটুকু সুবিধা পর্যন্ত তাকে দেওয়া হচ্ছে, এটা হলো বাস্তবতা।
খালেদা জিয়াকে সন্ত্রাসের গডমাদার হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে সন্ত্রাসের গডমাদার হচ্ছে খালেদা জিয়া। জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে। এর চেয়ে বড় সন্ত্রাস আর কী হতে পারে?
জিয়া পরিবারের নৃশংসতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়া পরিবারটাই খুনি পরিবার। ভোট চুরি, মানুষ হত্যা, আগুন দিয়ে পোড়ানো, এতিমের অর্থ আত্মসাৎ, দুর্নীতি, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমানসহ মানুষ হত্যা অর্থাৎ জিয়া যেমন খুনি ছিল, খালেদা জিয়াও আরেক খুনি, তার ছেলেও খুনি। এ পরিবারটাই খুনির পরিবার। তারা মানুষ খুন, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাৎ করা ছাড়া আর কিছুই জানে না। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার জন্য অনেকের মায়াকান্না দেখি। খালেদা জিয়া যে মানুষকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যা করল, এটা তারা ভুলে যায় কেন? মানুষকে কীভাবে তারা অত্যাচার করেছে সেটা ভুলে যায় কেন? তার হুকুমে কত মায়ের কোল খালি হয়েছে, কত বোন বিধবা হয়েছে, কত বোন আগুনে পুড়ে বিকৃত চেহারা হয়েছে। ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, আইনজীবী কেউ তো বাদ যায়নি। সেই বীভৎস অবস্থাটা নিয়ে মানুষ বেঁচে আছে। তারপর এই দরদটা যারা দেখায়, তাদের আবার আগুনে পোড়া মানুষের চেহারাটা একটু দেখে আসা উচিত।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরই দেশের মানুষের উন্নতি হয়েছে দাবি করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এর আগে অনেকে অনেক কিছুই বলতে পারে। এটা হয়েছে, ওটা হয়েছে। ও এনজিও করেছে তার জন্য দেশ উন্নতি হয়েছে। কিন্তু উন্নতি যদি হতো তাহলে দারিদ্র্যের হার কমেনি কেন? প্রবৃদ্ধির হার বাড়েনি কেন? মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হয়নি কেন? একমাত্র আওয়ামী লীগ যখন সরকারে এসেছে, তখন হয়েছে। আজকে আমরা ৮ দশমিক ১৩ ভাগ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পেরেছি। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন আবুল মাল আবদুল মুহিত, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, বেগম মতিয়া চৌধুরী, কাজী জাফরউল্যাহ, লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান, নুরুল ইসলাম নাহিদ, আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, ওবায়দুল কাদের, মাহবুব-উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বি এম মোজাম্মেল হক, এনামুল হক শামীম, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল প্রমুখ।