চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলিমদের ‘অবাধে আটক, নির্যাতন ও হেনেস্তা’ করা হচ্ছে দাবি করে একটি বিল পাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদ।
এই বিলে চীনের ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের এবং দেশটির জিনজিয়াং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের কমিউনিস্ট পার্টির সম্পাদক ছান ছিয়াংকোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।
মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষে পাশ হওয়া বিলটি সিনেট ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুমোদন পেলে তা আইনে পরিণত হবে। এ ঘটনায় চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বিলটিকে ‘বিদ্বেষপূর্ণ’ বলে অভিহিত করেছে।
মাত্র কয়েক দিন আগে হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভকারীদের সমর্থন করে কংগ্রেসে পাশ হওয়া একটি বিলে স্বাক্ষর করে সেটিকে আইনে পরিণত করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ঐ বিলেরও তীব্র নিন্দা করেছিল চীন। সেটির রেশ কাটতে না কাটতেই ফের আরেকটি বিল পাশ করল ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদ।
গত মঙ্গলবার রাতে ‘উইঘুর হিউম্যান রাইটস পলিসি অ্যাক্ট, ২০১৯’ শিরোনামের এই বিলের পক্ষে ৪০৭ ভোট ও বিপক্ষে পড়ে এক ভোট। কেনটাকির রিপাবলিকান প্রতিনিধি টমাস ম্যাসি বিলটির বিপক্ষে ভোট দেন। এর আগে তিনি হংকং বিলের বিরুদ্ধেও ভোট দিয়েছিলেন।
এই বিলে চীনের যে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ‘শিনজিয়াংয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ আনা হয়েছে’ তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। বিলটিতে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির জিনজিয়াং শাখার প্রধান ছান ছিয়াংকোর নাম উল্লেখ করে তাকে উইঘুরদের বিরুদ্ধে পরিচালিত শিবিরের ‘স্থপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিলে ‘উইঘুরদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের’ নিন্দা করার জন্য সব শিবির তাত্ক্ষণিকভাবে বন্ধ করতে এবং ‘আন্তর্জাতিকভাবে নিশ্চয়তা দেওয়া মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা নিশ্চিত করতে’ চীনকে বলার জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিলটিকে ‘বিদ্বেষপূর্ণ’ অভিহিত করে ‘চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ’ বন্ধ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। একই সঙ্গে উইঘুর ইস্যুকে আইনি কাঠামো না দিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশটি। চীন তার স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলেও ওয়াশিংটনকে সতর্ক করে দিয়েছে বেইজিং। চীনের একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, বিলটি আইনে পরিণত হলে ওয়াশিংটনের সঙ্গে বেইজিংয়ের প্রথম ধাপের বাণিজ্য চুক্তি ঝুঁকির মুখে পড়বে।
এদিকে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে পাশ হওয়া বিলটিকে স্বাগত জানিয়েছেন ওয়ার্ল্ড উইঘুর কংগ্রেসের মুখপাত্র দিলশাত রক্ষিত। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, উইঘুর মুসলিমদের বিরুদ্ধে চীনের অব্যাহতভাবে চরম নিপীড়নের বিরুদ্ধে এই বিল একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ধারণা করা হয়, চীনা বন্দীশিবিরগুলোতে ১০ লাখেরও বেশি উইঘুর মুসলিমকে বিনা বিচারে আটকে রাখা হয়েছে।