Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৪ বুধবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

আজ আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৯:৪২ AM
আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৯:৪২ AM

bdmorning Image Preview


আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস আজ। 'প্রতিবন্ধীদের অংশগ্রহণ ও নেতৃত্বের বিকাশ : ২০৩০ উন্নয়ন কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্তিকরণ'-এই প্রতিপাদ্যে সারা বিশ্বে আজ উদ্যাপিত হচ্ছে দিবসটি। তবে বাংলাদেশে ২৮তম আন্তর্জাতিক এবং ২১তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস সরকারিভাবে আগামী বৃহস্পতিবার পালন করা হবে।

নেতৃত্বের বিকাশ বা অংশগ্রহণ অনেক দূরের বিষয়। বেঁচে থাকতেই রীতিমতো সংগ্রাম করতে হয় প্রতিবন্ধীদের। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কর্মক্ষেত্র, গণপরিবহন, রাস্তাঘাট, কোথাও প্রতিবন্ধীবান্ধব পরিবেশ নেই। কর্মসংস্থানের পথও বেশ কণ্টকাকীর্ণ। প্রতিবন্ধীদের নিয়ে সরকারের নেই দীর্ঘমেয়াদি কোনো পরিকল্পনা। সে জন্যই বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের প্রতিবন্ধীরা অনেক বেশি অবহেলিত। এমনটাই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মতে, তাদের জন্য নামে মাত্র আসন বরাদ্দ রাখা হয় গণপরিবহনে। কিন্তু গণপরিবহনে উঠার ব্যবস্থা নেই। আবার গণপরিবহনে দেখা যায়, প্রতিবন্ধীদের আসনে বসে আছে অন্যরা। এ ছাড়া দৃষ্টি ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের গণপরিবহনে উঠা বা চলাফেরা করা আরো কঠিন। প্রতিবন্ধীদের গণপরিবহন সংকট দেশের অন্যান্য শহরের তুলনায় রাজধানীতে বেশি। রাজধানীসহ দেশের শহরগুলোতে প্রতিবন্ধী সহায়ক ফুটপাত নির্মাণের কথা বলেছেন ঢাকার মেয়ররা। বাস্তবতা হলো, কোনো কোনো সিটি করপোরেশন প্রতিবন্ধী সহায়ক ফুটপাত নির্মাণ করলেও তা অত্যন্ত অপ্রতুল। ফুটপাতে টাইলস লাগানো হলেও তা দখল করে আছে অন্য স্থাপনা।

উচ্চশিক্ষায় প্রতিবন্ধীদের জন্য কোটা চালু রয়েছে। তবে ওই কোটায় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এবং স্বল্প শারীরিক প্রতিবন্ধিতা থাকা ব্যক্তিরা শুধু ভর্তির সুযোগ পায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পর চাকরির সুযোগও কম প্রতিবন্ধীদের। সিভিল সার্ভিসসহ বিভিন্ন চাকরিতে ১ শতাংশ কোটা ছিল প্রতিবন্ধীদের জন্য, কিন্তু সেই কোটা বাতিল করা হয়েছে। স্বল্প শারীরিক জটিলতা থাকা কিছু ব্যক্তিকে বাণিজ্যিক ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো নিয়োগ করলেও বেশির ভাগ প্রতিবন্ধী ব্যক্তি চাকরিহীন।

প্রতিবন্ধীদের মতে, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে তাদের অংশগ্রহণের সুযোগ কম। প্রতিবন্ধীদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়ও তাদের প্রতিনিধিত্ব রাখা হয়নি। ফলে এক ধরনের ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাস করা মো. হাসান বলেন, 'নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে প্রতিবন্ধীদের অংশগ্রহণের সুযোগ খুব কম। এটাই প্রতিবন্ধীদের বড় সমস্যা। এ ছাড়া দিন দিন কর্মসংস্থানের সুযোগ সংকুচিত হচ্ছে। কর্মসংস্থানের দিকে দৃষ্টি না দিলে প্রতিবন্ধীরা রাষ্ট্রের কোনো উপকারে আসবে না।' 

প্রতিবন্ধী ভাতা চালু, প্রথম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত বিনা মূল্যে ব্রেইল পদ্ধতির বই প্রদান, মানসিক ও শারীরিক অন্য প্রতিবন্ধীদের নিয়ে সরকারের কিছু পদক্ষেপের প্রশংসাও করেন মো. হাসান। 

দেশে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সংখ্যা নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের। ২০১৩ সালে প্রণীত প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইনে ১২ ধরনের প্রতিবন্ধিতার কথা বলা হয়েছে। সমাজসেবা অধিদপ্তরের হিসাবে দেশে ১৭ লাখ ছয় হাজার ৫১৮ জন প্রতিবন্ধী রয়েছে, যা মোট জনগোষ্ঠীর ১.০৩ শতাংশ। কিন্তু পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে ৬.৯৪ শতাংশ মানুষ প্রতিবন্ধী বলে উল্লেখ রয়েছে ২০১৬ সালের জরিপে। এ ছাড়া ২০০৩ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরিপে শতকরা ১০ ভাগ মানুষ প্রতিবন্ধী বলে দাবি করা হয়।

জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরামের সভাপতি সাইদুল হক বলেন, 'একজন স্বাভাবিক মানুষ যেভাবে চলাফেরা করতে পারে, সামাজিকভাবে মূল্যায়িত হয়, আমাদের সমাজে একজন প্রতিবন্ধীকে সেভাবে মূল্যায়ন করা হয় না। প্রতিবন্ধীদের সুযোগ-সুবিধাগুলো এখনো নিশ্চিত করা যায়নি।'

Bootstrap Image Preview