Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করে খুঁজে পেতে নিজেই মাইকিং করে ধর্ষক!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৬:৫৩ PM
আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৬:৫৩ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর মধ্য ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে ধর্ষণের কারণে রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয় চার বছরের এক শিশুর। মৃত শিশুটিকে ঘরে তালা মেরে রাখে ধর্ষক আমজাদ হোসেন (১৯)। এরপর পরিবার শিশুটিকে খুঁজতে মাইকিং করলে তাতে অংশ নেয় ধর্ষকও।

তবে একপর্যায়ে অন্যান্য শিশুর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাকে ধরে ফেলে এলাকাবাসী। উদ্ধার হয় নিথর শিশুটির দেহ।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) এ ঘটনা ঘটে। ধর্ষণে নিহত ওই শিশুর নাম আবিদা সুলতানা মীম।

নিহত মীম ওই গ্রামের ভ্যানচালক আরিফুল ইসলামের (২৪) মেয়ে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে শনিবার রাত ১১টায় ধর্ষকসহ তিনজনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে পার্বতীপুর মডেল থানায় মামলা করেছেন। মামলার অপর দুই আসামি হলেন, ধর্ষকের চাচা শাহিনুর আলম (৫০) ও দাদি মমিনা বেওয়া (৫৫)।

এদের দুজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। রোববার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে আদালতে মাধ্যমে তাদের দিনাজপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানা পুলিশ। পুলিশ জানায়, রোববার নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর এম আব্দর রহিম হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।

সোমবার আসামিদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে দিনাজপুর আমলি আদালত-৫ এ আবেদন জানানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সোহেল রানা।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পার্বতীপুর মডেল থানার পরিদর্শক তদন্ত সোহেল রানা জানান, শনিবার বেলা ৩টা থেকে মীমকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। অনেক খোঁজাখুঁজির পর পরিবারের লোকজন বিকেল ৫টা থেকে এলাকায় মাইকিং শুরু করে। মাইকিং চলাকালে নিহতের প্রতিবেশী ও ধর্ষক আমজাদ হোসেনও অংশ নেয়। এ সময় মীমের খেলার সাথি জিয়াদ (৫) জানায়, মীমকে চকলেট দেওয়ার কথা বলে আমজাদ ডেকে নিয়ে গেছে। এ কথা শুনে এলাকার ক্ষুব্ধ মানুষ এক জোট হয়ে আমজাদের বাড়ি গেলে তার বাড়ির মূল দরজা বন্ধ পায়। পরে দরজা খোলার জন্য অনেক ডাকাডাকি করলে আমজাদ হোসেন ভেতর থেকে দরজা খুলে দেয়। এ সময় জনতা বাড়ির ভেতরে ঢুকে একটি ঘর তালাবদ্ধ দেখতে পায়। তারা আমজাদকে ওই ঘর খুলে দিতে বললে সে জানায় ঘরের চাবি তার দাদির কাছে আছে। পরে চাবি আনার কথা বলে সে পালিয়ে যায়। রাত ৮টার দিকে পুলিশের উপস্থিতিতে ঘরের তালা ভেঙে টেবিলের নিচ থেকে শিশু মীমের রক্তাক্ত নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়।

পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত আবাসিক চিকিৎসক আলম মিয়া বলেন, শিশুটি রক্তাক্ত ছিল। ধর্ষণের কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।

নিহতের মা নাসরিন নাহার জানান, মীম আমার একমাত্র সন্তান। যে অমানুষ আমার মেয়েকে নষ্ট করেছে, খুন করেছে আমি তার ফাঁসি চাই।

শনিবার রাতে শিশু মীম ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় সরেজমিন পরিদর্শনে আসেন দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন ও পার্বতীপুর-ফুলবাড়ী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিয়া মোহাম্মদ আশিস বিন হাছান।

তারা নিহত মীমের শোকসন্তপ্ত বাবা-মাকে সান্ত্বনা ও সুবিচারের আশ্বাস দেন।

শিশু মীম ধর্ষণ ও হত্যা ঘটনায় পার্বতীপুর মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শনিবার রাতে ধর্ষকের চাচা শাহিনুর আলম (৫০) ও রোববার সকালে তার দাদি মমিনা বেওয়াকে (৫৫) গ্রেফতার করা হয়েছে। পলাতক ধর্ষক আমজাদকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Bootstrap Image Preview