Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

শিক্ষার্থী মাত্র ২, শিক্ষক ৪

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২১ নভেম্বর ২০১৯, ০৭:১৩ PM
আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৯, ০৭:১৩ PM

bdmorning Image Preview


ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার পণ্ডিতপুর কমিউনিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এবার প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় (পিইসি) অংশগ্রহণ করছে মাত্র দুজন পরীক্ষার্থী। অথচ ওই বিদ্যালয়ে চারজন শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার নান্দাইল রোড উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গেলে এ ধরনের তথ্য পাওয়া গেছে।

জানা যায়, ওই কেন্দ্রে ২২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে মোট ৫৭৩ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছে। তার মধ্যে প্রত্যেক বিদ্যালয় থেকে সর্বনিম্ম ২০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করলেও পণ্ডিতপুর বিদ্যালয় থেকে দুজন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করায় চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো. আমিনুল হক জানান, তাঁর বিদ্যালয় থেকে মোট তিনজন পিইসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা ছিল। তাদের মধ্যে অসুস্থ্যতার কারণে তুহিন ইবনে তাহের নামে এক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেনি। এ ছাড়া খোকন মিয়া ও মোছা. নারগিছ নামে দুজন পরীক্ষা দিচ্ছে।

তিনি জানান, গত প্রায় পাঁচ বছর পার হলেও এখনো অজ্ঞাত কারণে চারজন শিক্ষক তাদের প্রাপ্য বেতন ভাতাদি পাচ্ছেন না। অথচ ব্যাংক একাউন্টে নিজ নিজ নামে প্রায় ৩৮ লাখ টাকা জমা রয়েছে। তাছাড়া প্রতিমাসে বেতন তো জমা হচ্ছেই। এই অবস্থায় এক ধরনের অস্বস্থিকর পরিবেশ তাছাড়া বিস্কুট ও উপবৃত্তি না দেওয়ায় শিক্ষার্থী কম থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

তাঁর দাবি, শিক্ষকরা নিয়মিত বেতন পেলে ও সরকারি সুযোগ-সুবিধা এলে এ ধরনের অবস্থা থাকবে না। তাঁর বিদ্যালয়ে অন্য শিক্ষকরা হলো শিপা আক্তার, আফজালা বেগম ও লুৎফুন্নেছা।

স্থানীয় সুত্র জানায়, গাংগাইল ইউনিয়নের পণ্ডিতপুর গ্রামে ২০০০ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) একটি পাকা ভবন নির্মাণ করে। স্থাপনাটির পাশের বাড়ির বাসিন্দা মো. মর্তুজ আলী বলেন, ওই বছর তিনি এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ে উপ-সহকারী প্রকৌশলী ছিলেন। সে সময় নিউ কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে একটি প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। তখন তার বাবা ৩৩ শতক জমি বিদ্যালয়ে লিখে দেন। ওই জমির ওপর ভবনটি নির্মাণ করা হয়। ২০০১ সালে সরকার পরিবর্তন হলে ওই প্রকল্প বন্ধ হয়ে যায়। পরে ভবনটি পরিত্যক্ত অবস্থাতেই পড়েছিল। এরপর বিশেষ পথ অবলম্বন করে বিদ্যালয়টিতে চারজন শিক্ষক নিয়মিত আসা যাওয়া করলেও কোনো শিক্ষার্থী ছিল না। এই অবস্থাতেই ২০১৪ সালের ২ এপ্রিল বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের তালিকা ভুক্ত হয় এবং ২০১৮ সালের ১২ জুন চার শিক্ষও জাতীয়করণের তালিকায় নাম উঠে। পরে তাদের নামে বকেয়া বেতন প্রায় ৩৮ লাখ টাকা নিজ নিজ নামে ব্যাংক হিসাবে জমা হয়।

এ ঘটনা নিয়ে এলাকার জনৈক এক ব্যক্তি আদালতে মামলা করে দিলে বেতন উত্তোলন বন্ধ হয়ে যায়। তবে প্রতিমাসে তাদের নামে বেতন ব্যাংক একাউন্টে জমা হচ্ছে। শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রতিজনের নামে প্রায় ২২ হাজার টাকা বেতন আসছে।

এ ব্যাপারে নান্দাইল উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী সিদ্দিক জানান, এ ধরনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। কেন দুই জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছে তা তলিয়ে দেখা হবে।

Bootstrap Image Preview