Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

কাশ্মীরের পরিস্থিতি 'স্বাভাবিক' দাবী করে বিপাকে অমিত শাহা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২১ নভেম্বর ২০১৯, ১১:১১ AM
আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৯, ১১:১১ AM

bdmorning Image Preview


সংবিধানে দেওয়া বিশেষ মর্যাদা বিলোপের সাড়ে তিন মাস পরেও কার্যত অবরুদ্ধ ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর। সেই আগস্ট থেকে রাস্তার মোড়ে বন্দুকের নল উঁচিয়ে টহল দিচ্ছে সেনা ও আধাসেনা বাহিনী। মোবাইল, ইন্টারনেট ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় জারি রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। দোকানপাট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। এরই মাঝে বুধবার সংসদে দাঁড়িয়ে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাবি করলেন, কাশ্মীর স্বাভাবিক হয়ে গেছে!  

আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, শীতকালীন অধিবেশনের তৃতীয় দিনে প্রশ্নোত্তরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পালা আসতেই কাশ্মীর নিয়ে বিরোধীদের প্রশ্নবাণের মুখে পড়েন অমিত শাহ ও তার প্রতিমন্ত্রীরা। তখন অমিত দাবি করেন, ‘‘উপত্যকার পরিস্থিতি এখন শান্ত। প্রায় স্বাভাবিক হয়ে এসেছে।’’

তা হলে কেন আটক রাজনৈতিক নেতাদের ছাড়া হচ্ছে না?- অবশ্য এই প্রশ্নে নীরব কেন্দ্র। ভারতীয় রাজনীতিকেরা কাশ্মীরে যেতে না পারলেও কীভাবে বিদেশি প্রতিনিধি দল উপত্যকা ঘুরে আসছে তা নিয়েও বেকায়দার রয়েছে মোদি সরকার।

বিরোধীদের অভিযোগ, দায়সারাভাবে কেন্দ্র জবাবে জানিয়েছে ভারতীয় রাজনীতিকদের ওপরে হামলার সম্ভাবনা থাকায় তাদের কাশ্মীরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। আর বিদেশি প্রতিনিধিদের সফর নিয়ে প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষেণ রেড্ডি জানান, ‘‘জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদী সমস্যা কীভাবে ভারতে প্রভাব ফেলেছে তা দেখতে এসেছিলেন ওই বিদেশি প্রতিনিধিরা। এই ধরনের আদানপ্রদান অন্য রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করে।’’

কংগ্রেস নেতা গুলাম নবী আজাদ ইন্টারনেট কবে থেকে চালু হবে তা জানতে চান। স্পষ্ট কোনো দিনক্ষণ জানাতে পারেননি শাহ। আজাদের অভিযোগ, ইন্টারনেট না থাকায় সাধারণ মানুষের মতোই অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।  ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা।

জবাবে অমিত বলেন, ‘‘ইন্টারনেট সত্যিই প্রয়োজনীয়। কিন্তু মাঝে মধ্যে দেশের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিতে হয়। সুরক্ষা সম্পর্কিত সমস্ত বিষয় দেখেই ইন্টারনেট চালু করা হবে। কারণ ওই এলাকায় অস্থিতিশীল করতে ১৯৪৭ সাল থেকে পাকিস্তান সক্রিয় রয়েছে।’’

কাশ্মীর কতটা স্বাভাবিক তা প্রমাণে পরিসংখ্যান তুলে ধরেন, “৯৩ হাজার ২৪৭টি ল্যান্ডলাইন ও ৫৯ লাখ মোবাইল চালু হয়েছে। চাষিদের কাছ থেকে ৬ হাজার মেট্রিক টন ফসল কিনেছে নাফেড। পরীক্ষায় বসেছে ৯৯.৪৮ ভাগ পড়ুয়া।’’ অমিত শাহের পরিসংখ্যানের ফিরিস্তি শুনে গুলাম নবী আজাদ টিপ্পনী কাটেন, ‘‘সম্ভবত আপনার হাতে অন্য রাজ্যের রিপোর্ট এসেছে।’’

ক্ষুব্ধ শাহ কার্যত চ্যালেঞ্জের সুরে আজাদকে বলেন, ‘‘দরকারে আমাকে চ্যালেঞ্জ করুন। আমি জবাব দিতে প্রস্তুত।’’ আজাদ বলেন, ‘‘কিন্তু স্কুল-কলেজ তো সব বন্ধ।’’ তখন পিছু হটে বিব্রত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘সরকার বলছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। কেবল শিক্ষার মাপকাঠি দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক কি না তা বোঝা যায় না। মাথায় যা ঢুকে রয়েছে সেটাই মেনে চলা ঠিক নয়।’’

অতিরিক্ত বাহিনীর উপস্থিতি, মোবাইল-ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় গত সাড়ে তিন মাসে বড় মাপের বিক্ষোভ বা পুলিশের গুলিতে কোনো বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।

Bootstrap Image Preview