প্রায় শত বছরের হতদরিদ্র নারী রাবেয়া বেগম। দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে স্বাধীনতা যুদ্ধের আগেই স্বামী সব্বত আলী মারা যান। এরপর প্রায় ত্রিশ বছর আগে দুই ছেলে আজিজ ও মজিদকেও হারান তিনি। সহায় সম্বল বলতে স্বামীর রেখে যাওয়া ভিটেতে একটি কাঁচা বসত ঘর। বয়সের ভারে নূহ্য হয়ে পড়ায় কাজ করতে পারেন না।
রবিবার (১৭ নভেম্বর) দিবাগত রাতে অসহায় এই নারীর ঘর আগুনে পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এরপর থেকেই অঝোরে কেঁদে চলছেন তিনি। বৃদ্ধা রাবেয়ার বুক ফাঁটা আর্তনাদে চোখের পানি ঝড়ছে প্রতিবেশীদেরও।
রাবেয়া বেগম গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের মাওনা উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত সব্বত আলীর স্ত্রী।
রাবেয়া জানান, স্বামী ও দুই ছেলেকে হারিয়ে একমাত্র মেয়েকে নিয়ে স্বামী রেখে যাওয়া এই ভিটেতে মাটির একটি খুপরী ঘরে দীর্ঘদিন ধরেই মেয়ে মাজেদা বেগমকে নিয়ে বসবাস করে আসছেন। অন্যান্য দিনের মতো এই ঘরে রবিবার রাতে সে ঘুমাতে যায়। মধ্য রাতে আগুনের লেলিহান শিখায় ঘুম ভাঙলে জীবন বাঁচাতে জানালা দিয়ে বাইরে আসেন। তাঁর চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই মাটির ঘরটি আগুনে পুড়ে যায়।
রাবেয়া আক্তারের মেয়ে মাজেদা খাতুন জানান, দীর্ঘদিন ধরেই তাদের এই শেষ আশ্রয় ভিটের জমি নিয়ে স্বজনদের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল। তাই ধারণা করা হচ্ছে এর জের ধরেই মায়ের ঘরে কেউ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। এ ঘটনায় শ্রীপুর থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে।
শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার রামপ্রসাদ পাল জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই মাটির ঘরটি পুড়ে যায়। তবে আগুনের কোনো সূত্রপাত এখনও জানা যায়নি।
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লিয়াকত আলী জানান, এই ঘটনায় যদি কেউ জড়িত থাকে তবে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।