রাত জেগে পাহারা
লালমনিরহাট ও রংপুরে রাত জেগে পেঁয়াজ ক্ষেত পাহারা দিচ্ছেন কৃষকরা। দাম বেড়ে যাওযায় ক্ষেত থেকে উঠতি পেঁয়াজ চুরি হয়ে যাওয়ার ভয়ে এই পদক্ষেপ। বিশেষ করে রংপুর ও লালমনিরহাটের তিস্তা, ঘাঘট ও বুড়ি তিস্তার চরে কৃষকরা রাত জেগে পেঁয়াজের ক্ষেত পাহারা দিচ্ছেন।
কৃষকরা জানিয়েছেন, অল্পকয়েকদিনের মধ্যেই নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসবে। নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসলেই দাম অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার হলদিবাড়ী গ্রামের কৃষক সফিকুল ইসলাম, হাসান আলী ও খোরশেদ আলম জানান, আগামী ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে তারা তাদের ক্ষেতের পেঁয়াজ তুলতে পারবেন। রোদে শুকিয়ে নেওয়ার পরপরই তারা তাদের উৎপাদিত পেঁয়াজ বাজারে বিক্রির জন্য তুলতে পারবেন।
রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার চর ইচলি, বিনবিনিয়া, চর গজঘণ্টার পেঁয়াজ চাষী আয়নাল, ঝন্টু ও আক্কাস মিয়া জানান, নদীর বালু চরে তারা প্রতি বছর আগাম পেঁয়াজ আবাদ করেন। কিন্তু হঠাৎ সারাদেশ পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় চর ইচলির আয়নাল মিয়ার ১ শতাংশ জমির পেঁয়াজ শুক্রবার রাতে চুরি হয়েছে। তাই পেঁয়াজ রক্ষায় রাত জেগে পাহারা বসিয়েছেন তারা।
আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের তিস্তার চরাঞ্চলের কৃষক জমির উদ্দিন বলেন, প্রতিবারের ন্যায় এবারও তিনি চরাঞ্চলে এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছেন। কিন্তু পেঁয়াজ চুরির মাত্রা অনেক বেড়ে গেছে। তাই পাহারা দেওয়া ছাড়া উপায় নেই।
চরাঞ্চলের জমিতে পলি পড়ায় জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পায় আর পেঁয়াজের ফলনও ভাল হয়। তিনি আরও বলেন, এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। প্রতি বিঘায় ৩০ মন থেকে ৩৫ মন পর্যন্ত পেঁয়াজ উৎপাদন হয়ে থাকে।
শুধু জমিরই নন, এখানকার অধিকাংশ কৃষক অধিক মুনাফার আশায় পেঁয়াজ চাষ করে থাকেন।
আদিতমারী উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা এম এম জামান শাহীন জানান, চরাঞ্চলের জমি পেঁয়াজ চাষের উপযোগী ও ফলনও ভাল হয়ে থাকে। তিনি আরও জানান, এ বছর এখানকার কৃষকরা পেঁয়াজ চাষে লাভবান হবেন।
রংপুর কৃষি বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, আমরা আশা করছি আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে নতুন পেঁয়াজ বাজারে উঠবে। নতুন পেঁয়াজ বাজারে এলেই দাম ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে চলে আসবে বলে তিনি দাবি করেন। তিনি বলেন, পেঁয়াজ রক্ষায় চরের কৃষকরা পাহারা বসিয়েছেন, এটা তারা করতেই পারে। আমরাও শুনেছি।