Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৪ বুধবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

নলকূপ স্থাপন শিখতে অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে ৩ দফা বিদেশ প্রশিক্ষণে কর্মকর্তারা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০১৯, ০৯:৫১ PM
আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৯, ১০:০১ PM

bdmorning Image Preview
প্রতীকী ছবি


চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে  স্থাপন করা হচ্ছে পানি শোধনাগার ও গভীর নলকূপ। পানি শোধনাগার ও নলকূপ স্থাপন শিখতে ৬০ লাখ ব্যয়ে তিন দফায় বিদেশে প্রশিক্ষণে যাবেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।  

এছাড়াও, এ প্রকল্পে নলকূপ স্থাপনের নকশা তৈরি ও কাজ তত্ত্বাবধায়নের (কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন) জন্য দুজন বাংলাদেশিকে ৭৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিতে হচ্ছে। ওই দুজন ১২ মাস কাজ করে এ টাকা নেবেন। আর পানি শোধনাগার স্থাপনের নকশা তৈরি ও কাজ তত্ত্বাবধানের জন্য দুজন বিদেশি এবং ১১ জন বাংলাদেশি পরামর্শককে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। এ কাজের জন্য সরকারকে খরচ করতে হবে সাত কোটি ৫১ লাখ টাকা।

‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে পানি শোধনাগার ও গভীর নলকূপ স্থাপন’ নামের প্রকল্পটি সম্প্রতি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৩২ কোটি ৮২ লাখ ১৫ হাজার টাকা। সরকারি অর্থায়নে ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুন মেয়াদে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

এতো টাকা ব্যয়ের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য (সচিব) সাহিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘আমি এখানে যোগ দেয়ার আগেই এ প্রকল্পের পিইসি সভা হয়েছে। তখনই ব্যয়ের যৌক্তিকতা যাচাই ও অনুমোদন দেয়া হয়। পিইসিতে একবার অনুমোদন দেয়া হলে আমার জায়গা থেকে সেই প্রকল্পের কোন খাতে কত টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, সেটা যাচাইয়ের সুযোগ থাকে না। তাই আমি শুধু প্রকল্পটি একনেক সভায় উত্থাপন করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘তবে আমার সময় যেসব প্রকল্প আসছে, সেগুলোতে বিদেশে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে কি-না, প্রয়োজন হলে কোন দেশ এজন্য ভালো, কত যাবে – এসব বিস্তারিত তথ্য খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে যাচাই করছি। অপ্রয়োজনে কোনো বিদেশ সফর রাখছি না।’

এ প্রকল্পে কেন বিদেশ সফর প্রয়োজন পড়ল, স্থানীয় পরামর্শকের এত টাকা বেতন কেন ধরা হলো – এসব প্রশ্নের উত্তর প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা বেজা ভালো দিতে পারবে বলেও মনে করেন সাহিন আহমেদ।

তিন ধাপে বিদেশে প্রশিক্ষণ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘এ ধরনের কাজে প্রশিক্ষণের জন্য বাইরে যেতে হবে কেন? কী শিখবে, যেটা জানার জন্য বিদেশে প্রশিক্ষণে যেতে হবে? এসব প্রশ্ন তো অবশ্যই তুলতে হবে। এটা আমাদের বোঝাতে হবে, না হলে এর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাবে।’

গভীর নলকূপ স্থাপনে পরামর্শক নিয়োগের বিষয়টিও প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে করেন তিনি।

তার মতে, ‘এখানে জবাবদিহিতার কোনো ব্যাপার নাই। কাউকে কোথাও জবাবদিহিতা করতে হচ্ছে না, এটার কোনো ব্যবস্থা নাই। ফলে এটা সংক্রামক ব্যাধির মতো হয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ, অন্যরা করছে পাস, সুতরাং আমিও করছি।’

এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া না হলে এমনটি চলতেই থাকবে বলে মনে করেন বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক এ লিড ইকোনমিস্ট।

Bootstrap Image Preview