বাংলাদেশের ইতিহাসে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে পেঁয়াজের দাম ২০০ টাকায় পৌঁছেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যের দাম অসহনীয় পর্যায়ে বেড়ে যাওয়ায় প্রচণ্ড ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সংসদ সদস্যরা। একই সঙ্গে যে সব অসাধু ব্যবসায়ী পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর কারসাজির সঙ্গে জড়িত তাদের ক্রসফায়ারে দেওয়ার দাবি করেছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে এ বিষয়ে কথা বলেন সংসদ সদস্যরা।
দেশের বাজারে পেঁয়াজের পর্যাপ্ত জোগান থাকলেও সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে উল্লেখ করে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
এ সময় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সাবেক শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্ন, সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ এবং বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ বক্তব্য দেন।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, পেঁয়াজের ঝাঁজ এখন সব জায়গায়। কেন পেঁয়াজের দাম বাড়ছে তা আমার কাছে বোধগম্য নয়। এতে আমাদের সুনাম ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। এ সময় তিনি বাণিজ্যমন্ত্রীকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, কিছু দিন আগে দেশে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল তাণ্ডব চালানোর কারণে পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু তাই বলে এত দাম। পত্রিকায় দেখে খুবই দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলতে হচ্ছে পেঁয়াজের দাম ২০০ টাকা। এটা কোনো দিন আমরা ভাবিনি।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, পেঁয়াজের দাম লাগামহীনভাবে বাড়ছে। তাই পেঁয়াজের মূল্য নিয়ন্ত্রণে জরুরি ভিত্তিতে অভিযান চালানোর আহ্বান জানান তিনি।
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘অনেক ফেনসিডিল কারবারি রাস্তাঘাটে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মরে যায়। পেঁয়াজের মূল্য যারা বাড়ায়, তারা একটি বন্দুকযুদ্ধে মরে যাক। তাহলে একটা উদাহরণ হবে।’
আ স ম ফিরোজ বলেন, দেশের বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণ পেঁয়াজ আছে। পেঁয়াজের দাম এত হওয়ার কোনো কারণ দেখি না। গতকালও পেঁয়াজের দাম ১৫০ টাকা কেজি ছিল, কিন্তু আজ পেঁয়াজের কেজি ২০০ টাকা হয়ে গেছে। এটাকে সরকারের বিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্র বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু সরকার দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে নেমেছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছে সরকার। তাই সব দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীরা এক হয়ে এ কাজ করছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি। এখানে অর্থমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আছেন নিশ্চয়ই প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে একটি পদক্ষেপ নেবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, ছোটবেলা আমরা যে রকম বিস্কুট দৌড় খেলতাম ঠিক সেভাবে এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় পেঁয়াজ নিয়ে বিভিন্ন রকম রসিকতা চলছে। আশা প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, সরকার দ্রুত এ ব্যাপারে একটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।