Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৪ বুধবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ১৫ জনকে বাঁচিয়ে প্রশংসায় ওসি মেহেদী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৩ নভেম্বর ২০১৯, ০৫:৪৯ PM
আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৯, ০৫:৫২ PM

bdmorning Image Preview


শরীয়তপুরের ডামুড্যা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মেহেদী হাসানের পানিতে নেমে খাদে পড়া বাসের যাত্রীদের উদ্ধার করার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অন্তত ১০ থেকে ১৫ জনকে পানির নিচ থেকে উদ্ধার করেছেন তিনি।

যাত্রীদের উদ্ধারের কয়েকটি ছবি ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। অনেকেই তার ভূয়সী প্রশংসা করছেন। তাকে নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন।

মনির হোসেন সাজিদ নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, স্যালুট, ডামুড্যা থানার ওসি মেহেদী হাসানকে। মঙ্গলবার সকালে শরীয়তপুরের ডামুড্যার খেজুরতলায় একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পানিতে পড়ে যায়। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে উদ্ধারকাজে নেমে পড়েন ডামুড্যা থানা ওসি মেহেদী হাসান। দেশপ্রেমিক দায়িত্বশীল এই পুলিশ কর্মকর্তার জন্য শুভ কামনা রইলো।

স্থানীয়রা জানান, দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে ওসি মেহেদী হাসান যেভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে যাত্রীদের উদ্ধার করেন তা অবিশ্বাস্য। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ময়লা পানিতে নামেন। এ বীরত্বের জন্য উপস্থিত হাজারো মানুষ তাকে এবং পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান।

এদিকে এ ঘটনার পর ওসি মেহেদী হাসানের পানিতে নেমে দুর্ঘটনাকবলিত যাত্রীদের উদ্ধারের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়ে। ফেসবুকে অনেকেই এ কাজের জন্য তার পদোন্নতি ও পুলিশের পক্ষ থেকে পুরস্কারের ব্যবস্থা করার দাবি করছেন।

জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকাল সোয়া ৯টার দিকে ডামুড্যা-শরীয়তপুর সড়কের ডামুড্যা উপজেলার খেজুরতলা এলাকায় একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পার্শ্ববর্তী খাদে পড়ে যায়। বাসটিতে অন্তত ৩০ জন যাত্রী ছিল। উপস্থিত লোকজন যখন দাঁড়িয়ে দুর্ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করছিলেন তখন ডামুড্যা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মেহেদী হাসান জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ময়লা খাদের পানিতে লাফিয়ে পড়েন। তার লাফিয়ে পড়া দেখে স্থানীয় লোকজনও লাফিয়ে পড়েন। গাড়ির জানালার গ্লাসগুলো ভেঙে দেন। যাতে সহজে গাড়ির ভেতরে থাকা যাত্রীরা বেরিয়ে আসতে পারেন। গাড়ির ভেতর আটকা পড়া ছয় নারীসহ ১০ থেকে ১৫ জন যাত্রীকে উদ্ধার করেন ওসি নিজেই।

পরবর্তীতে স্থানীয়রা উদ্ধার অভিযানে অংশ নেন। সংবাদ পেয়ে একে একে ছুটে আসে ফায়ার সার্ভিসসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় কামরুজ্জামান মাহমুদ মুন্সী (৪৫) ও ইয়াকুব পাইককে (৮০) উদ্ধার করা গেলেও বাঁচানো যায়নি। এ দুর্ঘটনায় আহত হন ছয় নারীসহ অন্তত ২৫ জন যাত্রী।

ডামুড্যা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মেহেদী হাসান বলেন, যারা দুর্ঘটানাকবলিত হয়েছে তারাতো মানুষ। মানুষতো মানুষের জন্য। সেই চিন্তা করেই ঝাঁপিয়ে পড়ি যাত্রীদের বাঁচাতে। এটাতো আমার কর্তব্য ছিল।

এ ব্যাপারে শরীয়তপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গোসাইরহাট সার্কেল) মো. মোহাইমিনুল ইসলাম বলেন, যাত্রীদের জীবন বাঁচাতে আমাদের মেহেদী হাসান জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যা করেছেন তা পুলিশ বিভাগের জন্য সত্যিই প্রশংসনীয়।

বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন ডামুড্যা উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নান্নু মৃধা বলেন, গাড়িটি খাদে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের ওসি মেহেদী হাসান দ্রুত লাফিয়ে পড়েন পানিতে। তিনি প্রথমে গাড়ির জানালার গ্লাসগুলো ভেঙে দেন। যাতে করে ভেতরে আটকেপড়া যাত্রীরা সহজে বের হতে পারে। পানির নিচে গাড়ির ভেতর থেকে বের করে আনেন অনেক যাত্রীকে। তার সাহসী পদক্ষেপের কারণে রক্ষা পায় বহু প্রাণ।

Bootstrap Image Preview