Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

গভীর রাতে নুসরাতদের বাড়িতে অচেনা লোক, অতঃপর...

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৬ অক্টোবর ২০১৯, ০৩:১৯ PM
আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৯, ০৩:১৯ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির বাড়ির সামনে থেকে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। 

শুক্রবার দিনগত রাত ২টার দিকে ওই ব্যক্তিকে আটক করে সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশ।

আটক ব্যক্তির নাম জসিম উদ্দিন। তার বাড়ি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার কুতুবখালী গ্রামে।

অসংলগ্ন কথাবার্তা বলার কারণে নুসরাতের বাড়ির সামনে থেকে তাকে আটক করা হয় বলে ফেনী জেলা পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, রাতে সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশা নিয়ে নুসরাতের বাড়িতে যান জসিম উদ্দিন। কিন্তু তার কথাবার্তায় অসংলগ্নতা ধরা পড়ে। এ জন্য তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়া হয়।

তিনি আরও বলেন, জসিম উদ্দিন মেন্টাল ডিসঅর্ডার (অপ্রকৃতিস্থ) বলে তার ভাই জানিয়েছেন। তার ভাই চট্টগ্রাম থেকে এলে জসিমকে তুলে দেয়া হবে। আর অটোরিকশার চালককে নুসরাতের বড় ভাই ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের জিম্মায় দেয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মামুনুর রশিদ বৃহস্পতিবার নুসরাত হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে মামলার প্রধান আসামি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলাসহ ১৬ জনের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। এ ছাড়া প্রত্যেক আসামিকে ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত।

সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন নুসরাত জাহান রাফি। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে তাকে যৌন হয়রানি করেন।

এ ঘটনায় রাফির মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে রাফির পরিবারকে হুমকি দেয়া হয়।

৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথম পত্রের পরীক্ষা দিতে ওই মাদ্রাসার কেন্দ্রে যায় রাফি। এ সময় বোরকা পরিহিত কয়েকজন তাকে পাশের বহুতল ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়। রাজি না হলে রাফির গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয় তারা।

এতে রাফির পুরো শরীর দগ্ধ হয়। ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। এ ঘটনায় নুসরাতের বড় ভাই বাদী হয়ে ৮ এপ্রিল সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন।

রাফি হত্যা মামলায় পুলিশ ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাসহ ২১ জনকে বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করে। পরে ২৯ মে ১৬ জনকে আসামি করে ৮০৮ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করে পিবিআই।

চার্জশিটভুক্ত ১৬ আসামির মধ্যে ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

৩০ মে মামলাটি ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। ১০ জুন আদালত মামলাটি আমলে নিলে শুনানি শুরু হয়। ২০ জুন অভিযুক্ত ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন বিচারিক আদালত।

২৭ ও ৩০ জুন মামলার বাদী মাহমুদুল হাসান নোমানকে জেরার মধ্য দিয়ে বিচারকাজ শুরু হয়। এরপর ৯২ সাক্ষীর মধ্যে ৮৭ জন সাক্ষ্য দেন আদালতে।

 

Bootstrap Image Preview