Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

খাবার দেয়নি ছেলেরা, কুঁড়েঘরে থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন মা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩ অক্টোবর ২০১৯, ০৯:২৩ PM
আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৯, ০৯:২৩ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলায় দরজা-জানালাবিহীন জরাজীর্ণ কুঁড়েঘর থেকে জহুরা খাতুন নামে ৯০ বছরের এক বৃদ্ধাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

সেই সঙ্গে মায়ের প্রতি চরম অবহেলার অভিযোগে বৃদ্ধার দুই ছেলেকে আটক করে পুলিশ। মায়ের প্রতি আর অবহেলা হবে না এবং মাকে নতুন ঘর করে দেয়া হবে এমন প্রতিশ্রুতিতে ছাড়া পান দুই ছেলে। 

এলাকাবাসী বলছেন, পুরাতন একটি ঝুপড়ি ঘর। মাটির মেঝে। ঘরের দরজা-জানালা কিছুই নেই। ঘরে একটি কাঠের চৌকি। বসবাসের অনুপযোগী এই ঘরেই দীর্ঘদিন ধরে থাকছেন বৃদ্ধা জহুরা খাতুন। অথচ পাশেই তার দুই ছেলে আবুল হাসেম ও আব্দুস সালাম স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বড় টিনের ঘরে থাকছেন।

জানা যায়, তাড়াইল উপজেলার পংপাচিয়া গ্রামের জবেদ আলী ভূইয়ার স্ত্রী জহুরা খাতুন বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে অনেকদিন ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। দরজা-জানালাবিহীন জরাজীর্ণ ঘরে থাকছেন বছরের পর বছর। খাবার জোটে না, চিকিৎসা খরচ মিলে না। ঘরের ভেতরেই সারতে হয় প্রকৃতির কাজ।

সামর্থ্যবান দুই ছেলে আব্দুস সালাম আর আবুল হাশেম নিজেদের সংসার নিয়ে ব্যস্ত। প্রতিবেশীর কাছ থেকে খবর পেয়ে সোমবার রাতে বৃদ্ধার ঘরে হাজির হয় পুলিশ। তাড়াইল থানা পুলিশের এসআই মাসুদ আনোয়ারের নেতৃত্বে পুলিশ গিয়ে মানবেতর অবস্থায় জহুরা খাতুনকে দেখতে পায়। পরে উদ্ধার করা হয় জহুরাকে। আটক করা হয় তার দুই ছেলেকে।

তাড়াইল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুজিবুর রহমান বলেন, একজন বৃদ্ধা মাকে জরাজীর্ণ ঘরে ফেলে রেখেছে ছেলেরা। খবর পাওয়ার পর সেখানে যায় পুলিশ। ওই ঘরটি বসবাসের অনুপযোগী। ঠিকমতো বৃদ্ধা মাকে খেতে দিতো না ছেলেরা। দীর্ঘদিন এ অবস্থায় থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছেন জহুরা। মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে দুই ছেলেকে আটক করা হয়।

তিনি বলেন, থানায় আনার পর দুই ছেলে তাদের ভুল বুঝতে পারে। মায়ের জন্য নতুন ঘর ও অন্যান্য আসবাবপত্র কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দুই ছেলে। ঘরের টিনসহ অন্যান্য আসবাবপত্র কিনে দেবেন তারা। বৃদ্ধা মা চান না ছেলেদের কোনো বিপদ হোক। তাই কাগজে স্বাক্ষর রেখে ছেলেদের কাছে মাকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।

পুলিশের এমন উদ্যোগে দুই ছেলে তাদের ভুল বুঝতে পেরে মায়ের পা ধরে ক্ষমা চেয়েছেন। মাকে নতুন ঘর তৈরি করে দেয়াসহ ভরণপোষণের ত্রুটি হবে না মর্মে মুচলেকা দিয়েছেন তারা। পুলিশ আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানালে বাধা দেন মমতাময়ী মা। বলেন, ছেলেরা তাদের ভুল বুঝতে পেরেছে। আমি তাদের ক্ষমা করে দিয়েছি। এখন থেকে ছেলেদের সঙ্গেই থাকব আমি।

মায়ের প্রতি আবারও কোনো অবিচার হলে দুই ছেলে ও তাদের স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ওসি মো. মুজিবুর রহমান।

Bootstrap Image Preview