টাঙ্গাইলে ঘুষের টাকাসহ কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কার্যালয়ের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মারুফ ওরফে ফেরদৌসকে ঘুষের ১৫ হাজার টাকাসহ আটক করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে দুদকের টাঙ্গাইলের উপ-পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
আটককৃত এই কর্মকর্তা হলেন টাঙ্গাইলের বিভাগীয় কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অফিসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মারুফ। মারুফ রাজশাহী জেলার রাজপাড়া উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের মোসলেম আলীর ছেলে। এ সময় তার কাছ থেকে ঘুষের ১৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার কয়ড়া গ্রামের মুক্তা ফুড প্রডাক্টসের মালিক গোবিন্দ কিশোর পাল ভ্যাট দেওয়ার জন্য টাঙ্গাইল কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কার্যালয়ে যান।
এ সময় কার্যালয়ের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মারুফের সাথে গোবিন্দ কিশোরের আলাপ হয়। নতুন ভ্যাট (১৩ ডিজিটের) রেজিস্ট্রেশন করার জন্য মারুফ গোবিন্দের কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন, এক পর্যায়ে তা ১৫ হাজার টাকায় সমঝোতা হয়।
এ বিষয়ে গোবিন্দ পাল দুদক অফিসে লিখিত অভিযোগ দেন। পরে দুদকের একটি দল মারুফকে ঘুষ দেওয়ার জন্য রাখা টাকার নম্বরগুলো টুকে রাখেন। পরে মঙ্গলবার রাজস্ব কর্মকর্তার অফিসে গিয়ে ওই ব্যক্তি ১৫ হাজার টাকা মারুফকে দেন। এরপর দুদকের টাঙ্গাইল সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান টাঙ্গাইল কাস্টম, এক্সাইজ ও ভাট কার্যালয়ের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তার অফিসে গিয়ে ঘুষের টাকার বিষয়ে আব্দুল্লাহ আল মারুফকে চ্যালেঞ্জ করেন।
এ সময় ঘুষ হিসেবে নেওয়া টাকার নম্বর বলার পর সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মারুফ তার কাছে থাকা টাকা বের করে দেন। ওই টাকায় গোবিন্দ কিশোর পালের দেওয়া নম্বর মিলিয়ে ১৫টি এক হাজার টাকার নোটের ১৫ হাজার টাকা জব্দ ও সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করে দুদক কার্যালয়ে নিয়ে আসেন।
এ ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয় টাঙ্গাইলের উপ-পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “ঘুষের বিষয়ে আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন গৌবিন্দ কিশোর পাল। তার অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার ওঁৎ পেতে থাকেন দুদক সদস্যরা। পরে ঘুষের নগদ ১৫ হাজার টাকাসহ মারুফকে আটক করা হয়। এ ব্যাপারে দুদকের আইনে মামলা দায়ের করা হবে। যদি এর সাথে কেউ আরো জড়িত থাকে তাহলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে।”
এ ব্যাপারে অভিযোগকারী গৌবিন্দ কিশোর পাল বলেন, আমার একটি কুটির শিল্প আছে। আমি ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে ভ্যাট নিবন্ধন করেছি।
২০১৬ সালের আমার এই প্রতিষ্ঠান শুরু হয়। এরপর থেকেই আমি প্রতিনিয়তই সরকারকে ভ্যাট দিয়ে আসছি। আমি বিগত কয়েকদিন আগে ভ্যাট দিলে গেলে আমাকে জানানো হয় সরকার ১৩ ডিজিটের নতুন ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন চালু করেছে। এটি করতে আমার কাছে ২০ হাজার টাকা ঘুষি দাবি করে আব্দুল্লাহ আল মারুফ। এক পর্যায়ে পরে তা ১৫ হাজার টাকায় সমঝোতা হয়। বিষয়টি আমি দুদক অফিসে গিয়ে বিস্তারিত জানাই।