Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

২২ প্রকল্পে অর্থ ছাড়ছে না চীন

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২১ অক্টোবর ২০১৯, ০৯:৫১ AM
আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৯, ০৯:৫১ AM

bdmorning Image Preview


চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ঢাকা সফরে এসেছিলেন ২০১৬ সালের অক্টোবর। তখন বিভিন্ন চুক্তির মাধ্যমে ২৭ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। অথচ গত তিন বছরে কেবল পাঁচ প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য ঋণচুক্তি সই হয়েছে। অর্থ দিয়েছে ৯৬ কোটি ডলার (৮ হাজার ১৬০ কোটি টাকা), যা প্রতিশ্রুত অর্থায়নের ৫ শতাংশেরও কম। তবে এক বছরের ব্যবধানে দেশে চীনের বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে ১০ গুণের বেশি। ২০১৭ সালে তা ৯ কোটি ডলারের মতো থাকলেও পরের বছরই উন্নীত হয় ১০৩ কোটি ডলারে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, শি জিনপিংয়ের ঢাকা সফরকালে ২৭টি প্রকল্পের মধ্যে ১৬টি ছিল সমঝোতা স্মারক এবং ১১টি ঋণ ও অর্থায়ন বিষয়ে বাণিজ্যিক চুক্তি। এগুলোর কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০২০ সালের মধ্যে। সে হিসাবে হাতে সময় মাত্র ১৪ মাস। ধীরগতির এসব প্রকল্প কীভাবে সুরাহা করা যায়, তা ঠিক করতে গত জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেইজিং সফরকালে দুদেশের কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠন হয় যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ (জেডব্লিউজি)। কিন্তু এর পরও তেমন অগ্রগতি নেই।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ, কর্ণফুলী নদীতে টানেল নির্মাণ, মহেশখালী থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত জ্বালানি তেলের পাইপলাইন ও ‘মুরিং’ স্থাপন, জাতীয় তথ্যপ্রযুক্তির নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে তৃতীয় ধাপের উন্নয়ন এবং টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক উন্নয়ন- এ পাঁচ প্রকল্পের জন্য ৪২৬ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণচুক্তি সই হয়েছে।

এর মধ্যে দেওয়া হয়েছে ৯৬ কোটি ডলার-পদ্মার রেল সংযোগের জন্য ৫৩ কোটি, কর্ণফুলী নদীতে টানেল নির্মাণের জন্য ১৯ কোটি, জ্বালানি তেলের পাইপলাইনের জন্য ৮ কোটি, তথ্যপ্রযুক্তির নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে তৃতীয় ধাপের উন্নয়নে ১২ কোটি ও টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক উন্নয়নে ৪ কোটি ডলার। এর বাইরে বাকি ২২ প্রকল্প- যোগাযোগ অবকাঠামোর সাতটি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ে ছয়টি এবং স্থানীয় সরকার, তথ্য এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিগুলোর কোনো অগ্রগতি নেই। তবে চলতি মাসে অনুষ্ঠেয় জেডব্লিউজির বৈঠকে অন্তত ১০টি প্রকল্প অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়নের তাগিদ দেওয়া হবে বলে ইআরডির উচ্চপর্যায় থেকে জানা গেছে। এর মধ্যে ঢাকা-আশুলিয়া উড়ালসড়ক, ছয়টি পূর্ণাঙ্গ টিভি কেন্দ্র স্থাপন ও বিজেএমসির আওতায় থাকা সরকারি পাটকলগুলোর আধুনিকায়ন অন্যতম।

চুক্তি বাস্তবায়নে বিলম্ব হওয়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশে প্রকল্প অনুমোদনের জন্য বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটির মতামত নেওয়া বাধ্যতামূলক। অন্যদিকে চীন যদি প্রকল্পসংশ্লিষ্ট নথির কোনো বিষয় বুঝতে না পারে, তা নতুন করে জানাতে বাংলাদেশের কাছে ফেরত পাঠায়, তখন আবার দেশের কমিটির মতামত নিতে হয়। এর ফলে কাজের দীর্ঘসূত্রিতা দেখা দেয়। পাশাপাশি এ ধরনের প্রকল্পে কাজ পেতে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো দুদেশেই তদবির চালায়, যা দীর্ঘসূত্রতার অন্যতম কারণ। সব শেষে পুরো প্রক্রিয়া শেষে অর্থ ছাড়ের ক্ষেত্রেও চীন সময় নিয়ে থাকে।

এ বিষয়ে তত্ত্ববধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের জন্য কোনো বরাদ্দ না থাকলেও চীন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তাই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে বিলম্ব হচ্ছে। এ ছাড়া চীনের প্রকল্পের ঠিকাদার নিয়েও অভিযোগ আছে। ভালো ঠিকাদারদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হয় না। এর বাইরে বাংলাদেশে প্রকল্প নির্বাচন ও প্রক্রিয়াকরণেও সমস্যা আছে।’

Bootstrap Image Preview