Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

গণধর্ষণ: নিজ গ্রামে দাফনটাও হলো না পপির!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৯ অক্টোবর ২০১৯, ০৪:১৭ PM
আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৯, ০৪:১৭ PM

bdmorning Image Preview
প্রতীকী ছবি


সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার তেতলী (চেরাগী) গ্রামে বড় বোনের শ্বশুড় বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া বিশ্বনাথ উপজেলার লালটেক গ্রামের পপি বেগম (২১) গত ৯ অক্টোবর দিবাগত রাতে গণধর্ষণের শিকার হয়। 

ওই রাতে প্রকৃতিরর ডাকে সারা দিতে ঘর থেকে বাইরে বের হওয়ার পর সেখানে উৎপেতে থাকা দুই ব্যক্তি পপিকে জোরপূর্বক অন্যত্র উঠিয়ে নিয়ে যায়। এরপর পপির মুখ, হাত ও পা বেঁধে মারধর করে রাতভর পালাক্রমে গণধর্ষণ করে ভোররাতে পুনঃরায় তাকে পপিকে তার বোনের বাড়িতে ফেলে রেখে যায় ওই দুই ব্যক্তি।

১০ অক্টোবর পপি নিজ বাড়িতে ফিরে এসে গণধর্ষণের শিকার হওয়ার ফলে লোকলজ্জার ভয়ে পরিবারের সদস্যদের অজান্তে দুপুর বেলা আত্মহত্যা করে। ওই দিন বিকেলে নিজ বসতঘর থেকে পপির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

আত্মহননের পর যথারীতি নিজের পারিবারিক কবরস্থানে দাফনের কথা থাকলেও গ্রাম্য মোড়ল ও স্থানীয় কুসংস্কারের কারণে নিজের জন্মভূমিতে দাফনের সুযোগ পায়নি পপি। ফলে সিলেট নগরীর মানিকপীর টিলায় তার লাশ দাফন করা হয়।

একবিংশ শতাব্দীর এ যুগে আত্মহননকারী দাফনের পর ভুত হয়ে স্থানীয়দের জ্বালাতন করবে এ বিশ্বাসে পপির লাশ স্থানীয়ভাবে দাফন করা সম্ভব হয়নি এমনটাই পুরো এলাকা ঘুরে জানা গেছে। পুরো গ্রামবাসী এ ব্যাপারে অবগত ঠিকই কিন্তু মুখ খুলতে সম্পূর্ণ নারাজ। এমনকি নিহত পপির পরিবারও।

আত্মহননকারী পপির ছোট বোন সাংবাদিকদের জানান, আত্মহত্যার পর ময়নাতদন্তের মাধ্যমে আমার বোনের লাশ পরিবারের লোকজন মানিক পীর টিলায় দাফন করেন।

গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে পপির লাশ কেন দাফন করা হয়নি এ প্রশ্নের জবাবে সে জানায়, দাফনের পর আত্মহননকারী ভুত হয়ে স্থানীয়দের জ্বালাতন করবে এমন ভয়ে গ্রামে তার লাশ দাফন করা হয়নি।

অন্যদিকে পপির বড় ভাই জানান, দাফন কাপনের টাকা না থাকায় পারিবারিক সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই তার বোনকে সিলেটের মানিকপীর টিলায় দাফন করা হয়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আলতাব আলী বলেন, লোকমুখে পপির আত্মহত্যার খবর পেয়েছি। তবে গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে কেন পপির লাশ দাফন করা সম্ভব হয়নি এ ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। বিস্তারিত স্থানীয় মুরব্বীয়ানরা অবগত রয়েছেন বলে তিনি জানান।

এ ব্যাপারে বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বর্ণালী পাল সাংবাদিকদের বলেন, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। বিষয়টি আজকে আমি শুনেছি। তবে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে আমাদেরকে এখনো জানানো হয়নি।

যদি দাফনের পূর্বে জানানো হতো তাহলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা যেত। তবুও থানার অফিসার ইনচার্জকে আমি বলেছি, ওই পরিবারকে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য।

 

Bootstrap Image Preview