Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

সন্ত্রাস রুখে দেওয়ার শপথ নিলেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৬ অক্টোবর ২০১৯, ০৭:০৬ PM
আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৯, ০৭:০৬ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ক্যাম্পাসে সকল প্রকার সন্ত্রাস রুখে দেওয়ার শপথ নিলেন শিক্ষার্থীরা। এর মধ্য দিয়েই শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের আপাতত সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়েছে।  

আজ বুধবার বেলা সোয়া ১টার দিকে বুয়েট মিলনায়তনে এই শপথ অনুষ্ঠান হয়। এতে বুয়েটের উপাচার্য, বিভিন্ন অনুষদের ডিন ও হলের প্রভোস্টরা শপথ নেন। তবে শিক্ষকেরা মিলনায়তনে উপস্থিত থাকলেও শপথে অংশ নেননি।

এর আগে শপথ নেওয়ার জন্য বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা মিলনায়তনে জড়ো হতে থাকেন। পরে বেলা সোয়া ১টার দিকে শপথ অনুষ্ঠান হয়।

শপথ শুরুর আগে বুয়েটের নিহত শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর শপথ পড়ান বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাফিয়া রিজওয়ানা।

শপথে বলা হয়, ‘আমি প্রতিজ্ঞা করছি যে, আজ এই মুহূর্ত থেকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার কল্যাণ ও নিরাপত্তার নিমিত্তে আমার ওপর অর্পিত ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক, নৈতিক ও মানবিক সব প্রকার দায়িত্ব সর্বোচ্চ সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করবো।

এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় আমার জ্ঞাতসারে হওয়া প্রত্যেক অন্যায়, অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে আমি সর্বদা সোচ্চার থাকবো। আমি আরও প্রতিজ্ঞা করছি যে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সব প্রকার সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উত্থানকে আমরা সম্মিলিতভাবে রুখে দেবো। নৈতিকতার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ সব ধরনের বৈষম্যমূলক অপসংস্কৃতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহার আমরা সমূলে উৎপাটিত করবো। এই আঙ্গিনায় আর যেন কোনো নিষ্পাপ প্রাণ ঝড়ে না যায়।

আর কোনো নিরাপরাধ শিক্ষার্থী যেন অত্যাচারের শিকার না হয়। তা আমরা সবাই মিলে নিশ্চিত করবো ৷’

বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার পর থেকেই তার বিচারসহ ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। গত ৭ অক্টোবর থেকে চলা এ আন্দোলন আজকের গণশপথের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটলো। তবে মাঠের আন্দোলনের ইতি ঘটলেও প্রশাসনের দেওয়া আশ্বাস এবং প্রতিশ্রুতি পর্যবেক্ষণ করবেন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

শপথ গ্রহণ শেষে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সায়েম বলেন, ‘ধন্যবাদ জানাতে চাই বুয়েট প্রশাসনকে। আমাদের দাবিগুলো মেনে নিয়ে বাস্তবায়নের দিকে যাওয়ার জন্য। আজকে শপথের মাধ্যমে মাঠের আন্দোলন শেষ হলেও ১০ দফা দাবির বিষয়ে আমাদের পর্যবেক্ষেণ চলবে।

শপথ অনুষ্ঠান শেষে উপাচার্য অধ্যাপক ড.সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর অভিযুক্তদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, চার্জশিট হওয়ার পর অভিযুক্তদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার না করা পর্যন্ত কোনো অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নেবেন না তারা। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে সময় নষ্ট না করার আহ্বান জানান উপাচার্য।

প্রসঙ্গত, গত ৬ অক্টোবর রাত তিনটার দিকে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী।

এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে পর দিন চকবাজার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন আবরারের বাবা। এ মামলার এজাহারভুক্ত ১৯ আসামিসহ এ পর্যন্ত ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এদিকে আবরার হত্যার পর থেকেই ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের মুখে ইতিমধ্যে দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বুয়েট প্রশাসন। এসব দাবি বাস্তবায়নের বিষয়ে নোটিশও প্রদান করা হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটেই শিক্ষার্থীরা মাঠের আন্দোলনে ইতি টানার সিদ্ধান্ত নেয়।

Bootstrap Image Preview