Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

ক্ষমতায় টিকে থাকতে বিরোধীদের সাথে আলোচনায় ইমরান

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৩ অক্টোবর ২০১৯, ১০:২৮ AM
আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৯, ১০:২৯ AM

bdmorning Image Preview


পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে অপসারণের দাবিতে এবার একত্রিত হয়ে মাঠে নেমেছে দেশটির অধিকাংশ বিরোধী রাজনৈতিক দল। সেক্ষেত্রে বর্তমান সরকারকে হটাতে খুব শিগগিরই জোটবদ্ধভাবে একটি বড় ধরনের কর্মসূচি ঘোষণার পথে হাঁটছে তারা। যা কারণে কার্যত অস্বস্তিতে ভুগছেন ইমরান খান বলে দাবি বিশ্লেষকদের। 

যার অংশ হিসেবে সরকার পতনের দাবিতে আন্দোলনরত জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের (জেইউআই-এফ) প্রধান মাওলানা ফজলুর রহমানের সঙ্গে আলোচনার ইঙ্গিত দিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী। এমনকি জমিয়তের সঙ্গে আলোচনার দরজা এখনো খোলা রয়েছে বলেও জানান তিনি। গত শুক্রবার (১১ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী ইমরান তার মন্ত্রীসভার এক বৈঠকে এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে দাবি ‘জিয়ো নিউজে’র।

এ দিকে শনিবার (১২ অক্টোবর) সূত্রের বরাতে গণমাধ্যমটি জানায়, মন্ত্রীসভার এবারের বৈঠকে ইমরানের সাম্প্রতিক চীন সফর এবং মধ্যপ্রাচ্যের তেল সমৃদ্ধ দেশ ইরান-সৌদি আরব মধ্যকার আসন্ন মধ্যস্থতার বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকের শেষ দিকে মন্ত্রীসভার সদস্যরা আগামী ২৭ অক্টোবর ইসলামাবাদ অভিমুখে আজাদী মার্চের বিষয়ে পাক প্রধানমন্ত্রীর মনোভাব জানতে চান।

বিরোধী দল জমিয়তের সঙ্গে আলোচনার জন্য আদৌ কোনো কমিটি গঠন করা হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইমরান খান বলেন, ‘এখনই এমন কোনো কমিটি বানানোর প্রয়োজন নেই। তবে আলোচনার দরজা সব সময়ই খোলা আছে। সেক্ষেত্রে কেউ যদি আলোচনায় বসতে আগ্রহী হয়, তাহলে আমরা তাতে বাধা দেব না।’

অপর দিকে বিশ্লেষকদের মতে, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের এসব পদক্ষেপ কেবলই নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার অন্যতম এক পাঁয়তারা। কেননা তিনি খুব ভালোভাবেই জানেন বিরোধীদের এই কার্যক্রম যদি আরও বেশি চলতে থাকে তাহলে অচিরেই তা এক ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। এমনকি এর ফলে অন্য সব দলগুলোই এক রকম শক্তিশালী হয়ে যাবে। তাই এই আলোচনায় বসার কথা বলে তিনি বিষয়টি হাল্কা করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

এর আগে দেশটির কেন্দ্রীয় ধর্মমন্ত্রী পীর নুরুল হককে জমিয়ত নেতাদের সঙ্গে আলোচনার দায়িত্ব দেওয়া হয় বলে কিছুদিন এমন খবর গণমাধ্যমে ছড়িয়েছিল। যদিও পরে তিনি তা সরাসরি অস্বীকার করে দেন।

অপর দিকে সরকারের সঙ্গে আর কোনো আলোচনা হবে না বলে এরই মধ্যে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মাওলানা ফজলুর রহমান। এমনকি সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত এ লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

গত ৫ অক্টোবর পেসওয়ারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন আজাদি মার্চকে যুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করে মাওলানা ফজলুর রহমান বলেছেন, ‘গোটা পাকিস্তানই আমাদের যুদ্ধক্ষেত্র। এখানে পরাজয়ের কোনো মানে নেই। ইমরানকে হঠানোই আমাদের এক মাত্র লক্ষ্য।’

দেশবাসীর উদ্দেশে জমিয়তের প্রধান ঘোষণা দেন, আগামী ২৭ অক্টোবর সরকারের বিরুদ্ধে ইসলামাবাদের উদ্দেশ্যে লংমার্চ করা হবে। সেখানে দলের পরিকল্পনা রয়েছে একটি বিশাল সভার আয়োজন করার। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কৌশল কখনোই স্থির থাকবে না। আমরা যে কোনো পরিস্থিতি সামলাতে পরিবর্তন আনতে পারি।’

ফজলুর রহমান জোর দিয়ে বলেছেন, ‘আমাদের এ পদযাত্রায় যোগ দিতে সারা দেশ থেকে হাজার হাজার লোকজন এরই মধ্যে বন্যার মতো আসতে শুরু করেছে। যাতে দেশের ক্ষমতায় বসে থাকা ভুয়া শাসকরা খড়ের মতো ডুবে যাবে।’

মূলত এর পরপরই বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তিনি বলেছেন, ‘পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) এবং পাকিস্তান মুসলিম লীগের (পিএমএল-এন) নির্দেশে উলামায়ে ইসলাম ফজল (জেইউআই-এফ) প্রধান মাওলানা ফজলুর রহমান আমাদের বিরুদ্ধে ধর্মকে পুঁজি করে রাজনীতি করতে চাইছে। যা জনগণ কোনোদিনই মেনে নেবে না।’

উল্লেখ্য, আগামী ২৭ অক্টোবর রাজধানী ইসলামাবাদ অভিমুখে এক বিশাল লংমার্চ আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম। যার মাধ্যমে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন পাকিস্তানের জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের (জেইউআই-এফ) প্রধান মাওলানা ফজলুর রহমান ও তার সমর্থকরা।

Bootstrap Image Preview