বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ফাঁসি এবং ভারতের সাথে চুক্তি বাতিলের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার হতে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মহাসড়কে যান শিক্ষার্থীকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক ও জয় বাংলা (প্রান্তিক) গেটের সামনে মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা। বিকেল ৩টা পর্যন্ত অবরোধ অব্যাহত রাখেন শিক্ষার্থীরা।
এসময় শিক্ষার্থীরা মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে ‘দেশ বিরোধী চুক্তি মানি না, মানবো না; শহীদ আবরার দিচ্ছে ডাক, ভারতীয় আগ্রাসন নিপাত যাক; গো ব্যাক ইন্ডিয়া; দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা; পানি-বন্দর-নদীর দেশ, জবাব দেবে বাংলাদেশ’ ইত্যাদি প্রতিবাদী স্লোগান দিতে থাকে।
অবরোধ পালনকালে দেশ বিরোধী চুক্তি বাংলার জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আজ সীমান্তে মানুষ হত্যা, সুন্দরবনে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র, নদীর পানি বন্দর দিয়ে দেওয়া, উপকূলে ভারতের নজরদারি রাডার বসানোর অনুমতি- এসবের মাধ্যমে দেশের সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে এই সরকার। যারা স্বাধীনতা রক্ষা করতে পারবে না, মানুষের অধিকার রক্ষা করতে পারবে না তাদের আমরা শাসক হিসেবে মানবো না। যে দেশ বিরোধী চুক্তি করা হয়েছে তার সমুচিত জবাব বাংলাদেশের জনগণ ও ছাত্রসমাজ দেবে।’
ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সভাপতি নজির আমিন চৌধুরি জয় বলেন, ‘১৯৭১ সালে এই বাংলার জনগণ স্লোগান দিত পিণ্ডি না ঢাকা? আজকে ও আমরা একই স্লোগান দিচ্ছি দিল্লি না ঢাকা? দেশ পাল্টেছে কিন্তু পরিস্থিতি পাল্টেনি। পূর্ববাংলা বাংলাদেশে হয়েছে কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানের সেই ক্ষমতা আজকে ভারত নিয়েছে। বাংলাদেশ থেকে ভারতকে ট্রানজিট দেওয়া হয়, তাদের পানি দেওয়া হয়। বিনিময়ে আমরা কিছুই পাই না। এই প্রক্রিয়ায় তারা বাংলাদেশকে চুষে নিচ্ছে। এর বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় বুয়েট শিক্ষার্থী আবরারকে খুন করা হয়েছে। আমরা আবরার হত্যার বিচারের দাবি ও এই দেশ বিরোধী সকল চুক্তি বাতিলের দাবি জানাই।’
বিকেল তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নুরুল আলম, ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান উপস্থিত হয়ে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে অবরোধ তুলে নিতে অনুরোধ করেন। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে অবরোধ উঠিয়ে নেন।