Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

যুক্তরাষ্ট্র আগে কখনই এমন সংকটে পড়েনি, দাবি ট্রাম্পের

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩ অক্টোবর ২০১৯, ১১:২৮ AM
আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৯, ১১:২৮ AM

bdmorning Image Preview


মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের করা অভিশংসনের দাবি বর্তমানে গোটা বিশ্বে অনেকটাই জোরালো হয়ে উঠেছে। যদিও এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র আগে কখনই এমন সংকটে পড়েনি বলে দাবি করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) নিজের টুইটারে দেওয়া একটি ভিডিও বার্তায় তিনি এ দাবি করেন। খবর 'সিএনএনে'র।

সম্প্রতি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এক ফোনালাপ ফাঁসের জেরে মার্কিন পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে ইতোমধ্যে ট্রাম্পকে করা অভিশংসন ইস্যুতে তদন্ত শুরু হয়েছে। মূলত এর প্রেক্ষিতেই পুরোপুরি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন তিনি।

গত শনিবারের টুইট পোস্টে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘এটা ভীষণ সহজ একটি বিষয় যে, তারা সকলেই আমাকে থামানোর চেষ্টা করছে। কেননা আমি আপনাদের জন্য লড়াই করে যাচ্ছি; আর তাই তাদের আমি এটা কখনোই হতে দেব না।’

টুইট বার্তায় মার্কিন বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বিরোধীরা এখনো মার্কিনীদের কাছ থেকে সবকিছু নিয়ে যেতে চাইছে। এবার তারা আপনাদের কাছ থেকে বন্দুকও কেড়ে নিতে চায়। তাছাড়া গোষ্ঠীটি নাগরিকদের স্বাস্থ্যসেবা, ভোটাধিকার ও স্বাধীনতা পর্যন্ত ছিনিয়ে নেওয়ার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। বর্তমানে তারা আপনাদের গণরায়ও কেড়ে নিতে চায়।’

পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তাদের বরাতে গণমাধ্যম 'সিএনএন' জানায়, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং সৌদি রাজ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কথোপকথনের অনুলিপি ইস্যুতে এরই মধ্যে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে হোয়াইট হাউস। কেননা গুরুত্বপূর্ণ এসব ব্যক্তিদের সঙ্গে ট্রাম্পের বিভিন্ন স্পর্শকাতর বিষয়ে কথোপকথন রয়েছে। তাছাড়া ইউক্রেন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার ফোনালাপ ফাঁসের বিষয়টি নিয়েও আগের চেয়ে আরও বেশি সজাগ রয়েছে হোয়াইট হাউস।

এ সংক্রান্ত নথিগুলো এরই মধ্যে অতিমাত্রায় সুরক্ষিত কম্পিউটার নেটওয়ার্কে মজুদ রাখা হয়েছে। যে কারণে সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্তৃপক্ষ ছাড়া অন্য কারও পক্ষে এটি দেখার আর কোনো সুযোগ থাকছে না।

সৌদি রাজ পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বাদশা সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ, যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এবং যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত প্রিন্স খালিদ বিন সালমানের সঙ্গে প্রায়ই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ফোনালাপ হয়ে থাকে।

সম্প্রতি ফাঁস হওয়া এক ফোনাকলে দেখা যায়, সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার ছেলে হান্টারের বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে রীতিমতো চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরবর্তীতে ফাঁস হওয়া সেই ফোনকলের অনুলিপিও গোপন করতে চেয়েছিল হোয়াইট হাউস। যদিও শেষ পর্যন্ত তাদের সেই প্রচেষ্টা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম 'নিউইয়র্ক টাইমস', 'দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট' এবং বার্তা সংস্থা 'রয়টার্স' জানায়, প্রেসিডেন্টের ফোনালাপ ফাঁসকারী ব্যক্তিটি (হুইসেলব্লোয়ার) বর্তমানে সিআইএতে কর্মরত অবস্থায় আছেন। যদিও তার পরিচয় এখন পর্যন্ত প্রকাশিত হয়নি। এমনকি তার আইনজীবী এরই মধ্যে গণমাধ্যমকে সতর্ক করে বলেছেন, ফোনালাপ ফাঁসকারীর নাম প্রকাশ করাটা অত্যন্ত বিপজ্জনক হবে। 

এ দিকে সম্প্রতি ফাঁসকৃত একটি অডিও বার্তায় শোনা যায়, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক সিআইএ কর্মকর্তার কাছে হোয়াইট হাউজের তথ্য ফাঁসকারী ব্যক্তির পরিচয় জানার চেষ্টা করছেন। জাতিসংঘে চলতি অধিবেশনে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে আলোচনার সময় তিনি বিষয়টি জানার চেষ্টার করেন। মার্কিন গণমাধ্যম 'দ্য লস অ্যাঞ্জেলস টাইমসে' প্রথম সেই রেকর্ডটি প্রকাশিত হয়। ব্যক্তিটি মূলত সিআইএ কর্মকর্তার ঘনিষ্ঠ একজন বলে জানা গেছে।

অপর দিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এরই মধ্যে ফাঁসকারী ব্যক্তিকে সতর্ক করে বলেছেন, 'অতীতে এসব গুপ্তচরের ভাগ্যে ঠিক কী ঘটেছিল তা সবারই জানা। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না।'

উল্লেখ্য, এর আগে ঠিক একই অপরাধের দায়ে অনেক গুপ্তচরকে দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয়েছিল। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্টের এ ধরনের মন্তব্যে এরই মধ্যে নিন্দা জানিয়েছেন দেশটির ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা। কংগ্রেসম্যান রাজা কৃষ্ণমূর্তি এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়ে বলেন, 'এখন আমরা আশঙ্কা করছি, প্রেসিডেন্ট সেই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক কোনো ব্যবস্থা নেন কি-না।'

এর আগে গত ২৫ জুলাই ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফোনকলে তিনি সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার ছেলে হান্টার বাইডেনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরুর বিষয়ে কথা বলেছিলেন। এমনকি তা না হলে তিনি ইউক্রেনকে সব ধরনের আর্থিক সহায়তা বন্ধের হুমকিও দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে সেই ফোনকলের ধারণ করা অংশটুকু গত ২৫ সেপ্টেম্বর প্রকাশ করেছিল হোয়াইট হাউজ।

যেখানে দেখা যায়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার ব্যক্তিগত আইনজীবী রুডি জুলিয়ানি এবং মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বারের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে এই তদন্ত কাজটি করার জন্য ইউক্রেন প্রেসিডেন্টকে অনুরোধ জানাচ্ছেন।

Bootstrap Image Preview