Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৮ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

পদ পাওয়ার পরদিনই রিকসা ছেড়ে বিলাসবহুল নোয়া গাড়িতে রাব্বানী!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৫:১৩ PM
আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৫:১৩ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


জাহাঙ্গীর নগরের উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দের অর্থ থেকে ৪-৬ শতাংশ চাঁদা দাবিসহ নানা অভিযোগ ছাত্রলীগ থেকে পদ হারালেন শোভন ও রাব্বানী।

ছাত্রলীগ থেকে সদ্য অব্যাহতি পাওয়া সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর বিষয়ে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, পদ পাওয়ার পর এই দুজন ‌‌‘মনস্টার’ (দানব) হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রীর এ মন্তব্যের পর সভায় উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতারা চুপ হয়ে যান।

এমন মন্তব্যের পরই শোভন-রাব্বানীকে ছাত্রলীগের শীর্ষ পদ থেকে অপসারণ করা হয়।

‘উচ্চ আদর্শ ও সাদামাটা জীবনযাপন, এই হোক তোমাদের আদর্শ’ ছাত্রলীগের উদ্দেশে সবসময় এমন নির্দেশ রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কিন্তু সাদামাটা জীবন তো নয়ই জানা গেছে পদ পাওয়ার পর বিলাশবহুল জীবনযাপন শুরু করেন এই দুই সাবেক নেতা।

কিন্তু পদ পাওয়ার আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হলে থেকে সাধারণ জীবনযাপনেই অভ্যস্ত ছিলেন তারা।

ছাত্রলীগ থেকে সদ্য পদ হারানোর পর সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর জীবনযাপনে পাওয়া যায় ভিন্ন চিত্র।

একটি ইংরেজী জাতীয় দৈনিকের এক প্রতিবেদনে উঠে আসে তাদের বিলাস বহুল জীবনযাপনের সেসব তথ্য।

দৈনিকটি জানায়, পদ পাওয়ার পরপরই তারা রাজধানীর কাঁঠালবাগান ও হাতিরপুলে যথাক্রমে ৭০ হাজার ও ৪০ হাজার টাকার ভাড়া ফ্লাটে জীবনযাপন শুরু করেন শোভন ও রাব্বানী। যদিও ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাদের কোনো চাকরি অথবা ব্যবসায়ে জড়িত থাকার সুযোগ ছিল না।

তাহলে প্রতি মাসে বাসা ভাড়ার পেছনে এতো অর্থ কোথা থেকে আসছিল!

এ প্রশ্নে রাব্বানীর দাবি করেন, হাতিরপুলের ২ হাজার ৬শ’ বর্গফুটের ফ্লাটটির ভাড়া আরও অনেক হওয়ার কথা। তিনি তাকে মাত্র ৪০ হাজার টাকায় ফ্ল্যাটটি ভাড়া দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আর এ ভাড়া আমাকে দিতে হচ্ছে না। ২০১৫ সাল থেকে আমার বাবা এবং ছোটভাই বাসাভাড়া দিয়ে আসছেন।

গত বছর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পরদিন থেকে রাব্বানী টয়োটা কোম্পানির নোয়া মডেলের একটি মাইক্রোবাস ব্যবহার করতে শুরু করেন।

যিনি ছাত্র, চাকরি করছেন না তিনি কীভাবে এই গাড়ির মালিক হলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে রাব্বানি বলেন, ‘মাইক্রোবাসটি কিস্তিতে নিয়েছি। সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধ করা হয়নি, কিস্তির টাকা বকেয়া রয়েছে।’

সেই কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে অনেক কষ্ট হচ্ছে বলে জানান তিনি।

সূত্র জানায়, একইরকম একটি গাড়ি রয়েছে শোভনের। এ গাড়ি কেনার পেছনে তার আয়ের উৎস জানা যায়নি।

অথচ পদ পাওয়ার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকাকালীন ক্যাম্পাসের কোথাও যেতে হলে এই দু’জন অন্য সবার মতোই রিকশা ব্যবহার করতেন।

গতমাসে ডাকসু ভবনে শোভন-রাব্বানী নিজ নিজ কক্ষে একটি শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) লাগিয়েছেন।

এ বিষয়ে রাব্বানীর দাবি, এক শুভাকাঙ্ক্ষী তাকে উপহার হিসেবে এসি লাগিয়ে দিয়েছেন।

ছাত্রলীগের এই দুই নেতার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

শোভন-রাব্বানী চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত বলে বক্তব্য দিয়েছেন তিনি।

রোববার শেখ হাসিনা বলেন, শোভন-রাব্বানীর বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই। সবশেষ তারা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক বাজেটের পার্সেন্টেস চাইতে গিয়েছিল। ভিসি সেটাতে রাজি না হয়নি। উল্টো ভিসিকে তারা দোষারুপ করার চেষ্টা করেছে। এরা (শোভন-রাব্বানী) আসলে মনস্টার হয়ে গেছে। এদের আর ছাত্রলীগের নেতৃত্বে থাকার দরকার নেই।

ছাত্রলীগসংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী কমিটি দেয়ায় শোভন-রাব্বানীর প্রতি আলাদা নজর ছিল আওয়ামী লীগের সব মহলের। তারা ছাত্রলীগকে শেখ হাসিনার প্রত্যাশা অনুযায়ী ‘নতুন ধারায়’ ফিরিয়ে আনবেন এমন আশা ছিল সংশ্লিষ্টদের।

Bootstrap Image Preview