যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘সর্বাত্মক যুদ্ধের’ জন্য ইরান প্রস্তুত বলে কড়া হুঁশিয়ারি জানিয়েছেন দেশটির ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর আকাশ প্রতিরক্ষা বিভাগের কমান্ডার আমির আলি হাজিজাদেহ। সৌদি আরবের তেল স্থাপনায় হামলায় ইরানের হাত রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রর এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ হুমকি দেয় তেহরান।
রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে হাজিজাদেহ এ হুঁশিয়ারি দেন। খবর রয়টার্স।
সৌদি আরবের তেল স্থাপনায় হামলার দায় অস্বীকার করে ইরান বলেছে, মধ্যপ্রাচ্যের সব মার্কিন ঘাঁটি ও তাদের বিমানবাহী রণতরী ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের আওতায় রয়েছে।
ইরানের ইসলামী বিপ্লবী বাহিনীর সিনিয়র কমান্ডার আমির আলী হাজিজাদেহ বলেন, ইরান যুদ্ধের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। কাজেই সবার জানা উচিত মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থিত সব মার্কিন ঘাঁটি এবং তাদের বিমানবাহী রণতরী ২ হাজার কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে যা ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের আওতায়।
এর আগে শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সৌদি আরবের একটি তেল স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। হামলার দায় স্বীকার করেছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা।
এরপর যুক্তরাষ্ট্র হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করে বলেছে, সৌদি তেল স্থাপনায় হামলা করেছে ইরান। হামলার কারণে প্রতিদিন ৫৭ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন কমানো হয়েছে। যা দেশটির উৎপাদনের অর্ধেক। সারা বিশ্বে তেল চাহিদার ৫ শতাংশের বেশি সৌদি আরব যোগান দিয়ে থাকে।
একই দিনে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সৌদি হামলার ঘটনায় তেহরানকে জড়ানোর ব্যাপারটিকে অমূলক বলে অভিহিত করে। এ ধরনের অপবাদ ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়ানোর ‘অজুহাত’ বলে জানায় তারা।
এ প্রসঙ্গে এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্বাস মৌসাভি বলেন, এ ধরনের নিরর্থক ও অন্ধ অভিযোগ অচিন্তনীয়, অমূলক। আগামীতে ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এ ধরনের অভিযোগকে ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এর আগে ইয়েমেনের হুথি গোষ্ঠী সৌদি আরবের তেল স্থাপনায় হামলার দায় স্বীকার করলেও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারের এক বার্তায় এ ব্যাপারে সরাসরি ইরানকে দায়ী করেন। তিনি লেখেন, ইয়েমেন থেকে ওই আক্রমণ চালানো হয়েছে এর কোনো প্রমাণ নেই। বিশ্বের জ্বালানি সরবরাহের ওপর ইরান এই নজিরবিহীন হামলা চালিয়েছে।
পম্পেওর মন্তব্যের পরপরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও হামলায় জড়িতদের উদ্দেশ্যে জোরালো হুমকি জানিয়েছেন। হামলাকারীদের উদ্দেশ্যে টুইটারে ট্রাম্প লেখেন, ‘সৌদি আরবের তেল সরবরাহ প্রক্রিয়া আক্রান্ত হয়েছে। আমরা যে অপরাধীদের চিনি সেটা বিশ্বাস করার কারণ রয়েছে, (আমরা) রণসাজে প্রস্তুত (লকড অ্যান্ড লোডেড), কেবল (হামলায় কারা জড়িত সে তথ্যের) যথার্থতার ওপর (অ্যাকশন) নির্ভর করছে। আমরা সৌদির কাছ থেকে শুনতে চাই যে, কারা এ হামলায় জড়িত বলে তারা বিশ্বাস করে এবং কোন পন্থায় আমরা সামনে (অ্যাকশনে) যেতে পারি।’