১৫ আগস্টকে ‘জাতীয় আনন্দ দিবস’ উল্লেখ করে ক্যালেন্ডার বের করার অভিযোগে বেগমগঞ্জ উপজেলার কেন্দুরবাগ বাজারের অক্সফোর্ড আইডিয়াল জুনিয়র স্কুলের অধ্যক্ষ জামায়াত নেতা নুর হোসেনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা রেকর্ডের অনুমোদনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর খবর পাওয়ার পর সেই অধ্যক্ষ সাইনবোর্ডসহ উধাও হয়ে গেছে।
মামলার বাদী জাহিদ হাসান সুভ জানান, কেন্দুরবাগ বাজারে কিবরিয়া মার্কেটে একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে অক্সফোর্ড আইডিয়াল জুনিয়র স্কুলের অধ্যক্ষ ও জিরতলী ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি এবং বেগমগঞ্জ উপজেলার কমিটির অর্থ সম্পাদক মো. নুর হোসেন প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করে আসছেন।
গত ৪ আগস্ট একজন অভিভাবক ১৫ আগস্টকে ‘জাতীয় আনন্দ দিবস’ উল্লেখ করা প্রতিষ্ঠানটির নামের একটি ক্যালেন্ডার দেখতে পায়। এ সময় ওই অভিভাবক বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে অধ্যক্ষ ও তার সহযোগীরা তার ওপর চড়াও হয়।
এ নিয়ে বাক-বিতণ্ডার এক পর্যায়ে এলাকার শত শত লোক স্কুলটি ঘেরাও করে ও তালা ঝুলিয়ে দেয়।
এ ঘটনার বিষয়ে ৮ আগস্ট নোয়াখালী চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জাহিদ হাসান শুভ নামের এক ছাত্রলীগ নেতা বাদী হয়ে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করলে বিজ্ঞ হাকিম বেগমগঞ্জ মডেল থানাকে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হারুনুর রশিদ চৌধুরী জানান, যেহেতু মামলাটিতে রাষ্ট্রদ্রোহের ধারা উল্লেখ রয়েছে সেহেতু অনুমতির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে। অনুমতি আসলে আসামি গ্রেপ্তারসহ পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল জানান, রাষ্ট্রদ্রোহ অপরাধের সঙ্গে জড়িত জামায়াত নেতা নুর হোসেন স্বঘোষিত অধ্যক্ষ ও বহু নাশকতার কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তিনি দীর্ঘ দিন থেকে স্কুল পরিচালনার নামে শিক্ষার্থীদের উগ্রবাদী কর্মকাণ্ডের শিক্ষা দেওয়া ও মগজ ধোলাই করত।
এ সব অভিযোগ জানার পর ভবন মালিক তারই নিকটতম আত্মীয় গোলাম কিবরিয়া তাকে কয়েক দফা নোটিশ দিয়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু তিনি এতে কোনো কর্ণপাত না করে যথেচ্ছা পূর্বক অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।
অন্য দিকে, অধ্যক্ষ নুর হোসেন গত সোমবার (৯ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টা ৫৪ মিনিটে নিজ আইডি থেকে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বলেন, ‘ওই স্কুলের ক্যালেন্ডারে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের স্থলে জাতীয় আনন্দ দিবস লেখাটি ক্যালেন্ডারে অনিইচ্ছাকৃতভাবে ছাপা হয়েছে।
এজন্য দুঃখ প্রকাশ করা হয়। যাহা বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাহেবকে বুঝানো হলে তিনি এতে সন্তুষ্ট হন। কিন্তু প্রশাসনের কতিপয় কর্মকর্তা কর্মচারী এবং একজন চেয়ারম্যানের স্বার্থ সিদ্ধি হাসিলের কারণে বিষয়টি জটিল এবং কঠিন হয়।’
এ বিষয়ে ইউএনও জানান, তার সঙ্গে কোনোভাবে ওই অধ্যক্ষের কথা হয়নি। সেই নিজেকে বাঁচানোর জন্য অপকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে।