Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

আট মাসে ধর্ষিত ৬৯৭ শিশু, নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার ৩৬৫৩

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৯:৪০ PM
আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৯:৪০ PM

bdmorning Image Preview
প্রতীকী ছবি


দেশজুড়ে শিশুর প্রতি সহিংসতার ঘটনা বাড়ছে। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে শিশুর প্রতি সহিংসতা বেড়েছে ২০ শতাংশ। ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৩ হাজার ৬৫৩ জন শিশু বিভিন্ন ধরণের নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার হয়েছে। প্রতিমাসে গড়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৪৫৭ জন শিশু। আগের বছরের প্রতিমাসে শিশু নির্যাতনের সংখ্যা ছিল ৩৮১ জন। সেভ দ্য চিলড্রেনের গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৬৯৭ জন শিশু। ধর্ষণ চেষ্টা করা হয়েছে ১০৪ জনকে। ১৬১ জনকে যৌন হয়রানী ও ২৮৫ জনকে হত্যা করা হয়েছে।

আত্মহত্যা করেছে ১৩৩ জন। অপহরণ করা হয়েছে ১৪৫ জন শিশুকে। নিখোঁজ হয়েছে ১০৪ জন। সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে ৩৯০ জন। পানিতে ডুবে মারা গেছে ৩৯৫ জন শিশু।

গত কয়েকবছর ধরে শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এসব ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণের পরামর্শ দিয়েছেন সংসদ সদস্যসহ বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থার প্রতিনিধিরা। এ ক্ষেত্রে দ্রুত সময়ে বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন করার পাশাপাশি শিশু নির্যাতন বন্ধে প্রয়োজনে নতুন আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন তারা।

পাশাপাশি তারা শিশু আইন-২০১৩ বাস্তবায়ন, ২০২৫ সালের মধ্যে শিশু শ্রমমুক্ত দেশ গড়ার নতুন কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাল্যবিবাহ রোধে প্রণীত আইন, নীতিমালা ও জাতীয় পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণের আহবান জানিয়েছেন।

শিশু অধিকার বিষয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের ৫ বছরের পরিসংখ্যান উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ধর্ষণের শিকার ৯০ শতাংশই শিশু ও কিশোরী। আর ৭ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিশুরাই বেশি নির্যাতনের শিকার।

ঢাকা জেলার ৫টি নারী নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ১৫ বছরে (২০০২-১৬) ধর্ষণ সংক্রান্ত ৫ হাজার মামলার বিচারে সাজা হয়েছে মাত্র ৩ শতাংশের। এই অবস্থায় শিশু হত্যা-নির্যাতন বন্ধে শিশু অধিকার বিষয়ক সংসদীয় ককাসের কাছে বিদ্যমান পরিস্থিতি উন্নয়নের জন্য একটি সুপারিশমালা তুলে ধরা হয়।

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদ ভবনের আইপিডি সম্মেলন কক্ষে ‘বর্তমান শিশু অধিকার পরিস্থিতি ও করণীয়’ নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এ আহ্বান জানানো হয়। চাইল্ড রাইটস অ্যাডভোকেসি কোয়ালিশন ইন বাংলাদেশ আয়োজিত সভায় গবেষণা প্রতিবেদন উত্থাপন করেন সেভ দ্য চিলড্রেনের ম্যানেজার রাশেদা আক্তার।

শিশু অধিকার বিষয়ক সংসদীয় ককাসের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. শামসুল হক টুকু’র সভাপতিত্বে সভায় বক্তৃতা করেন ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া, ককাসের সহ-সভাপতি অ্যারোমা দত্ত, সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল, ওয়াশিকা আয়শা খান ও আব্দুল মজিদ এবং বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী সংস্থার প্রতিনিধিরা।

সভায় ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, শিশু অধিকারের বিষয়টি তৃণমূলে পৌঁছাতে না পারলে কোনো সফলতা আসবে না। বছরজুড়ে উপজেলা পর্যায়ে অ্যাডভোকেসি করতে হবে। গ্রামের কর্মজীবি মায়ের সন্তানের জন্য ডে-কেয়ার সেন্টার চালু করতে হবে। শিশু আইন সংশোধনের জন্য অংশীজনদের সঙ্গে বসে সুপারিশগুলো সংশ্লিষ্টদের কাছে তুলে ধরতে হবে।

অনুষ্ঠানের সভাপতি শামসুল হক টুকু বলেন, শিশু নির্যাতন রোধে পারিবারিক, সামাজিক ও ধমীয় অনুশাসন মেনে চলতে হবে। সবাই নিজেদের নিয়ে যেভাবে ভাবে, দেশ নিয়ে ভাবলেই এসব নির্যাতন বন্ধ হবে। এজন্য ককাস থেকে সবধরণের সহায়তা করা হবে।

Bootstrap Image Preview