সাংবাদিককে তুলে নেওয়ার ঘটনায় ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও তার অনুসারী সহসভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ক্ষমা চেয়েছেন এবং ভবিষ্যতে এ রকম কর্মকাণ্ড হলে তার সুষ্ঠু বিচার করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসিতে সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে গিয়ে সাংবাদিকদের কাছে তারা এ ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি রায়হানুল ইসলাম আবির ও সাধারণ সম্পাদক মাহদী আল মুহতাসিমসহ সমিতির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ক্ষমা প্রার্থনা করে আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, এটা দুঃখজনক । আমি আসলে বুঝতে পারিনি। আমার দুই বন্ধুর মধ্যে মারামারি হওয়ার কারণে আমরা খুব ব্যস্ত ছিলাম। এ কারণে হুট করে কি হয়েছে আমি বুঝতে পারিনি। এ ঘটনার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী । ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটবে না।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন বলেন, আজকে যে ঘটনা ঘটেছে তা অনাকাঙ্ক্ষিত। আজকের ঘটনার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আমি অন্য কোন উদ্দেশ্য তাকে গাড়িতে তুলিনি। আমি তাকে সেভ করার জন্য গাড়িতে তুলেছিলাম। আমি সবার কাছে মাফ চাচ্ছি এবং ভবিষ্যতে যদি আরও কোন এ রকম ঘটনা ঘটে তাহলে এর সুষ্ঠু বিচার করব।
উল্লেখ্য, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের বিরুদ্ধে দায়িত্বরত সাংবাদিকের মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া ও ওই সাংবাদিককে তুলে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যানটিনের সামনে ছাত্রলীগ সভাপতি শোভনের প্রটোকল দেওয়াকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় নেতাদের সংঘর্ষের সময় দায়িত্ব পালনরত দৈনিক ইনকিলাবের ভুক্তভোগী সাংবাদিক ইমনের মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে ছবি মুছে ফেলা ও ওই সাংবাদিককে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
জানা যায়, ছাত্রলীগ সভাপতি শোভন মধুর ক্যানটিনে থেকে যাওয়ার সময় তার সঙ্গে গাড়িতে ওঠে ছাত্রলীগের অন্য দুই সিনিয়র নেতা জহির এবং আল নাহিয়ান খান জয়সহ আরও কয়েকজন। এদিকে গাড়িতে না উঠতে পেরে ঝামেলা করা শুরু করে বিদ্যুৎ। ফলে একপর্যায়ে শোভন অন্যদেরও গাড়ি থেকে নামিয়ে দেন। এটাকে কেন্দ্র করে জহির এবং বিদ্যুতের মধ্যে হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে দুজন দুজনকে বাঁশ দিয়ে আঘাত করতে তেড়ে যান।
এ সময় ঘটনাস্থলে দায়িত্ব পালনরত ইনকিলাবের রিপোর্টারের হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নেয় আরেক কেন্দ্রীয় সহসভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়। এ সময় এ রিপোর্টারকে জোর করে শোভনের গাড়িতে তুলে নেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী ইমন সাংবাদিকদের জানান, মধুর ক্যানটিনের বাইরে পাবলিক প্লেসে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় সেখানে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গেলে আমার মোবাইল কেড়ে নেয়া হয়। ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সিনিয়র সহসভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় আমাকে জোর করে গাড়িতে তুলে নেয়। তারা জোর করে আমার মোবাইল কেড়ে নিয়ে ভিডিও মুছে দেয়। পরে অনুরোধ করলে হাতিরপুল বাজারের কাছে আমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়া হয়।