Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

অন্তরকে শান্ত রাখার গুরুত্বপূর্ণ আমল যে ‘জিকির’

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩১ আগস্ট ২০১৯, ০১:০২ PM
আপডেট: ৩১ আগস্ট ২০১৯, ০১:০২ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


আল্লাহ তাআলার নামের স্মরণে রয়েছে অনেক রহমত ও বরকত। অন্তরে প্রশান্তি লাভের অন্যতম হাতিয়ারও জিকির। কেননা অন্তরে সুখ ও শান্তি লাভের জন্য আল্লাহ তাআলা কর্তৃক ঘোষিত ও পরীক্ষিত চিকিৎসাও এটি।  

এ সম্পর্কে আল্লাহ ঘোষণা করেন-

‘যারা ঈমান গ্রহণ করেছে, আল্লাহর জিকির দ্বারা তাদের অন্তর শান্ত হয়। জেনে রাখ! আল্লাহর জিকিরের দ্বারাই তারা অন্তরে শান্তি লাভ করে।’ (সুরা রাদ : আয়াত ২৮)

কুরআনের অনেক আয়াতে এবং প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনেক হাদিসেই জিকিরের গুরুত্ব ও ফজিলত উল্লেখ করেছেন। জিকির করার জন্য মানুষকে তাগিদ দিয়েছেন।

জিকিরের ফজিলত এত বেশি যে, জিকিরকারীকে আল্লাহ তাআলা নিজেই স্মরণ করেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘অনন্তর যদি তোমরা আমাকে স্মরণ কর, তবে আমিও তোমাদের স্মরণ করব।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৫২)

হাদিসে এসেছে, ‘বান্দা দুনিয়ায় আল্লাহকে যে মজলিশে স্মরণ করবে, আল্লাহ তাআলা আরশে আজিমে এর চেয়ে উত্তম মজলিশে বান্দাকে স্মরণ করবে। অন্য হাদিসে এসেছে, বান্দা যদি আল্লাহকে একবার স্মরণ করে তবে আল্লাহ বান্দাকে ৮০ বার স্মরণ করেন। অর্থাৎ বান্দা যদি আল্লাহকে একবার ডাকে তবে আল্লাহ তার ডাকে ৮০ বার সাড়া দেয়।’ সুবহানাল্লাহ।

জিকির এমন এক ইবাদত, যে ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর প্রিয় তথা নিষ্পাপ বান্দারা দুনিয়ার যাবতীয় গোনাহ থেকে মুক্ত থাকে।

এ কারণেই আল্লাহ তাআলা হজ পালনকারী নিষ্পাপ মানুষগুলোকে হজের পরে বেশি বেশি আল্লাহর জিকিরের নির্দেশ দিয়েছেন। তারা যেন তাদের বাপ-দাদাদের চেয়েও বেশি আল্লাহকে স্মরণ করে। আল্লাহ তাআলা বলেন-

‘যখন তোমরা (হজের পর) আরাফাতের ময়দান থেকে ফিরে আস, তখন তোমরা মাশআরে হারামে (মুজদালিফায় থেমে) আল্লাহর জিকির কর। তিনি তোমাদের যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন ঠিক সেভাবে জিকির কর। যদিও আগে তোমরা বিভ্রান্তদের অন্তর্ভুক্ত ছিলে।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৯৮)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা হজ পালনকারী বান্দাদের উদ্দেশ্যে জিকিরের উপদেশ দিয়ে বলেন-
‘অতঃপর যখন তোমরা (হজের) যাবতীয় কাজ শেষ করবে। তখন (মিনায়) আল্লাহকে এমনভাবে স্মরণ করবে, যেমন (জাহেলি যুগে) তোমরা তোমাদের বাপ-দাদাদের স্মরণ করতে, তার চেয়েও বেশি।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২০০)

সুতরাং প্রত্যেক মুমিন বান্দার উচিত মহান আল্লাহর জিকির বেশি বেশি করা। যে জিকিরের ব্যাপারে কুরআন ও হাদিসে সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা এসেছে।

তাই বেশি বেশি এ জিকিরগুলোর দ্বারা নিজেদের জবান তথা জিহ্বাগুলোকে সিক্ত রাখা। এ জিকিরের ফজিলতেই শান্ত থাকবে জিকিরকারী অন্তর। আর তাহলো-

> (سُبْحَانَ الله) সুবহানাল্লাহ।
> (اَلْحَمْدُ للهِ) আল-হামদুলিল্লাহ।
> (لَا اِلَهَ اِلَّا اللهُ) লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু।
> (اَللهُ اَكْبَر) আল্লাহু আকবার।
> (سُبْحَانَ اللهِ وَ بِحَمْدِهِ سُبْحَانَ اللهِ الْعَظِيْم) সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি, সুবহানাল্লাহিল আজিম।

> অন্তরকে প্রশান্ত রাখার অন্যতম জিকির হলো- আল্লাহ তাআলার ইসমে জাতের (اَللهُ اَللهُ) আল্লাহ আল্লাহ জিকির।

> আল্লাহ তাআলার সিফাত তথা গুণবাচক নামের জিকির। হাদিসে এসেছে-
‘আল্লাহ তাআলার ৯৯টি গুণবাচক নাম রয়েছে। যে ব্যক্তি এ নামের জিকির করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ সুবহানাল্লাহ।

দুনিয়ার সুখ-শান্তি ও পরকালের নাজাত লাভে জিকির হোক মুমিনের একমাত্র হাতিয়ার। কেননা আল্লাহ তাআলা তার পয়গাম্বর হজরত জাকারিয়া আলাইহিস সালামকে সন্তান লাভের নিদর্শনস্বরূপ এভাবে তার জিকির করার নির্দেশ দিয়েছিলেন-

‘আপনি অধিক পরিমাণে আপনার প্রতিপালকের জিকির করুন। আর সকাল-সন্ধ্যায় তার তাসবিহ পাঠ করুন।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ৪১)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দুনিয়ার সুখ-শান্তি লাভে বেশি বেশি জিকির করার তাওফিক দান করুন। প্রশান্ত অন্তরে জিকিরের মাধ্যমে দুনিয়া স্বচ্ছলতা ও চাহিদা পূরণের পাশাপাশি ও পরকালের সফলতা লাভের পরিপূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Bootstrap Image Preview