পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে থাকার জন্য যারা প্ররোচনায় দিচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের থাকার জন্য অনেকেই প্ররোচনা চালাচ্ছেন। লিফলেট বিতরণ করছেন। ইংরেজিতে প্ল্যাকার্ড লিখে দিচ্ছেন। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রোহিঙ্গাদের ফেরাতে আমরা আশাবাদী। বিকেল ৪টা পর্যন্ত সময় আছে। আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে, যোগ করেন ড. মোমেন।
কক্সবাজারের একাধিক শিবিরে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর রাখাইনে ফেরত যাওয়ার কথা রয়েছে আজ। কিন্তু মিয়ানমার এখনও রাখাইনে অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টি করতে না পারায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কক্সবাজারের শিবিরগুলোতে রোহিঙ্গাদের আচরণ পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে, আসন্ন প্রত্যাবাসন আবারও বাতিল হতে যাচ্ছে।
অন্যদিকে, যারা মিয়ানমারে ফিরে যেতে চাইবেন না তাদেরকে নোয়াখালীর ভাসানচরে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন।
পাশাপাশি কক্সবাজারের একাধিক শিবিরে যেসব বেসরকারি বিদেশি উন্নয়ন সংস্থা প্রত্যাবাসনের বিপক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তাদের ফেরত যাওয়া উচিৎ। নিজের দেশে গেলে তারা তাদের ভবিষ্যৎ সুন্দর করতে পারবে।
আর তারা যে দাবি-দাওয়ার কথা তুলেছে তা তাদের নিজের দেশে গিয়েই অর্জন করা উচিৎ। আমাদের সঙ্গে মিয়ানমারের আলাপ হয়েছে, দে উইল প্রোভাইড, দে হেভ গিভেন দেম গ্যারান্টি উইথ সিকিউরিটি, সেফটি অ্যান্ড মোবিলিটি, এই নিশ্চয়তাগুলো মিয়ানমার আমাদের দিয়েছে। সুতরাং তাদের এখন ফিরে যাওয়া উচিৎ।
বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনপ্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা ছিল। এ নিয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে কক্সবাজারের ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, রোহিঙ্গাদের দেওয়া শর্ত পূরণ না হলে তাঁদের একজনও স্বদেশে ফিরতে চান না।
আবুল কালাম বলেন, মিয়ানমার থেকে ৩ হাজার ৫৪০ জন রোহিঙ্গার নামের তালিকা বাংলাদেশ সরকারকে দেওয়া হয়েছিল। তাঁদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হচ্ছে। আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৯৫ পরিবারের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে শর্তবিহীনভাবে স্বদেশে ফেরত যাওয়ার মতো একজনকেও পাওয়া যায়নি।
তবে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যাবাসনপ্রক্রিয়ার জন্য আজ যে নির্ধারিত সময় ছিল, তাতে সরকার যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেখেছে। কোনো রোহিঙ্গা নাগরিক যদি বিনা শর্তে দেশে যেতে চান, তাহলে তাঁদের স্বদেশে ফেরত পাঠানো হবে। আজও তাঁদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হচ্ছে। প্রক্রিয়াটি চলমান।
প্রত্যাবাসনের তৎপরতা শুরু হলে মিয়ানমারে নাগরিকত্ব, স্বাধীনভাবে চলার নিরাপত্তা, ফেলে আসা সম্পত্তি ফেরত ও নিরাপত্তা নজরদারির শর্ত দিয়েছিলেন বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা।