Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

পাকিস্তানকে চাপে রাখতে হাইড্রোজেন বোমা বানিয়েছিলেন রাজীব গান্ধি!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২০ আগস্ট ২০১৯, ০৬:১৪ PM
আপডেট: ২০ আগস্ট ২০১৯, ০৬:১৪ PM

bdmorning Image Preview


ভারতে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী  রাজীব গান্ধি পাকিস্তানকে চাপে রাখতে হাইড্রোজেন বোমা বেছে নিয়েছিলেন। ১৯৮৫ সালে এই উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি এবং তৎকালীন কংগ্রেস সরকার। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-র গোপন দলিল থেকে এমনই তথ্য পাওয়া গেছে। 

ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ইন্দিরা গান্ধির আমলে তৈরি পরমাণু বোমার থেকে বহু শক্তিশালী ছিল ওই বোমা। এই খবর মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিগানের কাছে পৌঁছাতেই চিন্তিত হয়ে পড়েন তিনি।

সম্প্রতি সিআইএ গোপন দলিলের ওই অংশ আপলোড করেছে। এই নথিতে রয়েছে ১৯৮০-র দশকে ভারতের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির বিবরণ। 

সিআইএ জানিয়েছে, রাজীব গান্ধির নির্দেশে অত্যন্ত গোপনে হাইড্রোজেন বোমা তৈরি ও পরমাণু কর্মসূচি চালাচ্ছিল ভারত। নিরাপত্তার এতই কড়াকড়ি ছিল যে মার্কিন গোয়েন্দাদের অনেক ঘাম ঝরাতে হয়। 

আশির দশকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি। তখনই পাঞ্জাবে খালিস্তানি জঙ্গি সমস্যা তীব্র আকার নেয়। অমৃতসরের স্বর্ণমন্দির চলে গিয়েছিল উগ্র ধর্মীয় সংগঠনের দখলে। সে সময় শুরু হয় অপারেশন ব্লু স্টার। জঙ্গি মুক্ত করা হয় স্বর্ণমন্দিরকে। জটিল পরিস্থিতির মধ্যেই ভারতের গোয়েন্দা বিভাগ রিপোর্ট দিয়েছিল, পাকিস্তান তার পরমাণু কর্মসূচি বিশেষ শক্তিশালী করছে। একইসঙ্গে পাঞ্জাবের খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদীদেরও মদত দিচ্ছিল পাকিস্তান সরকার। এ রকম পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত ছিলেন ইন্দিরা গান্ধি। 

স্বর্ণ মন্দির অভিযানের পর খুন করা হয় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধিকে। মায়ের মৃত্যুর পর প্রধানমন্ত্রী হয়েই রাজীব গান্ধি পাকিস্তানের পরমাণু কর্মসূচির থেকে অনেক শক্তিশালী পরমাণু অস্ত্রের ভাণ্ডার তৈরির নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই প্রসঙ্গে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছিলেন রাজীব গান্ধি। ১৯৮৫ সালের ৪ মার্চ তিনি বলেছিলেন, পাকিস্তান যতই তার পরমাণু অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করুক, ভারত এক্ষেত্রে অনেক শক্তিশালী। 

কেমন ছিল রাজীব গান্ধির পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি ?

সিআইএ-এর রিপোর্ট থেকে জানা গেছে, ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টারের ৩৬ জন পরমাণু বিজ্ঞানীর দলের প্রস্তুতি শেষ হয়েছিল। তাঁরা মুম্বাইয়ের কাছেই কোনও এক স্থানে হাইড্রোজেন বোমা তৈরি করেছিলেন। পরমাণু অস্ত্র তৈরির অন্যতম প্লুটোনিয়াম ভাণ্ডার তৈরি করা হচ্ছিল। 

এসব জানতে পেরেই রাতের ঘুম হারাম হয়ে গিয়েছিল তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগানের। তিনি দেরি করেননি। বিশেষ দূত পাঠিয়েছিলেন দিল্লিতে। ভারতের হাইড্রোজেন বোমা তৈরির পদক্ষেপ দক্ষিণ এশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির তীব্র প্রতিযোগিতার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। এই সম্ভাবনা দেখেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তড়িঘড়ি ভারতের প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধির কাছে দূত পাঠিয়ে ছিলেন তিনি। 

তবে সেই দূতের সঙ্গে দেখা করেননি তিনি। সিআইএ জানিয়েছে, পাকিস্তান-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র  'দোস্তি'-র কারণেই মার্কিন দূতকে পাত্তা দেননি ভারতের প্রধানমন্ত্রী। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ভারত ও সোভিয়েত রাশিয়ার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল রাজীব গান্ধির অবলম্বন।

ভারতের হাইড্রোজেন বোমা তৈরির ক্ষেত্রে সোভিয়েত রাশিয়ার (অধুনালুপ্ত) মদত ছিল কিনা সে বিষয়ে ইঙ্গিত দেয়নি সিআইএ। এদিকে হাইড্রোজেন বোমা তৈরি হলেও তার পরীক্ষা করেননি রাজীব গান্ধি। পরবর্তী সময়ে ১৯৯৮ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর নির্দেশে ভারত পরমাণু বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল। পাকিস্তানও পাল্টা পরমাণু বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। 

Bootstrap Image Preview