নারায়ণগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ হত্যা, স্বামী গ্রেফতার

নারায়ণগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে সুমাইয়া আক্তার বর্ষা নামের এক গৃহবধূকে (২৩) শারীরিক নির্যাতনের পর শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার রাতে বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের সাবদি আলী সাহারদী এলাকার বাসার বিছানার উপর থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় রাতেই অভিযুক্ত স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান নয়নকে আটক করা হয়েছে।

নিহতের বাবা মনজুর ভূঁইয়ার অভিযোগ করে জানান, প্রায় এক বছর আগে নিজের একটি জমি বিক্রি করে সেই টাকা নিজের ব্যবসায় বিনিয়োগ করেন মনজুর ভূঁইয়া। তবে জমি বিক্রির টাকা পাওয়ার খবর জানতে পেরে ব্যবসা করার অজুহাতে বর্ষার মাধ্যমে তার কাছে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে স্বামী নয়ন। এ নিয়ে নয়ন ও বর্ষার মধ্যে পারিবারিক কলহও চলতে থাকে। দাবিকৃত টাকা না পেয়ে বর্ষাকে নিয়মিত মারধরসহ নানাভাবে শারীরিক নির্যাতন করে আসছিলো নয়ন। এরই জের ধরে সোমবার রাতে বর্ষাকে আবারো মারধর করা হয়। পরে নির্যাতনের এক পর্যায়ে বর্ষাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে নয়ন।

খবর পেয়ে বর্ষার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায় বন্দর থানা পুলিশ। পরে নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত নয়নকে পুলিশ আটক করা হয়।

বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, নিহত বর্ষার মরদেহের সুরতহাল পর্যবেক্ষণে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে বর্ষার বাবা মনজুর ভূঁইয়া বাদী হয়ে বর্ষার স্বামী নয়নকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। সেই মামলা গ্রহণ করে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। লাশের ময়না তদন্তের প্রতিবেদনের পর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিহতের স্বজনরা জানান, ২০১৩ সালে পারিবারিকভাবে আলী সাহারদী এলাকার মোস্তাফিজুর রহমান নয়নের সঙ্গে রাজধানীর কদমতলী থানার দনিয়া শরাইল এলাকার মেয়ে সুমাইয়া আক্তার বর্ষার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও আসবাবপত্র বাবদ প্রায় দশ লাখ টাকা খরচ করে বর্ষার পরিবার। নয়ন-বর্ষার সংসারে তাদের সাড়ে চার বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।