কাশ্মীর ইস্যুতে চীনের সঙ্গে নতুন করে দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে দ্বিতীয় মেয়াদে আসা মোদি সরকারের। জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার নিয়ে চীন নতুন করে কূটনৈতিক বিরোধিতার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বেইজিং বলছে, লাদাখের সঙ্গে চীনের সীমান্ত বিরোধ রয়েছে। ওই বিরোধ নিস্পত্তির আগেই ভারতের অভ্যন্তরীণ আইন একতরফা সংশোধন করা গ্রহণযোগ্য নয়। এদিকে দীর্ঘ আটচল্লিশ বছর পর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে শুক্রবার উঠে এসেছে জম্মু ও কাশ্মীর। জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ভারত-বিরোধী বিবৃতি দেয়নি। পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য দেশের মধ্যে চীন ছাড়া চারটি দেশই ভারতের পক্ষে মতামত দিয়েছে।
কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, রুদ্ধদ্বার বৈঠকটির পেছনে পাকিস্তানের প্রতি চীনের সখ্যই একমাত্র কারণ নয়। বেইজিং-এর নিজস্ব স্বার্থ ও উদ্বেগ রয়েছে এর পেছনে।সম্প্রতি চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে আলোচনায় কাশ্মীর নিয়ে মোদি সরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে ঘোর অসন্তোষ প্রকাশ করেন। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, এই সিদ্ধান্তের ফলে তার দেশের সার্বভৌমত্ব ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
একই সঙ্গে জাতিসংঘের বৈঠকে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি সৈয়দ আকবরউদ্দিন চীন ও পাকিস্তানকে এক বন্ধনীতে রেখে আক্রমণ করে উত্তাপ বাড়িয়ে দিয়েছেন। বিষয়টি ভারত-চীন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে টানটান করে তুলবে বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, সামরিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অন্য দেশকেও (বিশেষত নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী ও অন্য অস্থায়ী সদস্য দেশ) সঙ্গে নেওয়ার চেষ্টা শুরু করেছে চীন। রুদ্ধদ্বার বৈঠকে রাশিয়ার প্রতিনিধির বক্তব্য ইতিমধ্যেই কপালে ভাঁজ ফেলেছে সাউথ ব্লকের কর্তাদের।
কাশ্মীর সমস্যার সমাধান ভারত ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক বিষয়- এ কথা বলার পরও রাশিয়া যোগ করে, এ বিষয়ে জাতিসংঘের সনদ ও প্রস্তাবগুলোকে মানতে হবে। অথচ ভারতের বরাবর বলছিল এই বিষয়ে তৃতীয় পক্ষের নাক গলানো বরদাশত করবে না। এখন দেশটি খতিয়ে দেখছে রাশিয়ার মন্তব্যের পেছনে চীনের ইন্ধন আছে কিনা। কারণ শুক্রবারের বৈঠকের আগে-পরে এবং বৈঠকের ভেতরে চীনের স্থায়ী প্রতিনিধিও একই কথার পুনরাবৃত্তি করেছেন।