Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

জানুন কোরবানির ১০টি গুরুত্বপূর্ণ মাসয়ালা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭ আগস্ট ২০১৯, ০৬:২২ PM
আপডেট: ০৭ আগস্ট ২০১৯, ০৬:২২ PM

bdmorning Image Preview
প্রতীকী ছবি


কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘যার কোরবানির সামর্থ্য রয়েছে কিন্তু কোরবানি করে না সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে।’-মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদিস: ৩৫১৯; আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব ২/১৫৫ 

ইবাদতের মূলকথা হল আল্লাহ তাআলার আনুগত্য এবং তাঁর সন্তুষ্টি অর্জন। তাই যেকোনো ইবাদতের পূর্ণতার জন্য দুটি বিষয় জরুরি। ইখলাস তথা একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পালন করা এবং শরীয়তের নির্দেশনা অনুযায়ী তা সম্পাদন করা।

১. প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্ক সম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, যে ১০ যিলহজ ফজর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কোরবানি করা ওয়াজিব।

টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, অলঙ্কার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজন আসে না এমন জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সকল আসবাবপত্র কোরবানির নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।

নিসাব হল- স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি, রূপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি, টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্তুর ক্ষেত্রে নিসাব হল এর মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া।

আর সোনা বা রূপা কিংবা টাকা-পয়সা এগুলোর কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ না থাকে কিন্তু প্রয়োজন অতিরিক্ত একাধিক বস্ত্ত মিলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হয়ে যায় তাহলেও তার উপর কোরবানি ওয়াজিব। আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৫৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪০৫।

২. কোরবানির নেসাব পুরো বছর থাকা জরুরি নয়; বরং কোরবানির তিন দিনের মধ্যে যে কোনো দিন থাকলেই কোরবানি ওয়াজিব। বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৬, রদ্দুল মুখতার ৬/৩১২।

৩. কোরবানি মোট তিনদিন করা যায়। যিলহজের ১০, ১১ ও ১২ তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত। তবে সম্ভব হলে যিলহজের ১০ তারিখেই কোরবানি করা উত্তম। মুয়াত্তা মালেক ১৮৮, বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৮, ২৩, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯৫।

৪. নাবালেগ শিশু-কিশোর তদ্রূপ যে সুস্থমস্তিষ্কসম্পন্ন নয়, নেসাবের মালিক হলেও তাদের উপর কোরবানি ওয়াজিব নয়। অবশ্য তার অভিভাবক নিজ সম্পদ দ্বারা তাদের পক্ষে কোরবানি করলে তা সহিহ হবে। বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৬, রদ্দুল মুখতার ৬/৩১৬।

৫. যে ব্যক্তি কোরবানির দিনগুলোতে মুসাফির থাকবে (অর্থাৎ ৪৮ মাইল বা প্রায় ৭৮ কিলোমিটার দূরে যাওয়ার নিয়তে নিজ এলাকা ত্যাগ করেছে) তার উপর কোরবানি ওয়াজিব নয়। ফাতাওয়া কাযীখান ৩/৩৪৪, বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৫, আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৫।

৬. নাবালেগের পক্ষ থেকে কোরবানি দেয়া অভিভাবকের উপর ওয়াজিব নয়; বরং মুস্তাহাব। রদ্দুল মুখতার ৬/৩১৫; ফাতাওয়া কাযীখান ৩/৩৪৫।

৭. দরিদ্র ব্যক্তির উপর কোরবানি করা ওয়াজিব নয়; কিন্তু সে যদি কোরবানির নিয়তে কোনো পশু কিনে তাহলে তা কোরবানি করা ওয়াজিব হয়ে যায়। বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯২।

৮. কেউ যদি কোরবানির দিনগুলোতে ওয়াজিব কোরবানী দিতে না পারে তাহলে কোরবানির পশু ক্রয় না করে থাকলে তার উপর কোরবানির উপযুক্ত একটি ছাগলের মূল্য সদকা করা ওয়াজিব। আর যদি পশু ক্রয় করে ছিল, কিন্তু কোনো কারণে কোরবানি দেয়া হয়নি তাহলে ওই পশু জীবিত সদকা করে দিবে। বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৪, ফাতাওয়া কাযীখান ৩/৩৪৫।

৯. যেসব এলাকার লোকদের উপর জুমা ও ঈদের নামাজ ওয়াজিব তাদের জন্য ঈদের নামাজের আগে কোরবানি করা জায়েজ নয়। অবশ্য বৃষ্টি-বাদল বা অন্য কোনো ওজরে যদি প্রথম দিন ঈদের নামাজ না হয় তাহলে ঈদের নামাজের সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর প্রথম দিনেও কোরবানি করা জায়েজ। সহীহ বুখারী ২/৮৩২, কাযীখান ৩/৩৪৪, আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৮।

১০. ১০ ও ১১ তারিখ দিবাগত রাতেও কোরবানি করা জায়েজ। তবে দিনে কোরবানি করাই ভালো। মুসনাদে আহমাদ, হাদীস : ১৪৯২৭; মাজমাউয যাওয়াইদ ৪/২২, আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২০, কাযীখান ৩/৩৪৫, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৩।

Bootstrap Image Preview