Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

প্রিয়া সাহার পেছনে কারা, খতিয়ে দেখা দরকার: কাদের

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৯ জুলাই ২০১৯, ০৩:০১ PM
আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৯, ০৩:০১ PM

bdmorning Image Preview


যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন বিষয়ে অভিযোগকারী মানবাধিকার কর্মী এবং হিন্দু বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহার পিছনে কারা আছে তা খতিয়ে দেখতে হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

সোমবার (২৯ জুলাই) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি। 

তিনি বলেন, প্রিয়া সাহার পেছনে কারা আছে এবং কাদের ইন্ধনে তিনি এ কাজ করেছেন, তা খতিয়ে দেখা দরকার। 

কার আমন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্রে গেলেন প্রিয়া সাহা? 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন বিষয়ে অভিযোগকারী প্রিয়া সাহাকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়ার দায় অস্বীকার করেছে মার্কিন প্রতিষ্ঠান দ্য ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই)।   

শুক্রবার (২৬ জুলাই) নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে মার্কিন এই প্রতিষ্ঠানটি। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন সম্পর্কিত প্রিয়া সাহার বক্তব্যকে অসত্য বলে জানিয়ে মার্কিন প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, প্রিয়া সাহার যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার স্পন্সর করেনি আইআরআই। 

গত ১৬-১৮ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের আয়োজনে দেশটির রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। 

বৈঠকের দ্বিতীয় দিন অন্যন্যদের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশের হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহা।

সাক্ষাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশ থেকে ৩৭ মিলিয়ন অর্থাৎ ৩ কোটি ৭০ লাখ সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী ‘ডিসঅ্যাপিয়ার্ড’ বা গুম হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রিয়া সাহা। শুধু তাই নয় তার বাড়িতে অগ্নিসংযোগের অভিযোগও করেছেন তিনি। এসব ঘটনায় মুসলিম মৌলবাদীরা জড়িত বলে দাবি করেছেন প্রিয়া। 

তার এই বক্তব্যে দেশে তুমুল সমালোচনার ঝড় উঠে। রাজনৈতিক মহলে তাকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার আখ্যাও দেওয়া হয়। প্রিয়া সাহা যুক্তরাষ্ট্রে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন বলে প্রমাণিতও হয়। তার এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, প্রিয়া সাহা তার নিজ বাড়িতে নিজেই আগুন দিয়েছেন এবং এখন ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলে যুক্তরাষ্ট্রে সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগ তুলেছেন।  

এসব সমালোচনার মধ্যেই প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। পরে আদালত সেটিকে খারিজ করেন। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রিয়া সাহাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে আইনি প্রক্রিয়া শুরু না করতে নির্দেশ দেন।

প্রিয়া সাহার বিষয়ে তার সংগঠন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সংবাদ সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত জানান, প্রিয়া সাহা সংগঠনের অন্যতম সাংগঠনিক সম্পাদক এটি সত্যি, তবে সাংগঠনিক কোনো সিদ্ধান্ত বা দায়িত্ব নিয়ে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাননি বা মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি। যা করেছেন নিজের দায়িত্ব নিয়ে করেছেন। এর সঙ্গে সংগঠনের কোনো সম্পর্ক নেই।

তিনি আরও বলেন, প্রিয়া সাহা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশ থেকে ৩ কোটি ৭০ লাখ (৩৭ মিলিয়ন) হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোক ‘ডিজএপিয়ার’ হয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন। ‘ডিজএপিয়ার’ বলতে তিনি কী বোঝাতে চেয়েছেন তা তিনিই ভালো বলতে পারবেন। এটি যদি স্বাধীন বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের গুম বা নিখোঁজ অর্থে বলে থাকেন তবে তা অসত্য এবং আমরা তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

তবে সরকারি পরিসংখ্যানের আলোকেই তিনি এই চিত্র তুলে ধরেছেন বলে পরে গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান প্রিয়া। আইআরআইয়ের নিমন্ত্রণে তিনি ওয়াশিংটন যান বলেও দাবি করেন। প্রিয়া সাহার দাবির প্রেক্ষাপটে আইআরআই জানিয়েছে, তারা প্রিয়া সাহার স্পন্সর ছিল না। এ বার্তা-সংক্রান্ত চিঠি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও পাঠিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

এতে বলা হয়েছে, ওয়াশিংটনে ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক ‘মিনিস্ট্রিয়াল টু অ্যাডভান্স রিলিজিয়াস ফ্রিডম’- এ প্রিয়া সাহাকে আইআরআই আমন্ত্রণ জানিয়েছিল মর্মে তিনি (প্রিয়া সাহা) যে বক্তব্য দিয়েছেন তা প্রতিষ্ঠানটির নজরে এসেছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে স্পষ্ট করে জানাতে চায়, (আইআরআই) প্রিয়া সাহার ওয়াশিংটন সফরের স্পন্সর করেনি।

প্রিয়া সাহার সঙ্গে আইআরআই কোনো কাজ করে না বা কোনোভাবে যুক্ত নয় বলে উল্লেখ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রিয়া সাহার বক্তব্য ‘অসত্য’ বলেও মনে করে আরআরআই। প্রতিষ্ঠানটি আরও বলেছে, আইআরআই বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সম্পর্ককে সবসময় গুরুত্ব দেয়। তারা বাংলাদেশে সুশাসন ও নাগরিককেন্দ্রিক রাজনীতির প্রসারে কাজ করে যেতে চায়।

কূটনৈতিক সূত্র জানায়, আইআরআই নয় মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের আমন্ত্রণে ওই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন প্রিয়া সাহা।

Bootstrap Image Preview