পাবনায় পরীক্ষায় ফেল করে পরিবারের বকুনি থেকে বাঁচতে স্কুল ছাত্রের ছেলেধরা নাটকের পর, এবার প্রেমিকার মন পেতে এক ব্যর্থ প্রেমিকের বিরুদ্ধে অপহরণ নাটক সাজানোর অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (২৪ জলাই) বিকেলে ভাঙ্গুড়ায় কলেজ থেকে ফেরার পথে মাইক্রোবাসযোগে অপহরণের ঘটনা নিজের সাজানো নাটক ছিল বলে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে কলেজছাত্র আব্দুল্লাহ। ভাঙ্গুড়া থানার ওসি মাসুদ রানা শুক্রবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানায়, ভাঙ্গুড়া উপজেলার মন্ডুতোষ ইউনিয়নের বোয়ালমারী গ্রামের আব্দুল আওয়াল প্রামানিকের ছেলে ও সরকারি হাজী জামাল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র আব্দুল্লাহ।
বুধবার বিকেলে আব্দুল্লাহ নিজেই উপজেলার মল্লিকচক গ্রামের সড়কে চলমান একটি যাত্রীশূন্য মাইক্রোবাসে উঠে চাটমোহর নতুন বাজার গিয়ে নামে। সেখান থেকে সে একটি সিএনজিযোগে অটোরিকশাযোগে বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে ব্লেড দিয়ে নিজের শরীরের বিভিন্ন অংশে কেটে অপহরণকারীদের আঘাতে অসুস্থতার ভান করে।
তখন স্থানীয়রা তাকে ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এরপর হাসপাতলে তিনি কয়েক ঘণ্টা অচেতন থাকার অভিনয় করেন। কেন তিনি এটা করলেন এমন প্রশ্নে আব্দুল্লাহ তার মানসিক অসুস্থতার কথা জানিয়েছে।
পুলিশ আরও জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুল্লাহ জানিয়েছে, কলেজের একটি মেয়েকে প্রেম নিবেদন করে ব্যর্থ হয়ে তিনি বেশ কিছুদিন ধরে মানসিক বিষণ্নতায় ভুগছেন।
সম্প্রতি ছেলেধরা গুজবে প্রভাবিত হয়ে, মেয়েটির সহানুভূতি পেতে তিনি এই অপহরণের নাটক সাজান। তবে এ ব্যাপারে তাকে কেউ কোনোভাবে উস্কানি বা সহযোগিতা করেননি বলে তিনি দাবি করেন।
আব্দুল্লাহর আত্মীয় ও উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সুমন বাবু জানান, কিছুদিন আগে প্রেমে ব্যর্থ হয় আব্দুল্লাহ। এরপর থেকেই মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন হয়ে চলাফেরা করেন তিনি। মূলত প্রেমিকার সহনুভূতি পেতেই এই নাটক করেছেন আব্দুল্লাহ।
ভাঙ্গুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদ রানা জানান, প্রথম থেকেই এই অপহরণের ঘটনাটি সাজানো ও পূর্বপরিকল্পিত বলে পুলিশের সন্দেহ ছিল। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ওই কলেজছাত্রের স্বীকারোক্তিতে সেটাই প্রমাণিত হলো।
এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর অপরাধে আব্দুল্লাহকে আইনের আওতায় আনা হবে কিনা জানতে চাইলে ওসি বলেন, বিষয়টি পুলিশ খতিয়ে দেখছে। কোনো বিশেষ উদ্দেশ্যে এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।