Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

সিজারের সময় নবজাতকের হাত-গলার রগ ছিঁড়ে ফেললেন নার্স

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৯ জুলাই ২০১৯, ০৫:০৮ PM
আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৯, ০৫:০৮ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে প্রসূতির সিজার করতে গিয়ে নবজাতকের হাত ও গলার রগ ছিঁড়ে ফেলেছেন নার্সরা। এ ‍ঘটনায় ওই নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। 

গত রোববার মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটেছে।

ভুক্তভোগী ওই প্রসূতি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার কুমড়াকাপন গ্রামের বাসিন্দা মো. আওয়াল হাসানের স্ত্রী।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নবজাতকের গলা কেটে গেলে পরিস্থিতি খারাপ দেখে ডেলিভারি শেষ না করে অপারেশন থিয়েটারে মা-শিশুকে রেখে পালিয়ে যান নার্সরা। পরে অপারেশন থিয়েটারে গিয়ে স্বজনরা দেখেন নবজাতকের অর্ধেক মায়ের পেটে এবং মাথা ও হাত বাইরে। এ অবস্থায় ওই মা-শিশুকে অন্য ক্লিনিকে নেওয়া হলে সেখানে মৃত নবজাতকের জন্ম হয়।

প্রসূতির স্বামী মো. আওয়াল হাসান বলেন, ‘রোববার ভোরে স্ত্রীর প্রসব ব্যথা ওঠায় তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। প্রথমে হাসপাতালের নার্সরা রোগী দেখে জানান নরমাল ডেলিভারিতে সন্তান হবে। এরপর সকাল ১০টার দিকে একজন চিকিৎসক চেকআপ করে নরমাল ডেলিভারির কথাই জানান।

আওয়াল হাসান বলেন, ‘কিছুক্ষণ পর নার্সরা সিজারের কথা বলেন। এমনকি সিজারের মেডিসিন ও রক্ত লাগবে বলেও জানান তারা। এরপর তাদের দেখিয়ে দেওয়া ব্যক্তির কাছ থেকে রক্ত না নিয়ে কম টাকায় অন্য জায়গা থেকে রক্ত নিয়ে আসি। কিন্তু এসে দেখি স্ত্রীকে নরমাল ডেলিভারির জন্য নিয়ে গেছেন নার্সরা।

কিছুক্ষণ পর এক নার্স এসে বলেন আপনার বাচ্চা আর বেঁচে নেই। মায়ের অবস্থা ভালো না, মাকে বাঁচাতে হলে এখানে একটা সই দেন। আমি স্ত্রীকে বাঁচানোর কথা ভেবে কিছু চিন্তা না করে সই দেই।

তিনি আরও বলেন, ‘পরে যখন ভেতরে গিয়ে দেখলাম নবজাতকের মাথা-হাত বাইরে, বাকিটুকু মায়ের পেটে। নবজাতকের হাত ছিঁড়ে গেছে, গলা কেটে ফেলেছেন তারা। এরপর আমি দৌড়ে গেলাম নার্স আনার জন্য।

এসে দেখি কোনো নার্স নেই। কারও কোনো সহযোগিতা না পেয়ে রোগী নিয়ে পাশের আল-হামরা হাসপাতালে যাই। সেখানে নিলে মায়ের পেট থেকে মৃত বাচ্চা বের করেন চিকিৎসকরা। আমি অসহায় মানুষ, আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই।

ভুক্তভোগী প্রসূতি সুমনা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী নার্সদের বলে দেওয়া ব্যক্তির কাছ থেকে রক্ত না নেওয়ায় নার্সরা আমাকে জোর করে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান। আমি তাদের বললাম একটু আগে বললেন সিজার লাগবে।

আমার স্বামী রক্ত আনতে গেছে। তখন তারা আমাকে ধমক দেন। সেই সঙ্গে তারা আমার পেটে জোরে জোরে চাপ দিতে থাকেন। পশুর মতো পেট থেকে বাচ্চা টানতে শুরু করেন তারা। এতে আমার বাচ্চার হাত এবং গলার রগ ছিঁড়ে যায়। পরে তারা আমাকে ফেলে রেখে চলে যান।

এ বিষয়ে আল-হামরা হাসপাতালের ম্যানেজার বলেন, ‘আমাদের যে ডাক্তার অপারেশন করেছেন তিনি নিজেও অবাক হয়েছেন এ ধরনের কাণ্ড দেখে। বিষয়টি সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানাতে বলেছেন আমাদের ডাক্তার।

মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা রত্নদ্বীপ বিশ্বাস তীর্থ বলেন, ‘আমি এখানে আজ যোগ দিয়েছি। বিষয়টি জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখব বিষয়টি।

এ বিষয়ে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক পার্থ সারথি দত্ত কানুনগো বলেন, ‘হাসপাতালে নিয়ে আসার দুই দিন আগে থেকে বাচ্চাটির নড়াচড়া ছিল না। বাচ্চা যদি মায়ের গর্ভে মারা যায় অনেক সময় ফুলে যায়। 

এ অবস্থায় পেট কেটে বাচ্চা বের করতে হয়। হাসপাতালে ওই দিন নয়টি সিজার হয়েছে। তিনজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ছিলেন। নার্সরা সিজার করেনি, ডাক্তাররাই সিজার করেছেন।

Bootstrap Image Preview