Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

ঢাকায় বসবাসে পছন্দের শীর্ষে উত্তরা ও মিরপুর

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৮ জুলাই ২০১৯, ০৯:২২ PM
আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৯, ০৯:২২ PM

bdmorning Image Preview


ঢাকায় বসবাসের জন্য সবচেয়ে বেশি মানুষজন বাড়ি খুঁজছেন উত্তরা এবং মিরপুর এলাকায়। পছন্দের বাড়ি খোঁজার তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে মোহাম্মদপুর এলাকা, তারপর ধানমন্ডি এবং বসুন্ধরা।

সম্প্রতি একটি সমীক্ষার ফলাফলে এমনটাই দেখা গেছে। সম্পত্তি, বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট কেনাবেচার একমাত্র মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান বি-প্রপার্টির কাছে গত বছরের অক্টোবর থেকে এ বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত গ্রাহকদের কাছ থেকে আসা চাহিদা বিশ্লেষণ করে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

ফলাফলে দেখা গেছে ঢাকায় বসবাসের জন্য সবচেয়ে বেশি চাহিদা বিমানবন্দরের কাছে উত্তরা এলাকায়। বি-প্রপ্রার্টিরও সাইটে রেজিস্ট্রি করে যারা অ্যাপার্টমেন্ট খুঁজেছেন, তাদের ২৪ শতাংশই এই এলাকাটি পছন্দ করেছেন। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মিরপুর, ২০ শতাংশ। মোহাম্মদপুরে খুঁজেছেন ১৪ শতাংশ গ্রাহক, ধানমন্ডিতে ১১ শতাংশ, বসুন্ধরায় ১০ শতাংশ।

সমীক্ষায় দেখা গেছে ঢাকায় সবচেয়ে বেশি চাহিদা ১৫০০ বর্গফুট আয়তনের ফ্ল্যাট। বি-প্রপার্টির কাছে আসা মোট অনুরোধের অর্ধেকেরও বেশি গ্রাহক (প্রায় ৫৪ শতাংশ) ১৫০০ বর্গফুট আয়তনের ফ্ল্যাট খুঁজছেন।

২৭ শতাংশ গ্রাহক খুঁজেছেন ১০০০ বর্গফুট আয়তনের। ছোটো আয়তনের এ ধরনের ফ্ল্যাটের জন্য জনপ্রিয় এলাকা মিরপুর, বাড্ডা এবং উত্তরার কাছে দক্ষিণ খান এলাকা।

কেন উত্তরার চাহিদা সবচেয়ে বেশি

বি-প্রপার্টির প্রধান নির্বাহী মার্ক নুসওয়ার্দি বলেন, পরিকল্পিত একটি উপশহরের বিভিন্ন উপকরণ থাকার কারণে উত্তরা এখন বসবাসের জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয় এলাকা হয়ে উঠেছে। আমি মনে করি উত্তরা এখন ঢাকার হৃৎস্পন্দন (হার্ট-বিট)। পরিকল্পিত একটি শহর এটি। চওড়া রাস্তা। এমন সব অবকাঠামো এখানে হয়েছে যেগুলো ভালো একটা লাইফ-স্টাইলের উপযোগী।

তিনি বলেন - আগামি দশ বছরের মধ্যে ঢাকা স্থানান্তরিত হবে পূর্বাচলে যেটা উত্তরার খুব কাছে। কয়েকবছরের মধ্যে শুরু হবে মেট্রো-রেল যেটা উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত যাবে। এছাড়া, এলাকাটি বিমানবন্দরের কাছে। অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উত্তরের দিকে চলে যাচ্ছে। ফলে মানুষ থাকার জন্য উত্তরাকে পছন্দ করছে।

নুসওয়ার্দি জানান, চাহিদার কারণে উত্তরায় অ্যাপার্টমেন্টের দামও দিন দিন বাড়ছে। মাঝারি আয়তনের ফ্ল্যাটের দাম এমনকি এক কোটি ৪০ লাখ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে।

অন্যদিকে মিরপুরে চাহিদার প্রধান কারণে এখনও সেখানে ফ্ল্যাটের দাম মধ্যবিত্তের আয়ত্তের ভেতরে রয়েছে। মি. নুসওয়ার্দি জানান, এখনও মিরপুরের কোনো কোনো জায়গায় ৯০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট কম-বেশী ২০ লাখ টাকায় মিলে যায়। ঢাকায় মেট্রোরেলের কাজ চলছে। মেট্রোরেলের রুট হবে উত্তরা থেকে মতিঝিল, এবং উত্তরায় বসবাসের চাহিদা বাড়ার অন্যতম কারণ সেটি।

ঢাকায় ফ্ল্যাটের ক্রেতা কারা?

মার্ক নুসওয়ার্দি বলেন, প্রতিদিন তাদের কাছে গড়ে ১৫০০ নতুন চাহিদা আসে এবং এদের মধ্যে নানা ধরণের এবং পেশার মানুষ রয়েছেন।

তিনি জানান, উত্তরা, মিরপুর, মোহাম্মদপুরের মত এলাকায় মানুষ থাকার জন্যই ফ্ল্যাট খোঁজেন। অন্যদিকে, যারা বিনিয়োগ করতে চান, তাদের প্রধান টার্গেট গুলশান, বনানী এবং ধানমন্ডি।

চাহিদামতো ফ্ল্যাটের আকাল

মার্ক নুসওয়ার্দি বলেন, বাংলাদেশে গত চার বছর ধরে সম্পত্তি ব্যবস্থাপনার অভিজ্ঞতা থেকে তার মনে হয়েছে, সমাজ এবং পরিবার যেভাবে বদলেছে, আবাসন খাত সেভাবে বদলায়নি। প্রতিদিন প্রচুর মানুষ ফ্ল্যাট কেনার জন্য খোঁজখবর করছেন, কিন্তু তাদের অধিকাংশই তাদের চাহিদামত কিছু পাচ্ছেন না।

তিনি বলেন, মধ্যবিত্তের আয় বাড়ছে এবং বৃহত্তর যৌথ পরিবারের সাথে এখন ছেলেমেয়েরা থাকতে চাইছে না। তারা খুব দূরে হয়তো যেতে চায়না, কিন্তু অন্য জায়গায় নিজেদের মত করে থাকতে চায়। সেই ক্ষমতাও তাদের হয়েছে। কিন্তু চাহিদা মত জায়গা পাচ্ছেনা।

তার মতে - নিউইয়র্ক, সিঙ্গাপুর বা হংকংয়ের আদলে এখন 'ওপেন প্লান, দুই বেডের কমপ্যাক্ট ফ্ল্যাটের' চাহিদা ঢাকায় তৈরি হয়েছে, কিন্তু ডেভেলপাররা ঠিকমত সেটা অনুধাবন করতে পারছেন না।

Bootstrap Image Preview