দেশের বিভিন্ন কোম্পানীর তরল দুধ নিয়ে করা গবেষণার ফল প্রকাশ করে সম্প্রতি সরকারি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন মহলের রোষানলে পড়েন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিক্যাল রিসার্স সেন্টারের সদ্য সাবেক পরিচালক আ ব ম ফারুক। তার গবেষণা নিয়ে এবার কথা বললেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, এই গবেষণাকে বিতর্কিত করলে আমাদের কোনোক্রমে আপস করা ঠিক হবে না।
অধ্যাপক ফারুকের পাশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থাকবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “তার পক্ষে সমগ্র জাতি থাকবে। আর তিনি তো ঢাবির অধ্যাপক হিসেবেই গবেষণার করে ফল প্রকাশ করেছেন। এজন্য তাকে আমরা ধন্যবাদ জানাই।”
ঢাবি উপাচার্য বলেন, “অধ্যাপক ফারুক একজন স্ট্যান্ডার্ড মানের গবেষক। তিনি জনস্বার্থেই গবেষণাটি করেছেন। একজন গবেষক হিসেবে তিনি তার মৌলিক দায়িত্বই পালন করেছেন। এটি নিয়ে বিতর্ক তোলার আগে এই গবেষণা মানের আরেকটি গবেষণা করা উচিত ছিল”’
এভাবে যেনতেনভাবে গবেষণা নিয়ে প্রশ্ন তুললে সরকারের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন বাধাগ্রস্ত হবে বলে মনে করেন ঢাবি উপচার্য।
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজই হলো গবেষণা করা। এখানে প্রচুর গবেষণা হবে। বিশেষ করে এখানে জনস্বার্থে গবেষণা হওয়া বেশি জরুরি। জনস্বার্থে এ ধরনের গবেষণা করা বিশ্ববিদ্যালয়েরও মৌলিক দায়িত্ব। আ ব ম ফারুকও তেমনি একজন গবেষক। যার সে রকমের গবেষণা করার স্ট্যান্ডিং মানও রয়েছে। তিনি মৌলিক ধারার মানুষ। অনেক আগে থেকেই তিনি বিভিন্ন খাদ্যের মান নিয়ে কথা বলেন আসছেন। যখনই কোনও বিষয় নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়, তখন তিনি চমৎকার কথা বলেছেন। এটা মূলত তার অধিকার। ফলে তিনি যে গবেষণা করেছেন, সে গবেষণার ফলটি প্রকাশ করেছেন। এটাই তো তার কাছে প্রত্যাশিত। কারণ, তিনি সৎ সাহস নিয়ে এ ধরনের গবেষণা করেছেন।”
তিনি বলেন, “এ গবেষণাটি নিয়ে যারা বিতর্ক করছেন তাদের উচিত ছিল পাল্টা আরেকটি গবেষণা করে এরপর কথা বলা। তখন গবেষণাটি সম্পর্কে ধারণা করা যেতো। কিন্তু তা না করে গবেষণার ত্রুটি খোঁজা কোনোভাবেই কাম্য না এবং এটিকে বিতর্কিত করলে আমাদের কোনোক্রমে আপস করা ঠিক হবে না।”
উল্লেখ্য, গত ২৫ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদ এবং বায়োমেডিকেল রিসার্চ সেন্টারের যৌথভাবে চালানো এক গবেষণায় দেশের পাঁচটি কোম্পানির উৎপাদিত পাস্তুরিত দুধে অ্যান্টিবায়োটিকের সন্ধান পান গবেষকরা। কোম্পানিগুলো হলো- প্রাণ, মিল্ক ভিটা, ইগলু, আড়ং ও ফার্ম ফ্রেশ।
এ গবেষণার নেতৃত্বে ছিলেন আ ব ম ফারুক। তিনি জনস্বার্থে গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করলে তা নিয়ে সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে তাকে হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়।