Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৮ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

রিফাত হত্যাকাণ্ড: সাক্ষী যখন আসামি

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৭ জুলাই ২০১৯, ০২:৪৩ PM
আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৯, ০২:৪৫ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে বিবেকে নাড়া দেয় দেশব্যাপী সকল মানুষের। নারকীয় ওই হত্যাকাণ্ডের প্রথম ভিডিওতে রিফাত শরীফকে বাঁচাতে তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির প্রাণপণ প্রচেষ্টা প্রশংসিত হয় দেশজুড়ে। কিন্তু তখনও কে জানত সর্ষের মধ্যেই লুকিয়ে আছে ভূত!

হত্যাকাণ্ডের পরদিন দুপুরে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৫-৬ জনকে অভিযুক্ত করে হত্যা মামলা করেন নিহত রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ। স্বাভাবিক কারণেই এ মামলার প্রধান সাক্ষী হন নিহত রিফাতের স্ত্রী ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। কিন্তু পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত রহস্য। রিফাত হত্যা মামলায় মিন্নি হয়ে যান প্রধান সাক্ষী থেকে আসামি।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বরগুনার মাইঠা এলাকার বাবার বাসা থেকে মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরসহ মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদ ও তার বক্তব্য রেকর্ড করতে বরগুনার পুলিশ লাইনে নিয়ে আসে পুলিশ। এরপর দীর্ঘ ১০ ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদ ও বিভিন্ন মাধ্যম থেকে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ ও পুলিশের কৌশলী এবং বুদ্ধিদীপ্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে আটকে যান মিন্নি। বেরিয়ে আসে হত্যাকাণ্ডে তার সম্পৃক্ততার প্রমাণ। এরপরই মিন্নিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আর তখনই প্রধান সাক্ষী থেকে আসামি বনে যান মিন্নি।

তবে মিন্নিকে গ্রেফতারের বিষয়ে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তার বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর। মিন্নিকে গ্রেফতারের পর তার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আপনারাতো সবাই ভিডিওতে দেখেছেন, মিন্নি তার স্বামীকে বাঁচানোর জন্য নিজের জীবনের মায়া ত্যাগ করে আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। আমার মেয়েকে পুলিশ অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার অতটুকু মেয়ে কী করে খুন করতে পারে? ওর শরীরে কি একজন মানুষ খুন করার মতো শক্তি আছে?’

এদিকে মিন্নিকে গ্রেফতারের বিষয়টি জানাতে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বরগুনার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বরগুনা জেলা পুলিশ। শুধুমাত্র ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণেই রিফাত শরীফকে খুন করা হয়েছে জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন বলেন, ‘রিফাত হত্যা মামলার একমাত্র প্রতক্ষদর্শী ও প্রধান সাক্ষী নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে অনেকদিন ধরে পর্যবেক্ষণে রেখেছিলাম। মঙ্গলবার সকালে রিফাত হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মিন্নিকে তার বাবাসহ পুলিশ লাইনে নিয়ে এসে জবানবন্দি গ্রহণ ও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য ও বিভিন্ন সময় পুলিশের কাছে আসা তথ্য সমূহ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করে পুলিশ প্রাথমিকভাবে এই হত্যাকাণ্ডে মিন্নির সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে। তাই দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মঙ্গলবার রাত ৯টার সময় পুলিশ মিন্নিকে রিফাত হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, এ মামলার তদন্তের স্বার্থে আদালতে হাজির করে মিন্নির রিমান্ডের আবেদন করবে পুলিশ। রিফাত হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ থাকলেও পুলিশের তদন্তে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মাদকের কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।

Bootstrap Image Preview