Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

সাফা-মারওয়াকে বিচ্ছিন্ন করতে ৫০ ঘণ্টা লেগেছে শতাধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৬ জুলাই ২০১৯, ০৯:৫৩ PM
আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৯, ০৯:৫৩ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


জন্ম থেকেই শিশু দুটির মাথার খুলি ও রক্তনালী একে অপরের সঙ্গে জোড়া লাগানো। যে কারণে জন্মের পর এভাবেই তাদের কাটাতে হয়েছে দুটি বছর। সম্প্রতি লন্ডনের একটি হাসপাতালে দীর্ঘ ৫০ ঘন্টা যাবত সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে এই দুই শিশুকে আলাদা করতে সক্ষম হন চিকিৎসকরা।

পাকিস্তানে জন্ম নেওয়া যমজ দুই বোনের নাম সাফা উল্ল্যাহ ও মারওয়া উল্ল্যাহ। শিশু দুটিকে আলাদা করতে অস্ত্রোপচার করা হয় লন্ডনের গ্রেট ওরমন্ড স্ট্রিটের একটি হাসপাতালে। চিকিৎসকরা এরই মধ্যে রুদ্ধশ্বাস এই অস্ত্রোপচারকে এক 'দীর্ঘ ও জটিল যাত্রা' বলে অবহিত করেছেন।

দীর্ঘ পঞ্চাশ ঘণ্টারও বেশি সময় যাবত শতাধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসাকর্মী মিলে অস্ত্রোপচারটি সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে গত ১ জুলাই সফল অস্ত্রোপচার শেষে পিতৃহীন যমজ এই শিশু দুটিকে নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেন তাদের মা।

আপাতত লন্ডনের একটি বাড়িতে দাদা ও চাচার সঙ্গে রাখা হয়েছে এই শিশুদের। হাসপাতালের ফিজিওথেরাপিস্টরা প্রতিদিন এসে শিশু দুটির পুনর্বাসন প্রক্রিয়া দেখভাল করছেন।

সদ্য হাসপাতাল ছেড়ে বাড়িতে ফেরা সাফা ও মারওয়ার মা জয়নব বিবি (৩৪) বলেন, আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকদের কাছে চিরদিন ঋণী হয়ে থাকব। উনারা যা করেছেন, সে জন্য তাদের অসংখ্য ধন্যবাদ। সামনে কী হয় তা দেখার জন্য আমরা সবাই মুখিয়ে আছি।

সিজারিয়ান পদ্ধতিতে জন্ম এই দুই শিশুর। মাথার খুলি ও রক্তনালী জোড়া লাগানো এ ধরনের যমজদের চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় 'ক্র্যানিওপ্যাগাস টুইন্স' বলা হয়। গত বছরের অক্টোবরে জোড়া লাগানো এই শিশু দুটির প্রথম অস্ত্রোপচার শুরু হয়। সাফা ও মারওয়ার বয়স তখন মাত্র ১৯ মাস। এরপর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সফলভাবে শিশু দুটির শরীর একে অপরের কাছ থেকে আলাদা করা হয়।

দুই বছর বয়সী এই শিশু দুটির খুলির জটিল গঠন, মগজ ও রক্তনালীর অবস্থান জানতে অতি আধুনিক প্রযুক্তির শরণাপন্ন হন চিকিৎসকরা। যে কারণে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহারের মাধ্যমে সাফা ও মারওয়ার শরীরের হুবহু একটি প্রতিকৃতিও তৈরি করা হয়।

এ দিকে শিশু দুটির নিখুঁত অস্ত্রোপচার নিশ্চিত করতে মূল অস্ত্রোপচারের আগে থ্রিডি প্রিন্টিং ব্যবহারের মাধ্যমে প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি শরীরের ওপর কাটা ছেঁড়ার অনুশীলন করেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দলটি। পরবর্তীতে আসল অস্ত্রোপচারের সময় প্রথমে সাফা ও মারওয়ার রক্তনালী আলাদা করেন চিকিৎসকরা। এরপর মগজ ও রক্তনালী আলাদা করতে শিশু দুটির খুলিতে একটি প্লাস্টিকের টুকরো ঢুকিয়ে দেন।

অস্ত্রোপচারের শেষ ধাপে তাদের শরীরের হাড় ব্যবহার করে নতুন করে মাথার খুলি তৈরি করেন চিকিৎসকরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন জোড়া লাগানো যমজ শিশুর জন্মের ঘটনা খুবই বিরল। বিশ্বে প্রতি ২৫ লাখ নবজাতকের মধ্যে একবারের চেও কম এমনটি ঘটে।

Bootstrap Image Preview