Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় থানায় ডেকে নারীকে পেটালেন পুলিশ কর্মকর্তা!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২ জুলাই ২০১৯, ০৬:১০ PM
আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৯, ০৬:১০ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


বগুড়ার ধুনট উপজেলায় কৌশলে থানায় ডেকে এনে কহিনুর খাতুন (৪২) নামে এক নারীকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) শাহানুর রহমানের বিরুদ্ধে। আহত কহিনুর ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। শুক্রবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বগুড়া শহরের নাটাইপাড়া বৌ-বাজার এলাকার জাকির হোসেনের স্ত্রী দুই সন্তানের জননী কহিনুর খাতুন। স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে কহিনুর তার বাবা একই এলাকার জাবেদ আলীর বাড়িতে থাকেন। বগুড়া জজ কোর্টের সামনে খাবারের দোকানের আয় দিয়ে কহিনুর সংসারের খরচ চালান।

অভিযুক্ত শাহানুর রহমান সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া গ্রামের হবিবর রহমানের ছেলে। তিনি ২০১০ সালে বগুড়া পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে চাকরি করতেন। ওই সময় কহিনুরের দোকানে প্রতিদিন খাবার খেতেন শাহানুর রহমান। সেই সুবাদে কহিনুরের সঙ্গে তার গভীর সখ্যতা গড়ে ওঠে। কহিনুরের বাসায় শাহানুর রহমানের অবাধ যাতায়াত ছিল। ওই সময় শাহানুর কৌশলে কহিনুরের কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। বিগত ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে শাহানুর রহমান বগুড়া থেকে বদলি হয়ে ধুনট থানায় যোগদান করেন। এতে কহিনুরের সঙ্গে শাহানুরের সম্পর্কের ফাটল ধরে।

এ অবস্থায় প্রায় দুই মাস আগে পাওনা টাকা চেয়ে শাহানুরকে উকিল নোটিশ দেন কহিনুর। কিন্ত উকিল নোটিশে সাড়া দেয়নি শাহানুর রহমান। ফলে বগুড়া আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলার প্রস্তুতি নেন কহিনুর। খবর পেয়ে শাহানুর রহমান এক সপ্তাহ আগে কহিনুর খাতুনকে ৬০ হাজার টাকা দেয়ার কথা বলে বিষয়টি মীমাংসা করে নেন।

এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকালের দিকে কহিনুর খাতুন পাওনা টাকার জন্য ধুনট থানায় আসেন। এ বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে শাহানুর রহমান পিটিয়ে থানা থেকে কহিনুরকে বের করে দেন। আহত কহিনুর ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে এলে সেখানেও পেটাতে থাকেন শাহানুর। এ সময় স্থানীয় লোকজন কহিনুরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

এ বিষয়ে কহিনুর খাতুন বলেন, শাহানুর কৌশলে আমার কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা নিয়েছে। সেই টাকা চাইলে সে আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু আমি তার প্রস্তাবে রাজি হইনি। ফলে সে আমার ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারপর থেকে শাহানুর আমাকে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করে। ফলে তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেই। বিষয়টি জানার পর শাহানুর টাকা দেয়ার কথা বলে বৃহস্পতিবার কৌশলে থানায় ডেকে এনে আমাকে পিটিয়ে আহত করেছে।

তবে ধুনট থানা পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) শাহানুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কহিনুর আমাকে মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের চেষ্টা করছিল। অবশেষে ঝামেলা এড়াতে তাকে ৬০ হাজার টাকা দিয়ে আপস নামায় স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে। তারপরও বৃহস্পতিবার থানায় এসে আমাকে মামলার ভয়ভীতি দেখালে ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে চড়থাপ্পর মেরেছি।

এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে বগুড়ার সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোকবুল হোসেন ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আহত কহিনুরের চিকিৎসার খোঁজখবর নিয়েছেন।

ধুনট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, এ ঘটনার খবর পেয়ে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন দুই কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে এসেছেন। তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Bootstrap Image Preview